আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে ১২৬ রানের লক্ষ্য মামুলি বটে। সহজ বলার কারণ—রাইজিং স্টারর্স টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ১৯৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। এর আগে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে ১৫৩ করেছিল আকবর আলীর দল। প্রথম দুটির একটিতে ১৭১ রান এবং অন্যটিতে ৭৮ রান তাড়া করে ৩৯ বল হাতে রেখে জিতেছিল বাংলাদেশ।
দোহায় আজ ইতিহাস শিরোপার মঞ্চে ১২৬ রানের হিসাব মিলাতে হিমশিম খায় বাংলাদেশ ‘এ’ দল। টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেললেও বহুকষ্টে পাকিস্তানের লক্ষ্য ছুঁতে পারে আকবর আলীরা। ফলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে প্রথমে ব্যাট করে ৬ রান করে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে চতুর্থ বলেই জয় তুলে নেয় পাকিস্তান শাহীনস। তাতে ২০১৯ সালের পর আবারও ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হারল লাল সবুজেরা।
এদিন সুপার ওভারে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট করতে নামেন হাবিবুর রহমান সোহান ও আবদুল গাফফার সাকলায়েন। প্রথম বলে ১ রান নেওয়ার পর দ্বিতীয় বলেই সাকলায়েনকে হারায় বাংলাদেশ। পরের বলটি ছিল ওয়াইড, সেখান থেকে আসে মোট ৫ রান। তৃতীয় বলে জিসানকে ফেরান আহমেদ দানিয়াল। সব মিলিয়ে পাকিস্তান পায় ৭ রানের টার্গেট।
জবাব দিতে নেমে দুই বল হাতে রেখে ট্রফি জেতে পাকিস্তান। রিপন মণ্ডলের করা প্রথম বলে লেগ-বাই থেকে এক রান নেয় তারা। দ্বিতীয় বল থেকে সিঙ্গেল। তৃতীয় বলে চার মারেন সাদ মাসুদ। আর চতুর্থ বলে সিঙ্গেল নিয়ে লক্ষ্য পূরণ করে পাকিস্তান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ধুঁকতে থাকে পাকিস্তান শাহীনস। ২৫ রানে তিন উইকেট হারানো দলটি শেষ পর্যন্ত থামে ১২৫ রানে। পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ বলে ৩৮ রান করেন সাত নম্বরে নামা সাদ মাসুদ। ২৩ বলে ২৫ রান করেন আরাফাত মিনহাস।
পাকিস্তানের ইনিংসের ১৯তম ওভার ছিল বিভীষিকাময়। এক ওভারে তিন ব্যাটারকে ফেরান রিপন মণ্ডল। মাঝের ওভারগুলোতে স্পিনারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স ছিলই। মজার বিষয়—পাকিস্তানের ইনিংস শুরু হয়েছিল রান আউট দিয়ে, শেষটাও হলো রান আউটেই।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে রিপন মণ্ডল ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসান নিয়েছেন ২ উইকেট।
রান তাড়ায় নেমে হাবিবুর রহমান সোহান শুরুটা করেন আগুনে ব্যাটিংয়ে। তিনি যখন ব্যক্তিগত ২৬ রানে ফেরেন, দলের স্কোর ৩৬। তার আগে জিসান ফিরেছিলেন ৬ রানে। এরপর আর দাঁড়াতে পারেননি আকবররা। ৩৬ থেকে ৫৩ রানে উঠতেই ৬ ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যায়।
শেষ দিকে এসএম মেহেরব ও স্পিনার রাকিব চেষ্টা চালিয়ে যান। উইকেটে থিতু হয়ে লড়াই ধরে রাখেন। তাদের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। ৩৭ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান শতকের কাছাকাছি। তবে মেহেরব ফেরার পর আশা হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো উড়ে যায়।
শেষ উইকেটে সাকলায়েন ও রিপন মণ্ডল ম্যাচে প্রাণ ফেরান। বিশেষ করে শেষ ওভারে রিপন ৬ রান তুলে ম্যাচ নিয়ে যান সুপার ওভারে।

প্রতিনিধি