Main Menu

গোপন কারাগারে শিশুদেরও আটকে রাখতেন হাসিনা, দেওয়া হতো না মায়ের দুধ

অনলাইন ডেস্ক: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই একের পর এক প্রকাশ্যে আসছে ফ্যাসিস্ট এই প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের নানা অপকর্ম। তার আমলে ঘটা ভয়ংকর এক অপরাধের তথ্য প্রকাশ করেছে তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড। এতে বলা হচ্ছে, পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার গোপন কারাগারে আটকে রাখতেন শিশুদেরও। এমনকি তাদের পান করতে দেওয়া হতো না মায়ের দুধ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় মা-বাবার ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য ব্যবহার করা হতো এসব শিশুদের।সম্প্রতি শেখ হাসিনার আমলে জোরপূর্বক গুমের তদন্তকারী একটি কমিশনের এক তদন্তে সামনে এসেছে ভয়াবহ এই তথ্য। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের গোপন আটক কেন্দ্রে বন্দি শত শত লোকের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিশুও ছিল বলে জানিয়েছে বর্তমানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে জোরপূর্বক গুমের তদন্তকারী একটি কমিশন।জোরপূর্বক গুমের তদন্তকারী এই কমিশন মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলেছে, অন্তত অর্ধডজন (ছয়জন) শিশু তাদের মায়েদের সঙ্গে মাসের পর মাস কারাগারে বন্দি ছিল। আটক মা-বাবাদের মানসিক চাপ দেওয়ার জন্য শিশুদের ব্যবহার করা হতো; যার মধ্যে শিশুদের দুধ পান করতে না দেওয়ার মতো ভয়াবহ ঘটনাও রয়েছে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জুলাই ও আগস্টে সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইতোমধ্যেই হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শত শত নেতা-কর্মীকে বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং আরও শত শত মানুষকে বেআইনিভাবে অপহরণ ও গুমসহ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

তদন্ত কমিশন বলেছে, নারীদের তাদের সন্তানসহ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনার বিশদ বিবরণ তাদের কাছে রয়েছে। যার মধ্যে সর্বশেষ এই ধরনের ঘটনা ঘটে ২০২৩ সালে। এছাড়া কমিশন এই বিষয়ে এক গর্ভবতী নারীর ঘটনাও উল্লেখ করেছে। গর্ভবতী ওই নারীকে তার দুটি ছোট বাচ্চাসহ আটকে রাখা হয়েছিল এবং সেই আটক কেন্দ্রে তাকে মারধরও করা হয়েছিল।

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এগুলো কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ’

‘কখনো ফিরে আসেনি’

কমিশন বলেছে, একজন প্রত্যক্ষদর্শী তদন্তকারীদের গোপন কারাগারের এমন একটি কক্ষ দেখিয়েছেন যেখানে তাকে শিশুকালে তার মায়ের সঙ্গে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। আর এই আটক কেন্দ্রটি পরিচালনা করত আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।

কমিশনের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘তার মা আর কখনোই ফিরে আসেননি। ’

অন্য একটি ঘটনায়, এক দম্পতি এবং তাদের শিশুকে আটক করা হয়েছিল এবং জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাবাকে চাপ দেওয়ার জন্য ‘মানসিক নির্যাতনের অংশ হিসেবে’ শিশুটিকে মায়ের দুধ খাওয়ানো থেকে দূরে রাখা হয়েছিল।ক্ষমতায় থাকাকালীন হাসিনা সরকার জোরপূর্বক এসব গুমের ঘটনা অস্বীকার করত। সাবেক এই সরকার দাবি করেছিল, নিখোঁজদের মধ্যে কয়েকজন ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করার সময় ভূমধ্যসাগরে ডুবে মারা গেছেন।

কমিটির সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কিছু ভুক্তভোগী তাদের নির্যাতনকারী কর্মকর্তাদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে না পারলেও তাদের জবানবন্দির মাধ্যমে সেই সব বাহিনীকে চিহ্নিত করা যাবে।সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এই ধরনের ক্ষেত্রে, আমরা কমান্ডারকে জবাবদিহি করার সুপারিশ করব। ভুক্তভোগীদের পরিবারের ওপর এসব ঘটনায় বহুমুখী ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে, আর সেটি গুরুতর মানসিক আঘাত থেকে শুরু করে আইনি এবং আর্থিক চ্যালেঞ্জ পর্যন্ত বিস্তৃত।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.