Main Menu

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ আবেদনে ৪০ কোটি টাকা আয়

নিউজ ডেস্ক:  চাকরির আবেদনের জন্য কোনো প্রকার ফি না নিতে ২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, ‘ব্যাংকের মতো সরকারি চাকরিতেও নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য ফি নেয়া বন্ধ করা হোক। বলা হয়, বেকারত্ব একটি অভিশাপ। আর এই বেকারত্বকে পুঁজি করেই শতশত কোটি টাকা আয় করছে সরকার। বিভিন্ন সংস্থা বা বিভাগ থেকে নিয়োগ পরীক্ষার নামে নেয়া হচ্ছে মোটা অঙ্কের ফি। আর বেকার জনশক্তি একটি চাকরি পাওয়ার আশায় হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। একটি আসনের বিপরীতে শতশত প্রার্থী আবেদন করছেন। এই সুযোগই নিচ্ছে সরকারি সংস্থা বা বিভাগগুলো।’

দেখা গেছে, শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ পরীক্ষার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭ জন প্রার্থী। গত ১ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত এই আবেদন কার্যক্রম চলে। এই নিয়োগ পরীক্ষাবাবদ প্রতিজনের আবেদনের জন্য ১৬৮ টাকা ফি আদায় করা হয়। এই হিসাবে ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭ জন প্রার্থীর আবেদনে ৪০ কোটি ৩৪ লাখ ৬১ হাজার ৫৭৬ টাকা জমা হয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে।
জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তাফা কামাল জাগো নিউজকে বলেন, সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এবার রেকর্ডসংখ্যাক আবেদন জমা হয়েছে। এ বাবদ যে অর্থ জমা হয়েছে তা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ফান্ডে রয়েছে।

তিনি বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা ও ফলাফল প্রকাশ করতে বিপুল পরিমাণে ব্যয় হয়ে থাকে। এ জন্য সারাদেশে বিপুল পরিমাণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত রাখতে হয়। সব মিলে অধিকাংশ অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। তবে এবার রেকর্ডসংখ্যক আবেদন আসায় সরকারি রাজস্ব আয় কিছু হলেও হতে পারে।

জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য টেলিটক মোবাইল ফোনে এসএমএমের মধ্যমে ফি জমা নেয়া হয়। সে অনুযায়ী, টেলিটকে দুটি এসএমএস পাঠানোবাবদ ৪ টাকা কর্তন করা হয়। বাকি টাকা নিয়োগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে জমা দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শাকিল আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, বেশি আবেদন জমা হলেই টেলিটক কোম্পানির খুব বেশি লাভ হয় না। পুরো অর্থই নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানে চলে যায়। তাই আবেদনকারীর কাছে দুটি এসএমএস বাবদ ৪ টাকা কর্তন করা হলেও আবেদনকারীকে একাধিক এসএমএস পাঠানো হয়। এ ছাড়া নিয়োগ সংক্রান্ত সব আপডেট এসএমএসের মাধ্যমে জানাতে হয়।

তিনি বলেন, প্রতি আবেদনে ৪ টাকা নিলেও টেলিটক কোম্পানির আয় হয়ে থাকে মাত্র দুই শতাংশের বেশি। আবেদন প্রতি ৪ টাকা কেটে বাকি টাকা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দিতে হয়।

এই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন জান্নাত মুনিয়া নামে এক তরুণী। তিনি বলেন, সব সরকারি প্রতিষ্ঠানেই ব্যাংকের মতো ফি নেয়া বন্ধ করা উচিত। ব্যাংক যদি পরীক্ষার ফি না নিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম চালাতে পারে তাহলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কেন পারবে না।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, সরকারি চাকরিতে নিয়োগে পরীক্ষা ফি বন্ধ হবে কবে?

ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৭ আবেদনকারীর মধ্যে সর্বোচ্চ আবেদন রয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়। এ জেলায় মোট ৯৮ হাজার ৯৬৯টি আবেদন পড়েছে। এরপরে ময়মনসিংহে ৮৮ হাজার ২১৮টি, কুমিল্লায় ৮৪ হাজার ৭২৮টি, দিনাজপুরে ৬২ হাজার ৯৭১টি, রংপুরে ৫৯ হাজার ৭১টি, জয়পুরহাটে ১৮ হাজার ১৭৮টি, বগুড়ায় ৬৪ হাজার ৭২৭টি, নওগাঁয় ৪৯ হাজার ৮৬৩টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩০ হাজার ২৭১টি আবেদন পড়েছে।

 

জানা গেছে, সারা দেশে ১২ হাজার আসনের বিপরীতে প্রতি আসনে ২০০ জনের বেশি চাকরি প্রত্যাশী এই পরীক্ষায় অংশ নেবেন। চলতি বছরের ১৯ থেকে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা আয়োজনে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ডিসেম্বরের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষা শেষ হতে পারে।

বেশি আবেদন পড়ার বিষয়ে ডিপিই’র মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এবার সর্বোচ্চ আবেদন এসেছে। এটি একটি ইতিবাচক বিষয় হিসেবে গণ্য করা হবে। বেশি আবেদন এলে কঠিন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষক নেয়া সম্ভব হবে।

প্রার্থীরা http://dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলি এবং পরীক্ষা সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ওয়েবসাইটে (www.dpe.gov.bd) পাওয়া যাবে।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.