Main Menu

শিশু জাইফাকে অপহরণ করতেই সাবলেট নেন শাপলা

ঢাকার আজিমপুরে বাসায় ডাকাতির পর অপহরণের শিকার আট মাস বয়সী শিশু আরিসা জান্নাত জাইফাকে উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এছাড়া অপহরণে জড়িত এক নারীকে গ্রেফতার করেছে এলিট ফোর্সটি। তার নাম ফাতেমা আক্তার শাপলা।

২৭ বছর বয়সী শাপলাকে আটক করার পর চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মূলত শিশু জাইফাকে অপহরণ করতেই ফারজানার বাসায় সাবলেট নেন শাপলা। সেখানে একরাত থাকার পর বাড়িটিতে ডাকাতির পর শিশু জাইফাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য দেন সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস। শিশু জাইফার উদ্ধার সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এলিট ফোর্সটির পক্ষ থেকে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।

র‌্যাব জানায়, বাসাটিতে ওঠার সাত দিন আগে ফারজানার সঙ্গে শাপলার পরিচয় হয়। শাপলা নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বলে পরিচয় দেয়। ভাড়া দিলে শিশুটিকে দেখভাল করতে পারবে বলে তার মাকে আশ্বাস দেয়। সরল বিশ্বাসে ফারজানা সাবলেট দিতে রাজি হয়। কিন্তু বাসায় ওঠার পরদিনই কয়েকজনকে নিয়ে বাসায় ডাকাতি করার পর শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

শাপলা বিবাহিত হলেও মিথ্যা পরিচয় দেয়। মোটা অংকের মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয় বলে জানায় র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুনীম ফেরদৌস জানান, শুক্রবার রাতে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে শাপলাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। ফাতেমা আক্তার শাপলা সেলিম হোসেনের স্ত্রী ও তার স্বামীর বাড়ি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলায়।

যেভাবে শিশুটিকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন শাপলা
র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান লে. ক. মুনীম ফেরদৌস জানান, শিশু জাইফার মা ফারজানা আক্তার চাকরি করেন এবং তার বাবা বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রাজধানীর আজিমপুরের লালবাগ টাওয়ার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবারটি গত ৩ বছর ধরে বসবাস করে আসছে।

র‌্যাব আরও জানায়, এক সপ্তাহ আগে ফারজানার মায়ের সঙ্গে অফিসে যাতায়াতের সময় শাপলার পরিচয় হয়। এ সময় শাপলা শিশুটির মায়ের কাছে তার নাম রাইসা এবং তার বাড়ি নওগাঁ জেলায় বলে মিথ্যা পরিচয় দেয়। শাপলা আরও জানায় যে, সে অবিবাহিত এবং একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী। পড়ালেখার পাশাপাশি সচিবালয়ের পরিবহন পুলে অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করেন।

শাপলা শিশুটির মাকে আরও জানায়, তার ঢাকায় থাকার জন্য সাবলেট হিসেবে একটি ভালো রুম দরকার এবং তাকে সাবলেট দিলে সারাদিন বাসায় পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুটিকে দেখভাল করতে সহযোগিতা করতে পারবে। শিশুর মা সন্তানের দেখাশুনার কথা চিন্তা করে শাপলাকে সাবলেট হিসেবে বাসা ভাড়া দিতে রাজি হয়।

ডাকাতির সময় অপহরণ করা সেই শিশু উদ্ধার
গত ১৪ নভেম্বর বিকেলে বাসায় এসে শিশুটির মাকে দুই হাজার টাকা অগ্রিম ভাড়া দিয়ে রাত কাটায় শাপলা। পরদিন সকালে শিশুটির মাকে জানায় যে, গ্রাম থেকে তার চাচাতো ভাই চাল নিয়ে তার বাসায় আসবে। পরে তিন যুবককে চাচাতো ভাই পরিচয় দিয়ে বাসায় আনেন শাপলা। বাসায় আসার পর আলাপচারিতার একপর্যায়ে ওই যুবকরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে শিশুটির মাকে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে শাপলা ও তার সহযোগীরা বাসার স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ অর্থসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে শিশু জাইফাকে নিয়ে চলে যায়। আর তার সহযোগীরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে।

কে এই শাপলা?
র‌্যাব বলছে, আটক শাপলা একজন গৃহিনী। ২০১০ সালে পরিবারের সঙ্গে মোহাম্মদপুরের বসবাস শুরু করেন। ২০১২ সালে বগুড়ার একটি স্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে রাজধানীর একটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে রাজধানীর একটি কলেজে মার্কেটিং বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা শুরু করলেও আর শেষ করেননি। এরপর ২০২৩ সালে বিয়ে করেন। তিন থেকে চার মাস আগে মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিং এলাকায় তার স্বামীর নিজস্ব ফ্ল্যাটে বসবাস শুরু করের। শাপলার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.