Home » টাওয়ার হ্যামলেটসে তিন বাঙ্গালীর পরাজয়ের কারণ

টাওয়ার হ্যামলেটসে তিন বাঙ্গালীর পরাজয়ের কারণ

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোর: নির্বাচনে লেবার পার্টির টিকেটে বর্তমান মেয়র জন বিগস। তিনি পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৮\’শত ৬৫ ভোট। হাজার ভোটের ব্যবধানে পুনঃ নির্বাচিত হয়েছেন। লন্ডনের বাঙ্গালীপাড়া টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচনে হেরেছেন তিন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থীর সবাই।
এবারও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী রাবিনা খান। তিনি পেয়েছেন ১৬ হাজার ৮\’শত ৭৮ ভোট। সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান সমর্থিত অহিদ অাহমদ পেয়েছেন ১১ হাজার ১\’শত ৯ ভোট। অার কনজারভেটিভ পার্টির অানোয়ারা অালী পেয়েছেন মাত্র ৬ হাজার ১\’শত ৪৯ ভোট।
গত নির্বাচনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী রাবিনা খান পেয়েছিলেন ২৬,৩৮৪ ভোট।
এ হিসেবে গত নির্বাচনের চেয়ে জন বিগসের ভোটের ব্যবধান বেড়েছে বেড়েছে এবার ২৭,৯৮৭ টি ভোটের।
টাওয়ার হ্যামলেটস এর একাংশের এমপি রোশনারা অালী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। এ বারায় সতন্ত্র ও নিচের দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে দুবার জয়ী হয়েছেন সাবেক মেয়র বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত। যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশী এ বারায় বসবাস করেন। মূলধারার বিভিন্ন প্রতিষ্টানে নেতৃত্বে রয়েছেন বাংলাদেশী কমিউনিটির মানুষ। তারপরও এবারের নির্বাচনে তিন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী তিনটি দলের প্রার্থী হিসেবে লড়েও কেন বড় ব্যাবধানে হারলেন তার বিশ্লেষন নানাভাবে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ব্রিটেনের ব্রেক্সিটের গনভোট পরবর্তী বাস্তবতায় নানামুখী কারনে দেশজুড়ে লেবার পার্টির ভোট বেড়েছে। অন্যদিকে জনপ্রিয়তা কমেছে ক্ষমতাশীন কনজারভেটিভ পার্টির। অার টাওয়ার হ্যামলেটস বরাবরই লেবার পার্টির শক্ত ঘাটি অার দলের সেফ সিট হিসেবে পরিচিত। গত বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহনের দিন অাবহাওয়া খুব ভালো থাকায় ভোটদানের হারও বাড়ে। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রমুখী হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পায় শ্রমজীবি মানুষের দল হিসেবে পরিচিত লেবার পার্টি।
এ বারায় সাবেক মেয়র লুতফুর রহমানের একটি শক্তিশালী ভোট ব্যাংক ছিল। তবে, তার সমর্থিত প্রার্থী এবারের নির্বাচনে তৃতীয় অবস্থানে সরে গেছেন।
গত নির্বাচনে সাবেক মেয়র লুতফুর রহমানের সমর্থন রাবিনা খানের প্রতি থাকলেও এবার অার রাবিনাকে সমর্থন দেননি লুতফুর।
বরং তিনি তার সময়ের ডেপুটি মেয়র অহিদ অাহমদকে সমর্থন দিয়ে রাবিনাকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর অাহব্বান জানান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাবিনা ও অহিদ দুজনেই মেয়র পদে প্রার্থী হয়ে লড়াইয়ে নামেন। এতে করে লুতফুর রহমান বলয়ের ভোট দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে যায়। অবশ্য লেবার পার্টির একদল ক্ষুব্ধ ক্ষুদ্র বলয়ের নেতাকর্মীও গোপনে রাবিনাকে সমর্থন দেন।
তিন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থীর মধ্যে রাবিনা খান এবার সবচেয়ে গোছালো ক্যাম্পেইন চালান।
যার প্রতিফলন দেখা যায় ভোটের ফলাফলে।
অন্যদিকে এক বলয়ের অহিদ-রাবিনা দুজনেই প্রার্থী থাকায় ক্ষুব্ধ হন লুতফুর রহমানের সমর্থকরা। দুপ্রার্থীকে এক করতে না পারায় ভোটের দিনেও অনেক ভোটারকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে লুতফুর রহমানের প্রতি। অন্যদিকে কনজারভেটিভের প্রার্থী হিসেবে ডাঃ অানোয়ারা অালীকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
যদিও তিনি মেয়রের চেয়ে সংসদ নির্বাচন করতে অাগ্রহী ছিলেন। লেবারের শক্ত ঘাটিতে সব প্রার্থীর মধ্যে সবার শেষে প্রচারনায় নেমে সুবিধা করতে পারেননি তিনি। তার টার্গেট ছিল মূলত পার্টির নিজস্ব ভোটব্যাংকের শ্বেতাঙ্গ ভোটাররা। এছাড়া স্থানীয় জামায়াত সমর্থকরা এবারের নির্বাচনেও রহস্যজনক ভূমিকায় অবতীর্ন হন বলে ভোটের সমীকরনে ও ফলাফলে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। লন্ডন থেকে প্রকাশিত বাংলাভাষী সম্পাদক অলিউর রহমান খান বলেন, এ নির্বাচনের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিউনিটিতে অাত্মঘাতি মনোভাব পরিহার করে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *