Home » বাংলিশ তথা বাটাভু’র সাতকাহন

বাংলিশ তথা বাটাভু’র সাতকাহন

বাংলিশ কী:

ইংরেজি অক্ষর দিয়ে বাংলা শব্দ প্রকাশ করাকে বাংলিশ/ বাংরেজি বলা হয়। যেমন: tumi kemon acho? এখানে ইংরেজি অক্ষর বসিয়ে বাংলা বাক্য, “তুমি কেমন আছো?” – প্রকাশ করা হয়েছে।

√ ফোনেটিক এবং বাংলিশ কি একই?

ফোনেটিক একপ্রকার বাংলিশ। তবে এটা ভিন্নরূপ। বাংলিশের সাথে এর পার্থক্য আছে। যা বাশুর গবেষণায় ধরা পড়ে। ইংরেজি অক্ষরে বাংলায় নামকরণের নিয়মে ফোনেটিক সীমাবদ্ধ। ব্রিটিশ বা সংস্কৃত নিয়মে যদি লক্ষ্মী বা রংধনু শব্দকে ইংরেজিতে আমরা লিখতে চাই তখন তা laxmi বা rongdhanu এই বানানে লেখা হয়। কিন্তু ইংরেজিতে এভাবে লেখার ফলে লক্ষ্মী এবং রংধনু শব্দটি আমাদের মতে তার অস্তিত্ব হারিয়ে লাক্সমি এবং রংধানু হয়ে গেছে। কারণ বাশুর বাংলিশকরণ অনুসারে শব্দ ২টাকে lokkhi এবং rongdhonu লেখা যায়। এতে বাংলা শব্দের উচ্চারণ স্পষ্ট থাকে। এখানে লক্ষি মনে করার কোন কারণ নেই। কারণ লক্ষ্মী শব্দটি এই বানানেই বহাল রয়েছে। একইভাবে Poddha, Bonani, Boshundhora -বাংলা শব্দকে ইংরেজিতে প্রকাশ করা যাচ্ছে হুবহু কেন শুদ্ধ বাংরেজি রেখে আমরা ব্রিটিশ প্রণীত ফোনেটিকে আটকে থাকবো? আরো কিছু সমীবদ্ধতার মধ্যে: c দিয়ে চ, ch = ছ, s= স, sh= শ এভাবে লেখার ফলেই বাটাভুর উদ্ভব হয়েছে এই যুগে।

√ বাটাভু কী:
বাশু উদ্ভাবিত শব্দটির পূর্ণরূপ:
বানানের টাইপিং ভুল। যারা অজান্তে টাকলামি করছে তাদের বানান ভুলগুলো বিদ্রুপবিহীন তুলে ধরাটাই ‘বাটাভু।’

বাটাভু মূলত ৩ ধরণের হয়ে থাকে ।
ক) বাংলিশ টাইপিং ভুল : pi ni vi, ame akana aci.
খ) বাংলা টাইপিং ভুল: পেম চায় সোবায় তেকে, ধুমপান নিষেদ।

গ) ইংরেজি টাইপিং ভুল: guiter, blood donar, cls, clg, f9, tnx, I going here.

বানান নিয়ে যতপ্রকার ভুল আছে তা বাশুর নিয়মে বাটাভুর অন্তর্ভুক্ত।

√ টাকলামি কী?
টাকলামি হচ্ছে বানান ভুল করা। যারা বানান ভুল করে তাদের মুরাদ টাকলা বলা হয়। মূলত বাংরেজিতে শব্দকে ঠিকমত লিখতে যে ছেলে পারেনা তাকে টাকলা এবং মেয়েরা না পারলে তাদের টাকলি বলা হয়। মুরাদ টাকলা নামক ফেসবুক পেজ থেকেই এই ধারণার সূত্রপাত।

√ মুরাদ টাকলা কী?
মুরাদ টাকলা বলতে মুরাদ নামে টাকমাথার কাউকে বোঝানো হয়নি। জয়ন্ত কুমার নামক একব্যক্তির murodh thakle(মুরোধ থাকলে) কে murad takla( মুরাদ টাকলা) লেখার সূত্রধরেই মুরাদ টাকলা নামে পেজ গঠন করে মুরাদ টাকলাদের প্রদর্শনের শুরুটা হয়। মুরাদ টাকলা সম্পর্কে উইকিপিডিয়াতে বিস্তারিত পাওয়া যাবে।

√ বাশু এবং মুরাদ টাকলা কি একই?

বাশু আলাদা। তবে মুরাদ টাকলা থেকে অনুপ্রাণিত। মুরাদ টাকলা পেজ এ টাকলামি/ ভুলগুলো স্ক্রিনশটে তুলে ধরা হয়। তাদের স্লোগান, “ভাষা বিকৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলুক অবিরাম।” মুরাদ টাকলা এবং বাশুর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে,
বাশু তাদের পোস্ট, কমেন্টে টাকলামি/ বাটাভু যারা করে থাকে তাদের সরাসরি শুধরে দিয়ে থাকে। তামাশা বা হাহা রিয়েক্ট দিতে সরাসরি মানা করে এবং বানান ভুল দেখার পর যারা তামাশা করে থাকে তাদের গ্রুপ থেকে অব্যাহতিও দিয়ে থাকে। এদিক থেকে মুরাদ টাকলা ভিন্ন।

√ টাকলামি থাকার পরেও বাটাভু শব্দটি কেন?

টাকলা বললে তাদের অপমান করা হয় যারা অজান্তে টাকলামি/ ভুল করছে।
“তুই একটা টাকলা,”
“ধুর বেটি টাকলামি ছাড়বি?” এভাবে প্রকাশ্যে কথামালা চালাচালি করতেও দেখা যায় আজকাল। মূলত টাকলামি এবং টাকলা তুচ্ছার্থক শব্দ। যারা এই পদবীধারী তারা তামাশার পাত্র। টাকলা মানেই ‘হাহাহা!
ওরে পাইছি।’

বাটাভু (বানানের টাইপিং ভুল) এই তাচ্ছিল্য থেকে সরে আসার জন্যই উদ্ভাবিত।
“আপনার লেখাতে বাটাভু আছে,”
“বাটাভু করিসনা।”
এভাবে কথামালা চললে কেউ তামাশার শিকার হবেন বলেও বাশু মনে করেনা। তাই আমাদের উচিত অজান্তে যারা aci, bolan , ata এভাবে লিখছে তাদের ‘টাকলা’ না বলে
“বাটাভু হচ্ছে জেনে নিন! কেন?” এভাবে প্রকাশ করার চিন্তাধারার সূচনা করা।

একজনের টাকলামি থেকে বাকি ৪০ জন নতুন নতুন শব্দগঠন করে ইচ্ছাকৃত টাকলামি করে থাকেন। যা শব্দবিকৃতিকে অন্য স্থানে নিয়ে গেছে। বাশু টাকলামি শব্দটি পরিহার করে বাটাভু বলে থাকে। বানান ভুল দেখে তামাশার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। টাকলা আখ্যা দিয়ে কাউকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করার সাহসকে অবদমিত করার নামই বাটাভু। টাকলামি পরিহার করে বাটাভু বলাই শ্রেয়।

√ ইচ্ছাকৃত টাকলামি, শব্দ অবমাননা কী?

জানতে হলে চোখ রাখুন আগামী পর্বে।
চলবে…

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *