Main Menu

দেশ প্রেমিক মিলনের ‘ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা’

মানসিকভাবে অপ্রকৃতিস্থ তবুও বুকে ধারণ করেন দেশপ্রেম। সেই দেশপ্রেম থেকে দেশ ও জনগণের সেবায় নিজেই দায়িত্ব নিয়েছেন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার। কাজের কাজ যেমনই হোক উপকৃত হচ্ছেন এলাকাবাসী।
নিজেকে মিলন এবং কুমিল্লার স্থায়ী নিবাসী বলে পরিচয় দেন এই যুবক। যদিও নাম পরিচয়ের প্রশ্নে মিলনের কাছ থেকে একেক বার একেক রকম উত্তর পাওয়া যায় বলে দাবি স্থানীয়দের। সেই মিলনই ‘দায়িত্ব’ নিয়েছেন রাজধানীর চিড়িয়াখানা সড়কের কমার্স কলেজ-চিড়িয়াখানা মোড়ের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার।
সম্প্রতি কমার্স কলেজ-চিড়িয়াখানা মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, চৌরাস্তার ঠিক মাঝখানে ইটের টুকরো দিয়ে একটি গোল চত্বর বানিয়েছেন মিলন। ঠিক মাঝে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। চতুর্দিকে আছে পাশের একটি নার্সারি থেকে নেওয়া কিছু গাছের চারা। পতাকার নিচে আছে ফুলও। নাম দিয়েছেন ‘বঙ্গবন্ধু চত্বর’। অবশ্য সেটি চূড়ান্ত নাম নয়। চত্বরটির চূড়ান্ত নামকরণের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর।
মিলনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় তিন সপ্তাহের বেশি সময় এই চত্বরটিতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

মিলন বলেন, বিগত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এটা করছি আমি। এগুলো আমি নিজ উদ্যোগেই করেছি। কেউ কোনো সাহায্য করেনি, আমিও সাহায্য চাইনি। প্রতিদিন সকাল ৬টায় আমি এটা বানাই। সারাদিন কাজ করি। আবার রাত ১০টায় নিজেই সরিয়ে নিয়ে যাই। এখানে প্রচুর জ্যাম হয়।

কেন করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে মিলন বলেন, মা’য় বলছে দেশকে ভালোবেসে যাবা, দেশের সেবা করে যাবা। একদিন প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভালোবেসে নেবে। তাই আমি আমার দেশকে ভালোবেসে করতেছি।

সারাদিনের খাওয়া দাওয়া কীভাবে হয় এমন প্রশ্নের জবাবে মিলন বলেন, কেউ কিছু দিলে খেয়ে নেই। এলাকার লোকজন দেয়। আমি মিরপুর-১ শাহ আলী এলাকায় থাকি। প্রশাসনের লোকজনও আমাকে খুব ভালোবাসে। আশেপাশ দিয়ে গেলে খাবার দাবার দিয়ে যায়। সেগুলো দিয়েই চলে যায়।

এদিকে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনটি থানার সংযোগস্থল চতুর্মুখী সড়কের এই মোড়ে প্রায়ই থাকে ট্র্যাফিক জ্যাম। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নেই কোনো সিগনাল বাতি অথবা ট্রাফিক পুলিশের সদস্য। তবে ইদানিং প্রায়ই দেখা যায় মিলনকে। আর তাতে বেশ উপকারও পাচ্ছেন এই মোড় দিয়ে যাতায়াত করা যানবাহনের চালকেরা।

মোড়ের একটি দোকানের কর্মচারী রনি বলেন এখানে একদিকে কমার্স কলেজ, বিইউবিটি আবার আরেক দিকে চিড়িয়াখানা। মোড়েই আবার একটা বাজার ও আছে। কলেজ ছুটি হলে আর সন্ধ্যার দিকে এই মোড়ে খুব জ্যাম হয়। কখনও ট্রাফিক দেখিনি। কিন্তু এই ছেলেটাকে মাঝে মাঝে দেখি। কীসব করে মোড়ের মধ্যে। শুনছি মাথা নাকি নষ্ট। তবে জ্যামের সময় যখন কাজ করে কিছু উপকার তো হয়ই।

মিলন মানসিকভাবে সুস্থ নয় বলে জানিয়ে থানার পক্ষ থেকে তাকে কোনো সহায়তা করা হয় না বলে জানান শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, সে মানসিকভাবে সুস্থ না। কাজেই তাকে আমরা কোনো সহায়তা দিই না। মাঝে মাঝে তার বাড়ির লোকজন এসে নিয়ে যায়। আবার আসে। তবে মিলনের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করা স্থানীয়রা বলছেন, মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হলেও দেশপ্রেম থেকে যে কাজটি মিলন করছেন তাতে উপকারই হচ্ছে; অপকার না।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.