অনলাইন ডেস্ক: স্বাধীন ও পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই অস্ত্র ত্যাগ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের এক মন্তব্যের পর হামাস এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। উইটকফ বলেছিলেন, হামাস তাদের অস্ত্র ত্যাগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই দাবির কড়া জবাবে হামাস জানায়, তারা “প্রতিরোধ ও অস্ত্র ধারণের অধিকার” থেকে সরে আসবে না, যতক্ষণ না “জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন, পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র” প্রতিষ্ঠিত হয়। খবর বিবিসির।
ইসরায়েল হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের শর্তেই যুদ্ধবিরতির আলোচনা করতে চায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং ফ্রান্সসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা দিয়েছে। আরব দেশগুলোও হামাসকে গাজা থেকে সরে যেতে ও অস্ত্র ত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়েছে।যুক্তরাজ্য জানিয়েছে, যদি ইসরায়েল নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ না করে, তবে সেপ্টেম্বরে তারা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির শুক্রবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “যদি দ্রুত বন্দিমুক্তি নিয়ে কোনো চুক্তি না হয়, তবে গাজায় যুদ্ধ থামবে না।”
এর মধ্যে হামাস শনিবার (২ আগস্ট) একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যাতে ইসরায়েলি বন্দি এভিয়াতার ডেভিডকে একটি অন্ধকার সুড়ঙ্গে দেখা গেছে।ডেভিডের পরিবার হামাসের বিরুদ্ধে তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে না খাওয়ানোর অভিযোগ করেছে এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি তাকে উদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছে।
স্টিভ উইটকফ বর্তমানে ইসরায়েল সফর করছেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের ওপর গাজায় মানবিক বিপর্যয় ঘিরে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় বর্তমানে চলমান দুর্ভিক্ষ সম্পূর্ণরূপে ‘মানবসৃষ্ট’। তারা বলছে, ইসরায়েল খাদ্য সরবরাহ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তবে ইসরায়েল বলছে, তারা কোনো সাহায্য আটকে রাখছে না এবং “গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেইএদিকে, তেল আবিবে ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উইটকফ। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি পৌঁছানোর সময় তাকে করতালি ও সহায়তার আকুতি জানায় পরিবারগুলো।
তিনি বলেন, “শান্তি প্রচেষ্টার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত পুরো যুদ্ধের সমাপ্তি ও সব বন্দির মুক্তি, কোনো আংশিক সমঝোতা নয়।”
উইটকফের সফরের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার নেতানিয়াহুর সঙ্গে দেখা করেন তিনি এবং শুক্রবার দক্ষিণ গাজায় এক বিতর্কিত সাহায্য বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।জাতিসংঘের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের শেষ দিক থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৩৭৩ ফিলিস্তিনি সাহায্য সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন। এই হতাহতের বেশিরভাগই ঘটেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত জিএইচএফ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে।
ইসরায়েল দাবি করেছে, সাহায্যকেন্দ্রের কাছে হামাস বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং তারা সাধারণ নাগরিককে লক্ষ্য করে ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি চালাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৬০ হাজারের বেশি মানুষ।
প্রতিনিধি