Home » ফাল্গুনে আগুনরাঙা : সুনামগঞ্জ তাহিরপুরের শিমুল বাগান

ফাল্গুনে আগুনরাঙা : সুনামগঞ্জ তাহিরপুরের শিমুল বাগান

সুনামগঞ্জ তাহিরপুরের শিমুল বাগানে করোনার মহামারিতা ভুলে থমকে যাওয়া পৃথিবীতে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। প্রকৃতি ফের পুরনো রূপে ফিরতে শুরু করেছে। দীর্ঘ এক বছরের ভয়-ভীতি, উৎকণ্ঠা কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে মানুষ। বসন্তের শুরুতে প্রকৃতিতেও এসেছে পরিবর্তন। ফুলের সৌরভে মেতে উঠবে চারপাশ।

তুরুণীর খোঁপায় গোলাপ,গাঁদা, শিমুল ফুল। বাসন্তী শাড়ি আর পাঞ্জাবী সাঁজে যুগল তরুণ-তরুণী। ঋতুরাজ রাজ বসন্তে সাথে প্রকৃতিপ্রেমীদের মেলবন্ধন যোগ করেছে নতুন মাত্রা।

ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে আগুন লেগেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের শিমুল বাগে। গাছে গাছে এসেছে নতুন পাতা, স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিময় বাতাস জানান দেয় নতুন লগ্নের। ফোটতে শুরু করেছে ফুল। শীতের আমেজ ভুলে বসন্তের আগমনকে স্বাগত জানাতে শিমুল বাগানে গাছে গাছে রক্তিম সাঁজ।

প্রকৃতির এই সৌন্দয্য উপভোগ করতে বসন্তের প্রথম দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শনার্থীরা। প্রকৃতিকে উজার করে দিচ্ছেন ভালোবাসা।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও গ্রামে ২ হাজার ৪ শতক জমিতে গড়ে উঠা শিমুল বাগান ভ্রমণ পিপাষুদের অন্যতম স্থানে পরিচিতি পেয়েছে। রূপ আর সম্পদের নদী যাদুকাটার তীরে ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই শিমুল বাগানই দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান। দেশের অন্যতম সৌন্দর্যমতি নদী যাদুকাটার তীরে ঘেঁষে উঠা শিমুল বাগানে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই ফুল ফুটতে শুরু করে। লাল ফুলের কারণে পুরো এলাকায় হয়ে উঠেছে রক্তিম আভা।

ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে, মাঝে সৌন্দর্যে ষোলো কলায় পরিপূর্ণ যাদুকাটা নদী, এপারে শিমুল বাগান। সব মিলেমিশে গড়ে তুলেছে প্রকৃতির এক অনবদ্য কাব্য। লাল পাপড়ি মেলে থাকা রক্তিম আভায় যেন পর্যটকদের মনে আলাদা জায়গা করে নিয়েছে।

এদিকে ফাগুন আসার সাথে সাথে স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তাহিরপুরে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। আসছেন পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বসন্তের আগমনী বার্তা জানিয়ে সারি সারি শিমুল গাছে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। বাগানের সবকটি গাছে পরিপূর্ণ ভাবে ফুল ফুটতে আরও একদু দিন সময় লাগবে হয়তো। তখন বাগানে যতদূর চোখ যায় কেবল দেখা মিলবে শিমুলের রক্তিম সাঁজ।

একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত রহমান মল্লিক স্বপরিবারে ঘুরতে এসেছেন শিমুল বাগানে। পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। কষ্ট করে আসলেও বাগানে এসে ভালো লেগেছে। সত্যিই নয়াভিরাম সৌন্দয্যে মুগদ্ধ আমরা। আমার দেখা মতে এটি একটি সম্ভাবনাময় স্থান।

বাগানে ঘুরতে আসা সেলিনা নামে এক তরুণী জানান, আমি আমার বন্ধুদের সাথে ঘুরতে এসেছি। বসন্তের প্রথম লগ্নে শিমুল বাগানের সৌন্দের্য্যে মুহিত আমরা। শিমুলের একটি লাল ফুল খোঁপায় গুজিয়ে রেগেছেন এই তরুণী।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *