কর্মচারীদের কর্মসূচি ঘিরে সচিবালয়ে নিরাপত্তা জোরদার, সোয়াট-বিজিবি মোতায়েন

‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মচারীদের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সচিবালয়ে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য দিন এখানে পুলিশ ও এপিবিএন সদস্য নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে থাকলেও আজ মঙ্গলবার (২৭ মে) মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষায়িত বাহিনী সোয়াট ও বোর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের। সকাল ১০টা পর্যন্ত সচিবালয় এলাকা ঘুরে এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থার চিত্র দেখা গেছে।
আজ সচিবালয় এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তার জন্য সকাল ৮টা থেকে পুলিশ, এপিবিএন, বিজিবি ও সোয়াট সদস্যরা উপস্থিত হন। পরে সকাল ১০টা ২০ মিনিট থেকে তাদের সঙ্গে যুক্ত হন র্যাব সদস্যরাও। র্যাবের ডিএডি মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সচিবালয়ের নিরাপত্তার জন্য র্যাবের দুটি টিম টহলরত রয়েছে। আমরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আছি।’
সচিবালয়ের মূল ফটক ছাড়াও অন্যান্য ফটকেও সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। মূল ফটকের অপরদিকে সড়কে রাখা রয়েছে সোয়াটের আর্মড ভেহিকল। এছাড়াও পুলিশের এপিসি কারও দেখা গেছে।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলসহ আরও বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের’। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। গতকাল সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিল, আজ (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে সব ধরনের দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকবে। বিষয়টি প্রতিপালন করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সকাল ১০টা) সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সব ফোর্সের সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে। সচিবালয়ের মূল ফটকে দায়িত্বরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহরাব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আজ সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাবো।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২৬ মে থেকে তারা তিন দিনের কর্মসূচি পালন করছেন। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— ‘সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত রাখা’; ‘সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও সচিবদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া’ এবং ‘মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদ ও জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেসউর রহমানের অপসারণের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে স্মারকলিপি প্রদান’।
সরকারি চাকরি আইন সংশোধনের প্রতিবাদে সোমবার থেকেই সচিবালয়ে নানা স্তরের কর্মচারীদের বিক্ষোভ শুরু হয়। এতে করে মঙ্গলবারও কার্যত সচিবালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব পড়ে। সোমবার রাতে গণমাধ্যমকে কর্মচারী নেতা নূরুল ইসলাম জানান, রাতের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনও বার্তা পাওয়া গেলে মঙ্গলবারের কর্মসূচি স্থগিত হতে পারে, অন্যথায় আন্দোলন চলবে।
আন্দোলনকারীদের ভাষ্য, আমাদের আন্দোলন সরকার, রাষ্ট্র কিংবা উপদেষ্টা-বিরোধী না। আমাদের আন্দোলন কালো আইনের বিরোধী। সেটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি আইন সংশোধন করে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তারা যদি অনানুগত্য করেন, ছুটি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন বা অন্য কাউকে কর্তব্য পালনে বাধা দেন—তবে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধের জন্য শাস্তির আওতায় গ্রেড অবনতি, অপসারণ কিংবা বরখাস্তের বিধান রাখা হয়েছে।
Leave a comment
এই বিভাগের আরো সংবাদ

সাগরে নিম্নচাপ, বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি
সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের উপকূল থেকে ২৩০ কিলোমিটারবিস্তারিত

সৌদি পৌঁছেছেন ৬৮ হাজারের বেশি হজযাত্রী, ১২ জনের মৃত্যু
অনলাইন ডেস্ক: হজ পালনের উদ্দেশ্যে ৬৮ হাজারের বেশি বাংলাদেশি সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। মোট ১৭৭টি ফ্লাইটেবিস্তারিত