ব্যাটিংয়ে খুব ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। জাকের আলী একাই হাল ধরেছিলেন। এরপর পাকিস্তানের ইনিংসে দাপুটে বোলিং শুরু করেছিলেন টাইগার বোলাররা। কিন্তু মাঝে দারুণ ব্যাট করে ম্যাচ প্রায় নিজেদের করে নিয়েছিল পাকিস্তান। তবে শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়িয়ে শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে নেয় স্বাগতিকরা। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৮ রানের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল।
আজ মঙ্গলবার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নামে দুদল। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৬টায় ম্যাচটি শুরু হয়। যেখানে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ব্যাটিং ব্যর্থতার পর জাকের আলীর হাফসেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে থামে পাকিস্তান।
১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানের ইনিংসে প্রথম ওভারেই উইকেট পড়ে। রান আউট হয়ে ব্যক্তিগত ১ রানে ফেরেনে সাইম আইয়ুব। এরপর শুরু হয় শরীফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিবের তাণ্ডব। ফখর জামান ও মোহাম্মদ হারিসকে ফেরান বাঁহাতি পেসার শরীফুল। আর কোনো স্কোর না করা হাসান নওয়াজ ও মোহাম্মদ নওয়াজে মাঠ ছাড়া করান তানজিম।
পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আঘাকে ব্যক্তিগত ৯ রানে ফেরান মেহেদী হাসান। সালমান অবশ্য এই ইনিংসে ২৩টি বল খেলেন। এই স্পিনার এরপর ১৩ রান করা খুশদিলকেও ফেরান। আর ১৩ বলে ১৯ রান করা আব্বাস আফ্রিদিকে বোল্ড করেন শরীফুল।
জাকেরের মতো পাকিস্তান দলেও প্রায় একাই হাল ধরেন ফাহিম আশরাফ। ১৯তম ওভারে রিশাদ হোসেনের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি ৩২ বলে ৪টি চার ও সমান ছক্কায় ৫১ রান করেন। আর শেষ দিকে আহমেদ দানিয়াল ১১ বলে ১৭ করলেও মোস্তাফিজুর রহমানের বলে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিলে জয় উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পান শরীফুল। দুটি করে উইকেট ভাগ করে নেন মেহেদী ও তানজিম।
টস হেরে এর আগে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামা শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দলচি। সাত বলে ৩ রান করে বিদায় নেন তানজিদ হাসান তামিমকে বিশ্রাম দিয়ে একাদশে নেওয়া মোহাম্মদ নাঈম। ফাহিম আশরাফের করা বলটিকে উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে মারতে চেয়েছিলেন নাঈম। টাইমিং গড়বড় করে উইকেটকিপারকেই ক্যাচ দিয়েছেন ৭ বলে ৩ রান করা নাঈম।
আর সালমান মির্জাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে হাসান নেওয়াজের ক্যাচ হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। ৯ বলে ১ চারে ৮ রান করে বিদায় নিলেন লিটন।
এরপর মিড অফে বল ঠেলেই একটি রান চুরি করতে চেয়েছিলেন তাওহিদ হৃদয়। পাকিস্তান অধিনায়ক আঘা সালমানের সরাসরি থ্রো ভেঙে দেয় ননস্ট্রাইকিং প্রান্তের উইকেট। রিপ্লে দেখে টিভি আম্পায়ার আউটের ঘোষণা দিয়েছেন।
আগের ম্যাচে ম্যাচ জেতানো ফিফটি করা ওপেনার পারভেজ হোসেন আজ ফিরলেন ১৪ বলে ১৩ রান করে। অভিষিক্ত পেসার আহমেদ দানিয়ালের বলে ফাহিম আশরাফকে ক্যাচিং প্র্যাকটিস করিয়ে আউট হলেন বাংলাদেশ ওপেনার। তার বিদায়ে ১১ বলের মধ্যে ৩ রান তুলতে ৩ উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে অবশেষে কিছুটা হাল ধরেন জাকের আলী ও মেহেদী হাসান। তারা ৪৯ বলে ৫৩ রান তোলেন। মেহেদী মোহাম্মদ নওয়াজের বলে আউট হওয়ার আগে ২টি ছক্কা ও দুটি চারে ৩৩ রান করেন। তবে এরপর শামীম হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন দ্রুত বিদায় নেন। ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়া জাকের ৫৫ রান করেন। তিনি ৪৮ বলে ১টি চার ও ৫টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট পান সালমান মির্জা, আহমেদ দানিয়াল ও আব্বাস আফ্রিদি।
বার্তা বিভাগ প্রধান