Home » শাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার প্রশাসনের গা বাঁচানো মনোভাব

শাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার প্রশাসনের গা বাঁচানো মনোভাব

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের ২০১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী তাইফুর রহমান প্রতীকের আত্মহত্যার ঘটনায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরপরই তার ফ্যামিলি থেকে প্রতীকের সুপারভাইজার না পাওয়ার বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। আমি তখন তার ডিপার্টমেন্টকে বিষয়টি অবগত করি। এর পর আমার সাথে প্রতীক বা প্রতীকের পরিবারের কেউ যোগাযোগ করেনি এবং পরবর্তীতে ফলাফল কি হয়েছিল এই ব্যাপারেও আমাকে অবগত করা হয়নি।’
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘প্রতীকের মতো একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মর্মাহত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যুর বিষয় নিয়ে যে সব আলোচনা উঠেছে তা খতিয়ে দেখার জন্য একাটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি তদন্তের মাধ্যমে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।’

প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে রিকমেন্ডেশন পেপার নিয়েছে প্রতীক। এর মাঝেই সে আত্মহত্যা করলো। বিষয়টি আরো তদন্ত করে বের করা হবে।’

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতীকের আত্মহত্যার জন্য শাবির জিইবি বিভাগের শিক্ষকদের দায়ী করেছেন তার বড় বোন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার বিভাগের শিক্ষক শান্তা তাওহিদ। অনার্সে ১ম শ্রেণীতে ১ম হওয়া হওয়া সত্তে¡ও প্রতীককে মাস্টার্সে সুপারভাইজার না দেয়া এবং বিভিন্ন কোর্সে কম নম্বর দেয়ার অভিযোগ করেন শান্তা তাওহিদ।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, অনার্সে তাঁর রেজাল্ট ছিলো সিজিপিএ ৪.০০ স্কোরের মধ্যে ৩.৮২। যা ছিল সম্মিলিতভাবে বিভাগে ১ম স্থান। এছাড়া মাস্টাসের্র ১ম সেমিস্টারে তার রেজাল্ট ৩.৫৮ ও ২য় সেমিস্টারে ছিল ৩.০৮ এবং সম্মিলিতভাবে ৩.৩৩। যা বিভাগের মধ্যে ৭ম স্থান।

জিইবি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামসুল হক প্রধান বলেন, সুপারভাইজার না দেয়া বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। আমি কিছুদিন হল বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে এসেছি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।

সুপারভাইজার না দেয়ার বিষয়ে তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের থিসিস দেয়ার জন্য আমরা কিছু ক্রাইটেরিয়া ফলো করে থাকি। ঐ সেশনে একজন শিক্ষক একজন শিক্ষার্থী থিসিসের জন্য নিতে পারেন। যারা নিয়েছেন তাদের পর সে আর সুপারভাইজার খুঁজে পাননি বা কোন শিক্ষক রাজি হয়নি। ১ম শ্রেণিতে ১ম হওয়া সত্তে¡ও সে কেন সুপারভাইজার পাননি- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।’

অন্যদিকে প্রতীকের বন্ধু ফাহমিদ হোসেন ভূঁইয়া জানান, প্রতীক কয়েকদিন ধরে ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা নিয়ে হতাশায় ছিল এবং বন্ধুদের সাথেও যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছিল।

আত্মহত্যার বিষয়ে প্রতীকের বাবা তাওহিদুজ্জামান বলেন, এটা তদন্তনাধীন ব্যাপার। একটি অপমৃত্যুর মামলা কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা হয়েছে।

উল্লেখ, গতকাল সোমবার বিকেলে নগরীর কাজলশাহ এলাকার একটি বাসা থেকে পুলিশ প্রতীকের ফ্যানে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। এ নিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *