মিটফোর্ডের ঘটনার ভিডিও ব্যাপক প্রচারের পর শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করে যেসব স্লোগানে দেওয়া হয়েছে তাকে পরিকল্পিত মনে করছেন বিএনপির নেতারা।
কেউ কেউ ফেসবুকেও তারেক রহমানের নাম উল্লেখ করে পোস্ট দিয়েছেন, যা নিয়ে দলের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার আভাস পাওয়া গেছে দলটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে।
এনসিপি নেতা সারজিস আলম তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আপনার দলের নেতাকর্মী নামক কতিপয় নরপিশাচকে সামলান, জনাব তারেক রহমান। যে নিয়মে আওয়ামী লীগের করা হত্যার দায় খুনী হাসিনার উপর বর্তায়, সেই একই নিয়মে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের করা খুনের দায় আপনার উপরেও বর্তায়…..।’
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলছেন, ‘দায় চাপানোর নোংরা পুরানো রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে কেউ কেউ ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন’ বলে তারা মনে করেন।
‘কিন্তু এটাও সত্যি, কিছু ঘটলে সাথে সাথে বিএনপিকে জড়িয়ে প্রচার শুরু হয়। অনেক ঘটনা পরে ভুলও প্রমাণিত হয়,’ বলছিলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘খুলনায় যুবদল কর্মীকে হত্যা কিংবা মসজিদে ইমামকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনাগুলো নিয়ে কিন্তু সেভাবে কাউকে কথা বলতে দেখা যায় না।’
প্রসঙ্গত, খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক এক নেতাকে গুলি করে ও রগ কেটে হত্যার ঘটনা ঘটেছে শুক্রবার। ওইদিনই চাঁদপুর শহরের প্রফেসরপাড়া মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নুরুর রহমানকে জুমার নামাজের পর মসজিদের ভেতরেই কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
তারপরেও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি একটি বিশাল দল এবং এখানে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আসলেই তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
‘দল হিসেবে আমাদের যা ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার আছে সেটা আমরা নিচ্ছি। সরকারকেও সহযোগিতা করছি। নিজেরা পুলিশের হাতে দিয়েছি এমন উদাহরণও আছে। দল হিসেবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের। সেটি তো করছি। সরকারের দায়িত্ব আইনি ব্যবস্থা নেওয়া,’ বলছিলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, দলের মধ্যে শুদ্ধি অভিযানের যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তাতে জেলা থেকে তৃণমূল পর্যন্ত দেখা হবে কারও রেকর্ড খারাপ কি না। এ ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অগ্রিম ব্যবস্থা দল থেকে নেওয়া যায় কি না সেটিও পর্যালোচনা করা হবে।
ওদিকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৫ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে’।
তিনি লিখেছেন, ‘এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২ এর ধারা ১০ এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।’ সূত্র: বিবিসি বাংলা