Main Menu

বুলবুলের ঘাড়ে চেপে ফের দাম বাড়ল পেঁয়াজের

অনলাইন ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে পাইকারি ও খুচরাবাজারে পেঁয়াজের দাম আবারও বেড়েছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম ১০-১৫ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খুচরাবাজারে একটু ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি দরে। ঘূর্ণিঝড়ের আগের দিন গত শনিবারও যা ছিল ১৩০ টাকা।ব্যবসায়ীদের দাবি, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ নেই। দেশি পেঁয়াজের মজুদও প্রায় শেষ। তার ওপর ঘূর্ণিঝড়ে পেঁয়াজ পরিবহনে বিঘœ ঘটায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেড়েছে। তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর দিনই এক লাফে দাম বেড়ে যাওয়াটা ব্যবসায়ীদের নতুন আরেকটি অজুহাত মাত্র।

যথাযথ নজরদারির অভাবে প্রশ্রয় পাচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। ‘পেঁয়াজের দাম ১০০-র নিচে নামার সম্ভাবনা নেই’- এমন বক্তব্যও তাদের উৎসাহ জুগিয়েছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, মালিবাগ, ফকিরাপুলসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারভেদে প্রতিকেজি ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের খুচরা মূল্য ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি। ভালো মানের মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকা কেজি, মিসরের পেঁয়াজ ১২০ টাকায় ও তুরস্কের পেঁয়াজ ১৩৫-১৪০ টাকায়। দাম বেড়েছে পাইকারি বাজারেও।

কারওয়ানবাজারের বিক্রমপুর বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ফয়েজ বলেন, একদিনের ব্যবধানে পাইকারি বাজারেও সব ধরনের পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। দুদিনের ব্যবধানে আমাদেরই প্রতি বস্তা (৭০ কেজি) পেঁয়াজ ৭৫০-৮৫০ টাকা বেশি দামে কিনতে হয়েছে। আজ (সোমবার) দেশি পেঁয়াজের বস্তা কিনেছি ৯ হাজার ৫৫০ টাকায়। ঘূর্ণিঝড়ের দুদিন আগেও যা ছিল ৮ হাজার ৭০০ টাকা।

রাজধানীর পাইকারি বাজারে গতকাল প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩৭-১৪০ টাকায়। মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১২০-১২৫, মিসরের পেঁয়াজ ১১০ ও তুরস্কের পেঁয়াজ ১২৫-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।মালিবাগ বাজারের খোরশেদ বাণিজ্যালয়ে পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর আজ (সোমবার) সকাল থেকে পেঁয়াজের দাম আবারও বেড়েছে। সরবরাহ কম থাকায় আমরাই পেঁয়াজ পাইনি। অন্যান্য সময় তিন-চার বস্তা করে কিনলেও আজ দেশি পেঁয়াজ ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ পেয়েছি দুই বস্তা করে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো আমাদের জানিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে পেঁয়াজের পরিবহনের ব্যাঘাত ঘটেছে। তাই পেঁয়াজও কম, দামও বাড়তি।

শ্যামবাজারের লাকসাম বাণিজ্যালয়ের পাইকার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজ বন্ধ, দেশি পেঁয়াজও প্রায় শেষ। যা আছে তাতেও পচন ধরেছে। এর মধ্যে আবার ঘূর্ণিঝড়। সব মিলিয়ে প্রতিটি ধাপেই পেঁয়াজের ক্রয়মূল্য বেড়ে গেছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরাবাজারেও।তবে রাজধানীর বেশ কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পরিবহনে বিঘœ ঘটলেও বাজারে পণ্যের মজুদের ওপর তার প্রভাব পড়তে অন্তত দুই থেকে তিন দিন সময় লাগার কথা। অথচ ঝড়ের পর দিনই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে একটি সিন্ডিকেট।

এ বিষয়ে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে পরিবহনব্যবস্থায় ব্যাঘাতের কারণে দামবৃদ্ধিÑ এটি একটি খোঁড়া যুক্তি মাত্র। ব্যবসায়ীরা সবসময়ই সুযোগসন্ধানী। অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই তা লুফে নেন। সেটি যৌক্তিক না অযৌক্তিক, সে বিষয়ে মাথা ঘামান না। এটি ঘোর অন্যায়। ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন তারা।

কনসাস কনজুমার্স সোসাইটির (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, মোকামে যে পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ থাকে তা দিয়ে এমনিতেই দু-তিন দিন চলে যায়। অথচ কিছু একটা হলেই একদিনের মধ্যে দামের ওপর তার প্রভাব পড়ে। ভারতীয় পেঁয়াজ আসা বন্ধ বলে দেশে পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেল। অথচ এখনো বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়া যায়Ñ এটি হাস্যকর।তিনি আরও বলেন, কারসাজিবাজরা সুযোগ পেলেই দাম বাড়াচ্ছেন। ‘নতুন পেঁয়াজ না ওঠার আগে পেঁয়াজের দাম একশর নিচে নামার সম্ভাবনা নেই’ মন্ত্রীর এমন বক্তব্যও হতাশাজনক। এমন বক্তব্যেও আরও উৎসাহী হয়ে উঠছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.