Main Menu

জীবনের নিরাপত্তা চাওয়া সেই ইউএনওকে রংপুরে বদলি

স্বামীকে তালাক দিয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করা বান্দরবানের লামার আলোচিত সেই ইউএনও নুর এ জান্নাত রুমীকে রংপুরে বদলি করা হয়েছে। গতকাল রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব রাসেল হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়।

আদেশে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নুর এ জান্নাত রুমীকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে পদায়নের জন্য রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ে ন্যাস্ত করা হয়।

গত ৭ জুলাই নিজের তালাক দেওয়া স্বামী হুমকি দেওয়ায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লামা থানায় জিডি করেন নুর এ জান্নাত রুমী। এ সময় তিনি জিডিতে উল্লেখ করেন সাংসারিক মনোমালিন্য এবং কর্মস্থলে অন্যায়ভাবে প্ররোচিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রলোভনপূর্বক হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করেন স্বামী। একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে সামাজিক মর্যাদা ও ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করে গত ২৪ জুন রাতে আমি আমার স্বামী এটিএম ওমর ফারুককে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মৌখিকভাবে তালাক দেই। এতে সে ক্ষুদ্ধ ও উত্তেজিত হয়ে আমাকে হত্যা করবে অথবা নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।

পরে ৬ জুলাই আমি তাকে ডাকযোগে রেজিস্ট্রার্ট এডি সহকারে তালাকনামা প্রদান করি। তালাকনামা পেয়ে ৭ জুলাই সকাল ১০টার দিকে সে আমার লামা উপজেলা সরকারি বাসভবনে এসে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে। আমি প্রতিবাদ করলে সে আমাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারতে আসে। এ সময় আমার চিৎকার শুনে ঘরের কাজের বুয়া সেখানে উপস্থিত হলে কোন রকম প্রাণে বেচে আমার সন্তানকে নিয়ে অন্য রুমে চলে যাই।

পরে সে সময় সুযোগ বুঝে আমাকে মেরে পঙ্গু করবে, নিজে আত্মহত্যা করে আমাকে ফাঁসাবে এমন হুমকি দিয়ে চলে যায়। সে আমার সন্তান রাহিবকে জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে লুকিয়ে রেখে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপহরণ মামলা করবে বলেও হুমকি দেয়। তাই এ অবস্থায় আমার সন্তানকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যোগদান করা ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এবং আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ ঘটনা প্রকাশ হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। আলোচিত হয় ইউএনও নুর এ জান্নাত রুমী। উঠে আসে একের পর এক ঘটনা। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয় তাকে নিয়ে। এতে স্বামীকে তালাক দেওয়ার পেছনে স্ত্রী নুর এ জান্নাত রুমীর পরকীয়ার বিষয়ও উঠে আসে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তার বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কথাও জনগণের সামনে আসে। এতে বিব্রত হয় স্থানীয় প্রশাসন।

পরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর অসত্য সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে একটি বিবৃতি দেন ইউএনও নুর এ জান্নাত রুমি। এর দুদিন পরই তাকে বদলি করা হয়।

উল্লেখ্য, ৩০ তম বিসিএস এর কর্মকর্তা নুর এ জান্নাত রুমী ২০১২ সালের ৩ জুন সহকারী কমিশনার হিসেবে ঢাকায় প্রথম যোগদান করে পরে পোস্টিং হন জামালপুর জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ে। সেখানে ওমর ফারুককে বিয়ে করেন তিনি। পরে সেখান থেকে বদলি হয়ে ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর যোগদান করেন বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।

২০১৫ সালে সদর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে বদলি হন নুর এ জান্নাত রুমী। এরপর পদোন্নতি পেয়ে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আরডিসি হিসেবে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগদান করেন। সেখান থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে লামায় যোগদান করেন। চাকরি জীবনে দীর্ঘ ৭ বছর তিনি বান্দরবানে কর্মরত ছিলেন।

সূত্র: আমাদেরসময়

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.