Main Menu

রংপুরে স্কুলছাত্র কবিরে রিকশার প্যাডেলে স্বপ্ন ঘুরছে

রংপুর মহানগরীর বাবুপাড়ার বাসিন্দা কবির হোসেন। অদম্য মেধাবী এই কিশোর রিকশা চালিয়ে নিজের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। রিকশার প্যাডেল ঘুরিয়ে রংপুর নগরীর সড়কে জীবনযুদ্ধ জয়ের স্বপ্ন দেখে ।

অভাবি ঘরে বাবার মৃত্যুর পর মা বিয়ে করে চলে যান অন্যত্র। তাই চার ভাইবোনের সংসারের বোঝা নিজেই কাঁধে তুলে নেয় সে। রিকশা চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি চালিয়ে যায় নিজের ও ভাইবোনের লেখাপড়ার খরচ। নগরীর রবার্টসনগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র সে। ২০০১ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর পর মা খোরেছা বেগমের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় সে। বাধ্য হয়ে সংসারের হাল ধরতে হয় তাকেই। আর তাই একদিন রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।

রিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তাই দিয়ে কোনো রকমে চলে সংসার। সংসারের হাল ধরলেও পড়ালেখা তো বন্ধ থাকতে পারে না। তাই এখন দিনে স্কুল আর রাতে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে কবির। তার জীবন সমাজের আট-দশজনের মতো নয়।

তবে চোখেমুখে বড় হওয়ার স্বপ্ন। নানি শ্রোতন নেছাসহ ভাইবোনদের নিয়েই তার সংসার। শনিবার দুপুরে নগরীর নিসবেতগঞ্জের ঘাঘটের সেনাপার্ক মোড়ে কবিরের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। কবির জানায়, নগরীর কুঠিরপাড়ার ইউসেফ স্কুল থেকে অষ্টম শ্রেণী পাস করে রবার্টসনগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে সে। স্বপ্ন ছিল মা-বাবা, ভাইবোনদের নিয়ে সুখের একটি সংসার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।

বাবার মৃত্যুর পর মা বিয়ে করে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। নানিকে নিয়ে অভাব-অনটনের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। এরপরও রয়েছে লেখাপড়ার খরচ। তবুও হাল ছাড়তে নারাজ কবির। কবির বলেন, লেখাপড়া করে ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই। কিন্তু এ ইচ্ছা কি আমার পূরণ হবে। সবমিলিয়ে এক দুর্বিষহ জীবন কাটছে আমার। রিকশায় চালানো অর্থ দিয়ে ছোট বোন রহিমা বেগমের বিয়ে দিয়েছি।

অন্যের ভাড়া করা রিকশা চালিয়ে যে টাকা পাই তা দিয়ে অনেক কষ্ট করে সংসার চলে।
কবিরের নানি শ্রোতন নেছা জানান, অনেক কষ্ট করে নাতি-নাতনিদের নিয়ে স্টেশন এলাকায় সরকারি জায়গায় বসবাস করছি। কখনও কোনো মহল থেকে সহযোগিতা পাইনি। ভাড়ায় নেয়া রিকশা চালিয়ে যে টাকা উপার্জন হয় তাই দিয়ে সংসার চালাতে হয়। তিনি আরও জানান, কবির নিয়মিত স্কুলে যেতে পারে না। দিনে রিকশা চালানোর পাশাপাশি রাতে স্কুলে যায় কবির। তিনি বলেন, ব্যক্তি বা সরকারিভাবে আমার নাতি কবিরকে সহযোগিতা করা হলে সেতার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.