Home » সাকিবকে টপকে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হলেন উইলিয়ামসন

সাকিবকে টপকে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হলেন উইলিয়ামসন

অলৌকিক এক বিশ্বকাপ ফাইনালের অবিশ্বাস্য সমাপ্তি। সবাই বুঁদ হয়ে তখন তাতে। রূপকথার মতো ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ে আর নিউজিল্যান্ডের করুণের চেয়েও করুণ পরাজয়ে। সেমিফাইনালের আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়া বাংলাদেশের ১৬ কোটি ক্রিকেটপ্রাণ অবশ্য সে সময় ভিন্ন প্রার্থনায়। ফাইনালের পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চে তো বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের নাম ঘোষণা করা হবে। যদি তাতে সাকিব আল হাসান…

নাহ্, সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্টে’র পুরষ্কার ওঠে ফাইনালে পরাজিত দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের হাতে। সেটি তাঁর সান্ত্বনা হতে পারেনি নিশ্চিতভাবে। ফাইনালে অমন দুর্ভাগ্যজনক পরাজয় বহুকাল তাড়িয়ে বেড়াবে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ককে। আবার সাকিবও তো নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতে পারেন। ব্যাট-বলে এমন অবিশ্বাস্য বিশ্বকাপ কাটানোর পর সেরা খেলোয়াড়ের বড় দাবিদার তো ছিলেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডারও!

পুরষ্কার বিতরণী মঞ্চের সঞ্চালক ছিলেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের দাবিদারের নামগুলো বলতে গিয়ে ভারতের রোহিত শর্মার সঙ্গে বাংলাদেশের সাকিবের নামও বলেন। কিন্তু এরপর জানান, পুরষ্কারটি পাচ্ছেন উইলিয়ামসন। বিশ্বকাপের ১০ ম্যাচের ৯ ইনিংসে ৫৭৮ রান করেছেন তিনি। দুটি করে সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরিতে গড় ৮২.৫৭। গড়পড়তা এক নিউজিল্যান্ড দলকে ফাইনালের মঞ্চ পর্যন্ত তুলে আনায় তাঁর নেতৃত্বের বড় ভূমিকা। টুর্নামেন্ট সেরার বিবেচনায় সেটি ছিল; ছিল উইলিয়ামসনের ক্রিকেটীয় স্পিরিটও।

সাকিবের দল বাংলাদেশ সেমিফাইনাল পর্যন্তও উঠতে পারেনি। কিন্তু শুধু যদি ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স বিবেচ্য হয়, সেখানে বাংলাদেশের অলারাউন্ডার ঢের এগিয়ে কিউই অধিনায়কের চেয়ে। বিশ্বকাপের আট ম্যাচে সাকিবের স্কোরগুলো এমন—৭৫, ৬৪, ১২১, ১২৪*, ৪১, ৫১, ৬৬ ও ৬৪। আট ইনিংসের সাতটিই পঞ্চাশ পেরোনো, যার মধ্যে দুটি সেঞ্চুরি। গড় ৮৬.৫৭; স্ট্রাইকরেট ৯৬.০৩। সঙ্গে যোগ করুন, বাঁহাতি স্পিনে সাকিবের ১১ শিকার। বিশ্বকাপ ইতিহাসে কখনোই এক আসরে কেউ অন্তত ৪০০ রান ও ১০ উইকেট নিতে পারেননি। সেখানে সাকিবের ৬০০ পেরোনো রানের সঙ্গে দশ পেরোনো উইকেট।

তবু ‘প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্টে’র পুরষ্কার তিনি পেলেন না। ব্যাটে-বলের পারফরম্যান্সে উইলিয়ামসনের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও। পুরষ্কারে যে দলীয় পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে! উইলিয়ামসের নেতৃত্ব আর ক্রিকেটীয় স্পিরিটও। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের অন্তত ওই সেমিফাইনালে উঠতে না পারার খেসারতই দিতে হলো সাকিবকে। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে অনেক এগিয়ে থেকেও বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার না পাওয়ায় সাকিব নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন।
বাংলাদেশের দীর্ঘশ্বাসটাও তখন যথার্থ হয়ে ওঠে!

সূত্র: কালের কণ্ঠ

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *