Home » প্রথম দিনের ‘ভাস্কর্য পর্যবেক্ষণ কর্মশালা’ সম্পন্ন করল (বাশু)

প্রথম দিনের ‘ভাস্কর্য পর্যবেক্ষণ কর্মশালা’ সম্পন্ন করল (বাশু)

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোরডটকম বাশু প্রতিনিধি:’ড়ক দুর্ঘটনা স্মৃতিস্থাপনা’ অভিজ্ঞতায় বাশু (বানান শুদ্ধকারী) এর আয়োজনে ৪ মে ২০১৮ তারিখে প্রথম দিনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ টিএসসি চত্বরে নির্মিত ভাস্কর্যগুলো পর্যবেক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঢাকা শহরজুড়ে দেশের ইতিহাস তুলে ধরে রাস্তার মোড় এবং বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য রয়েছে। খুব কাছ থেকে সময় নিয়ে ভাস্কর্যগুলো পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ বা ইচ্ছা খুবই কম হয়েছে আমদের। সেই চিন্তাধারা থেকেই কর্মশালার আয়োজন।
কেন নির্মিত হলো এসব ভাস্কর্য? বর্তমানে কোন অবস্থায় আছে সেসব? নামফলকে কি কোন বানান ভুল আছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই মাঠে নেমে পড়েন বাশু’র শব্দযোদ্ধারা।

ভাস্কর্য পরিদর্শন করতে গিয়ে ধরা পড়ল কতটা বেহাল দশায় শক্তমাটিকে আঁকড়ে ধরে শুধু দাঁড়িয়ে আছে সেসব।

‘ভাস্কর্যের উপরে উঠা নিষেধ’ সাইনবোর্ড থাকার পরেও জুতাসহ অনেকেই ছবি তোলার উদ্দেশ্যে সেখানে পা মাড়াচ্ছেন।

রাজু ভাস্কর্য, মিলনের প্রতিবাদী মুখ, মিশুক-মুনিরের সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও প্রায় সবগুলো ভাস্কর্যের নামফলকের লেখাগুলো উঠে গেছে। কালির অস্তিত্ব না থাকাতে সেগুলোর নামকরণ এবং বিস্তারিত লেখাগুলো পড়তে পারা যায়নি। বানান ভুল চোখে পড়া সে তো অনেক দূরের গল্প।

টিএসটি চত্বরে যে ‘রাজু ভাস্কর্য’ রয়েছে তার রঙ উঠে গেছে, স্থানে স্থানে ফাটল, বেদির ইট নেই। ময়লার ডাস্টবিন হয়ে গেছে পাদদেশ। মনে হলো, সামান্য ভূমিকম্প দিলেই ভাস্কর্যটি হতাহতের কারণ হতে পারে। কাকের বিষ্ঠায় মুখমণ্ডল আবৃত হচ্ছে দিন দিন।
আন্দোলন, প্রতিবাদের এই মুখ্য স্থানটিতে অবস্থিত দেশের ইতিকথাতে জনশক্তিকে তুলে ধরা এই প্রতিবাদের কৃর্তিটির এমন বেহাল দশা দেখার পর মনঃক্ষুণ্ণ হন প্রতিজন শব্দযোদ্ধা।

‘মিলনের প্রতিবাদী মুখ’ আরেকটি ইতিহাসের সাক্ষী। সেখান ফুলের মালা নির্মাতাদের অবাধ বিচরণ, পথশিশুরা ভাস্কর্যের উপরে ওঠে দোল খাচ্ছে, রান্না বাটি খেলতে ব্যস্ত ক’জন আর নামফলকের প্রথম অংশ নেই বললেই চলে। আসল কথা, এই ভাস্কর্য এর কোন অর্থ পথচারীরা আজো ধরতেই পারেননি। এটা আমাদের দেশের ভাস্করের একটি দুর্বলতাও বটে। নামফলকে বিস্তারিত কোন তথ্য না থাকার কারণে আমাদেরকে ইন্টারন্টে উইকিপিডিয়ার শরণাপন্ন হতে হয়!

‘ড়ক দুর্ঘটনা স্মৃতিস্থাপনা’ দু:খিত, সড়ক দুর্ঘটনা স্মৃতিস্থাপনা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে দেখা গেলো ব্রাকব্যাংক এর সহযোগিতায় নির্মিত এই ভাস্কর্যটির কাঁচঘেরা নামফলকের বেহাল দশা। কাঁচ ভেঙ্গে চৌচির আর ‘সড়ক’ লেখা স্থানে ‘স’ টাই গায়েব। দূর থেকে যেকেউ ‘ড়ক দুর্ঘটনা’ মনে করতে বাধ্য।

অপরাজেয় বাংলার সাদা রঙ দেওয়া স্থাপত্বকর্মের নামফলকের অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের আশেপাশে রয়েছে আরো কিছু স্থাপত্যকর্ম। সেগুলোর অবস্থাও একই। গন্তব্যের সমাপ্তি ঘটে মধুর ক্যান্টিনের মধুসূদন দে এর ভাস্কর্য পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। তিনিও আছেন গাছের আড়ালে; আলোকিত বাল্বের বিদ্যুৎ সংযোগের বাইরে।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, ঠাকুরগাঁও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের মাহবুব হোসেন, বাশু’র প্রতিষ্ঠাতা ইসফাক আহমদ (জেনন জিহান), শব্দযোদ্ধা আব্দুল কাদের, মোহাম্মদ সোলেমান, ফাতাহ ঝীম, তামান্না ইসলাম লিসা, মোহাম্মদ ইশান, মোহাম্মদ সোহাগ গাজি প্রমূখ।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *