মিরাবাজারের জোড়াখুনের ঘটনায় আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরীর মিরাবাজার খারপাড়া আবাসিক এলাকায় শয়নকক্ষে মা ও ছেলে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ এক আবাসন ব্যবসায়ীকে আটক করেছে। প্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার দিনগত রাতে শহরতলির বটেশ্বর বাজার থেকে তাকে আটক করা হয়। আটককৃত ব্যক্তি হচ্ছেন সদর উপজেলার খাদিমপাড়া ইউনিয়নের মুক্তির চক গ্রামের মৃত করিম মেম্বারের ছেলে নাজমুল হাসান। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা হত্যাকান্ডে নাজমুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের বেরিয়ে আসতে পারে প্রকৃত তথ্য।
নাজমুলকে আটক করার পর বুধবার বেলা আড়াইটায় কোতোয়ালি থানায় এক সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে সিলেট কোতোয়ালি থানার সেকেন্ড অফিসার গোলাম সাদেক কাউসার দস্তগীর সাংবাদিকদের জানান- প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন বিষয় যাচাই বাচাই করার পর তাদের মনে হচ্ছে যে আটক নাজমুল হাসান জোড়া হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে পুলিশ কিছু লোককে সন্দেহ করে। পরে তাদের উপর নজরদারি চালানো হয়। বিভিন্ন স্থানে চালানো হয় অভিযান। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতে নাজমুলকে আটক করা হল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর বলেন- ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকান্ডের সাথে নাজমুলের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমরা প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে দেখেছি ঘটনার রাতে ঘটনাস্থলের আশেপাশেই নাজমূলের অবস্থান দেখিয়েছে। তবে নাজমুলের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা সেটি নিশ্চিত হয়ে বলা যাচ্ছে না। আরোও তথ্য নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন এর জন্য। পুলিশ তদন্তকাজ এগিয়ে নিচ্ছে। উদ্ধার হওয়া শিশু রাইসাকে আটক নাজমুলের ছবি দেখানো হয়েছে। সে চিনতে পেরেছে। রাইসা পুরুষ দেখলে ভয় পাচ্ছে। তাই নাজমুলকে রাইসার সামনে নেয়া হয়নি। ছবি দেখেই রাইসা বলেছে ‘এটি তার নাজমুল মামার ছবি’। আর পুলিশের কাছে প্রথমদিকে রাইসা নাজমুলের নামও বলেছিল বলে দস্তগীরের দাবি। তবে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় নাজমুলের নাম নেই।
সংবাদ সম্মেলনে আরোও জানানো হয়, নিহত রোকেয়ার সাথে নাজমুলের দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক ছিল। সে নিয়মিত খারপাড়ার বাসাতে আসা যাওয়া করতো। পার্লার ব্যবসার অংশীদার করার কথা বলে নাজমুল রোকেয়ার কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। নাজমুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করবে পুলিশ।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে কোতোয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) রোকেয়া বেগম জানান- হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাইসার মনে এখনো ভয় কাজ করছে। সে যে রুমে থাকছে সেটি চাবি বারবার লুকিয়ে রাখছে। তার ধারণা কেউ তাকে এসে এখানে মেরে ফেলবে। কোন ছেলে বা পুরুষ দেখলে সে লুকিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা অন্য সন্দেহভাজনদের ব্যাপারে মুখ খুলেননি। তারা জানান তদন্তের স্বার্থে সবকিছু এখনই বলা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, নগরীর মিরাবাজার খারপাড়া মিতালী ১৫/জে নম্বর বাসা থেকে গত রবিবার সকালে রোকেয়া বেগম ও তার ছেলে এসএসসি ফলপ্রার্থী রবিউল ইসলাম রোকনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দিনগত রাতে নিহত রোকেয়া বেগমের ভাই জাকির হোসেন অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে কোতোয়ালি থানায় এ মামলা (নং০২(০৪)১৮) দায়ের করেন। পরের দিন সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতদের নগরীর মানিকপীর (র.) সিটি গোরস্থান দাফন করা হয়।

নির্বাহী সম্পাদক
Leave a comment
Related News

সিলেটে শ্রমিকদল নেতা রাজন বহিস্কার
সিলেটের শ্রমিকদল নেতা আলী আকবর রাজনকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে। রবিবার সিলেট জেলা জাতীয়তাবাদীRead More

সিলেটে এবার বিষ্ফোরক আইনে ২৮৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলার দায়ে সিলেট আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-মেয়র-এমপিসহ ২৮৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টাRead More