বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও টেসলা-স্পেসএক্স প্রধান ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (৬ জুলাই) তিনি বলেন, তার দল ‘আমেরিকা পার্টি’ দেশকে তথাকথিত ‘একদলীয় ব্যবস্থা’র হাত থেকে মুক্ত করবে।
এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক বলেন, আমাদের দেশ এখন অপচয় ও দুর্নীতির মাধ্যমে দেউলিয়া হওয়ার পথে। আমরা গণতন্ত্রে নয়, একদলীয় ব্যবস্থায় বাস করছি। আজ ‘আমেরিকা পার্টি’ গঠিত হয়েছে আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে। এক সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত মাস্ক, সম্প্রতি রিপাবলিকানদের বিশাল ঘরোয়া ব্যয় পরিকল্পনার বিরোধিতা করে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান। তিনি এই পরিকল্পনাকে ‘ঋণের দাসত্ব’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ‘বিস্ফোরিত’ হয়ে পড়বে।
ট্রাম্পের উত্থাপিত বিলের বিরোধিতা করে মাস্ক হুমকি দেন, যেসব আইনপ্রণেতা বিলটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন, তাদের নির্বাচনে পরাজিত করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবেন। এক্স-এ প্রকাশিত এক জরিপে মাস্ক জানতে চান, মার্কিন জনগণ দ্বি-দলীয় ব্যবস্থার পরিবর্তন চান কি না। ১২ লাখের বেশি প্রতিক্রিয়ায় ২:১ ব্যবধানে মানুষ নতুন রাজনৈতিক দল চায়- এই ফলাফলের ভিত্তিতেই মাস্ক নতুন দলের ঘোষণা দেন। তিনি জানান, তার দল আগামী ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচন এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে এগোবে।
মাস্ক বলেন, ‘কার্যকর প্রভাব ফেলতে ২-৩টি সিনেট আসন ও ৮-১০টি হাউস জেলার ওপর লেজার-ফোকাস করাই হবে মূল কৌশল। এদিকে, নতুন দল গঠনের ঘোষণার পর ট্রাম্প পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মাস্ককে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করার এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ফেডারেল তহবিল প্রত্যাহারের হুমকি দেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে মাস্কের বহিষ্কার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে অতীতে তৃতীয় দলের প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ ভোট বিভাজনের কারণ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১৯৯২ সালে রস পেরটের স্বাধীন প্রার্থিতা রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশের পরাজয়ে ভূমিকা রাখে, যা ডেমোক্র্যাট বিল ক্লিনটনের বিজয় নিশ্চিত করে। তবে মাস্কের দল আদৌ কতটা জনপ্রিয়তা পাবে বা রাজনৈতিক ভারসাম্যে বড় কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে কিনা- তা এখনো অনিশ্চিত। একজন এক্স ব্যবহারকারী মাস্ককে উদ্দেশ করে লেখেন, আপনি রস পেরটের মতো আচরণ করছেন, আর সেটা আমার ভালো লাগছে না।
ইলন মাস্ক এখন কেবল প্রযুক্তি ও ব্যবসার নেতা নন, নিজেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রভাবশালী খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যাচ্ছেন, এমনই মত বিশ্লেষকদের।
বার্তা বিভাগ প্রধান