Home » দাবি- আল্টিমেটামে সিলেট শহর

দাবি- আল্টিমেটামে সিলেট শহর

সরকার পতনের পর থেকে দাবি- আল্টিমেটামে সরগরম সিলেট শহর। পদত্যাগ, প্রত্যাহার, অপসারণসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে নিয়মিত মানববন্ধন, সভা এমনকি সড়ক অবরোধ করে চলছে কর্মসূচি। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলছে পদত্যাগের হিড়িকও। শেখ হাসিনা সরকারকে হটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সিলেটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিতসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রাস্তায় নেমেছেন দাবি-দাওয়া নিয়ে। এসব দাবিতে অবস্থান, মানববন্ধন ও সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে সিলেটের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক ঠিক তখনই এমন দাবি-দাওয়ার কারণে খানিকটা বাদ সেজেছে সাধরণ মানুষের জিবন যাত্রায়।জানা গেছে, মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন হাসপাতালের নার্স-ব্রাদার্স। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।

এমএজি ওসমানী মেডিকেলসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসাপাতাল থেকে ‘ভুয়া’ নার্স-ব্রাদার্সদের অপসরারণের দাবিতে এ আন্দোলন করছেন বিভিন্ন হাসপাতালের সিনিয়র নার্স-ব্রাদার্স ও নার্সিং কলেজ থেকে পাস করা সেবক-সেবিকারা।তাদের অভিযোগ- গত সরকারের আমলে অনেক নার্স মাত্র ছয় মাস প্রশিক্ষণ করেই দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়োগ পেয়েছেন। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে তারা অনেক ভুল করেন। যার দায়ভার এসে পড়ে সিনিয়র নার্সদের উপর। এ অবস্থায় তারা আন্দোলন নামেন।১৯ আগস্ট তীব্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক ও কোম্পানীগঞ্জের এম সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম। তাঁদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা আন্দোলন করেন।

এর আগে রোববার (১৮ আগস্ট) উপাচার্য, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ। দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে সিলেট নগরীর চৌহাট্টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এসময় বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে তারা পদত্যাগ না করলে সিলেটবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।একই দিন লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ও ট্রেজারারের পদত্যাগ দাবি তুলে ক্যাম্পাসসহ সিলেটে অবাঞ্চিত ঘোষণার হুমকি দিন শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৭ আগস্ট) পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাসের দাবি নিয়ে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে মহানগরের চৌহাট্টায় দুই ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন সিলেটের বিভিন্ন কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সরকার এই দাবি মেনে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এদিকে ১০ আগস্ট শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)-সহ কয়েকটি ভার্সিটিতে পদত্যাগ করেছেন উপাচার্য-উপউপাচার্য-প্রক্টোররা। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা ৪টি দাবিতে আন্দোলন করছে। গেল রোববারও তারা এসব দাবি পূরণের জন্য মানববন্ধন করেছে। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সকল সদস্যদের দলীয় ও লেজুড়বৃত্তিক সকল ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। এরআগে ৮ আগস্ট সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) প্রক্টর ও হল প্রভোস্টসহ ছয় কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।

এদিকে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলছেন, নতুন সরকারের কাছে মানুষের চাওয়া-পাওয়া থাকা স্বাভাবিক। তবে শুরুতেই অতিরিক্ত আন্দোলন হলে সেটি আবার সরকারের জন্যই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এ সময় ছাত্র-জনতা ও সরকারের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সব ধরনের অনিয়ম, অন্যায় ও বৈষম্য দূর করা উচিত।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *