Home » ভারতের এক ঘোষণায় বেনাপোলে পেঁয়াজের কেজি ১৮০ টাকা

ভারতের এক ঘোষণায় বেনাপোলে পেঁয়াজের কেজি ১৮০ টাকা

ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় যশোরের বেনাপোলে দুই দিনের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ টাকা। বর্তমানে দেশি পেঁয়াজ ১৮০ এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। দুই দিন আগে ভারতীয় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৮০-৯০ এবং দেশি ১০০-১১০ টাকা কেজি দরে।

এদিকে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজের এলসি মূল্য ছিল ৮০০ ডলার। এই মূল্যে গত একমাস ভারত থেকে সাড়ে ৫০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। যার সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর ৫৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি রূপালী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আমদানি করে।

গত বৃহস্পতিবার এক পত্রের মাধ্যমে ভারত সরকার সে দেশে পেঁয়াজ সংকট দেখিয়ে আগামী ৩১ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে বেনাপোল উদ্ভিদ সংগনিরোধ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে ভারত থেকে সাড়ে ৫০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি হয়েছে। যার মধ্যে সর্বশেষ ৫ ডিসেম্বর ৩০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে রূপালী এন্টারপ্রাইজের মালিক মিন্নু মিয়া।

কিন্তু গত দুই দিনের ব্যবধানে ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ও দেশি পেঁয়াজের মজুত কম থাকার অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল বাজারে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার ২০০ টাকায়। কিন্তু গত দুই দিন ধরে পাইকারি বাজারের দাম গিয়ে ঠেকেছে পাঁচ হাজার ২০০ থেকে ৬০০ টাকায়। পেঁয়াজের বাজার লাগামহীন বেড়ে যাওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।

বাজারে হঠাৎ কেজিতে ৫০-৬০ টাকা দাম বাড়ায় ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দাম বৃদ্ধির ফলে বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি কমে গেছে।

বেনাপোল বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা কামাল হোসেন বলেন, ‘পেঁয়াজের বাজার এভাবে বাড়তে থাকলে আমাদের নিম্ন আয় দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। কয়েক দিন পরপরই এভাবে বাড়ছে পেঁয়াজের বাজারদর। দুই দিন আগেও ৮৫-৯০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনেছি। আজ বাজারে এসে দেখি দেশি পেঁয়াজ ১৮০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ১৬০ টাকা কেজি। এভাবে হলে আমরা অল্প আয় দিয়ে বাঁচব কী করে?’

আরেক ক্রেতা জামাল হোসেন বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনও তদারকি না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন তারা। বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

বেনাপোল বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. শুকুর আলী বলেন, দুই-তিন দিন ধরে প্রতি মণ তিন হাজার থেকে তিন হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। এখন সেই পেঁয়াজের দাম বেড়ে বাজারে বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার ৬০০ টাকায়। অর্থাৎ কেজিতে বেড়েছে ৪৫-৫৫ টাকা। তবে পাইকারি বাজারে আমদানি কম ও ভারতীয় পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়েছে। এতে তাদের বিক্রিও নেমেছে অর্ধেকে।

বেনাপোল চেকপোস্ট উদ্ভিদ সংগনিরোধে উপ সহকারী কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির ধীরগতির কারণে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ। গত একমাসে ভারত থেকে সাড়ে ৫০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় জমিতে পেঁয়াজ রোপণ শুরু হয়েছে। ওই পেঁয়াজ বাজারে আসতে কমপক্ষে আরও দুই মাস সময় লাগবে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে এলেই দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *