Main Menu

আ.লীগ যা করেছে তা রাজতন্ত্রের আদলে পরিবারতন্ত্র: পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

আওয়ামী লীগ এতদিন যা করেছে, তা রাজতন্ত্রের আদলে পরিবারতন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। শনিবার (২ নভেম্বর) বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ রচিত ‘স্বাধীনতা গণতন্ত্র মানবাধিকার: আওয়ামী লীগের শাসনামল ২০০৯-২০২৩’ শীর্ষক বইয়ের পাঠ পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মানবাধিকার বলতে যা বোঝায় তা আমরা একদমই পাইনি। কোনও সাংবাদিক দেখা যেতো—একটা কলাম লেখায় ওই পত্রিকা অফিসেই আর তার কাজ করার সুযোগ থাকতো না। টেলিভিশনে বলে দেওয়া হতো কারা কারা যাবে। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এগুলো বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।’

লেখক এহসান মাহমুদের বইয়ের সঙ্গে বর্তমানের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, ‘একটা ফ্যাসিস্ট রেজিম চলে গেলে মানুষের আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যায়। জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা শুধু অন্তর্বর্তী এজেন্ডা নয়, এটা সবার অঙ্গীকার। জনগণের আকাঙ্ক্ষার মধ্যে অর্থনৈতিক চাহিদা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের জন্য বিশাল একটা গ্যাপ রয়েছে। অর্থনৈতিক আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে, পাওনা দিতে হচ্ছে, তারপর নতুন ঋণ নিতে হচ্ছে। এই বিশাল গ্যাপ রেখে তিন মাসে আকাঙ্ক্ষা পূরণ চাইলেও সম্ভব না। তবে আমরা সবার সহায়তায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি একটি সম্মানজনক অবস্থায় উত্তরণ করতে পারবো ।’

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের সংস্কার প্রয়োজন। ফ্যাসিস্টদের প্রেতাত্মারা এখনও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোও ফ্যাসিজমের কমান্ড শুনে অভ্যস্ত। ফলে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। আমরা দু-একদিনের মধ্যে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বসবো। বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবো। রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। জনমতকেও প্রাধান্য দিতে হয়।’ এহসানের বইয়ে যেসব বাস্তবতা উঠে এসেছে—নতুন বাংলাদেশে তা আর চান না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সমকালের উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, প্রথম আলো পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, লেখক ও গবেষক পারসা সানজানা সাজিদ।

অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন বলেন, ‘এহসানের এই বইতে লেখাগুলো দেখলে মনে হয় ওই সময়গুলো চোখের সামনে উঠে আসছে। শাসকগোষ্ঠী সবসময় মনে করে তারা যা জানায় তা-ই জনগণ জানে, আবার মিডিয়াও মনে করে তারা যা দেখায় তা-ই জনগণ বিশ্বাস করে। কিন্তু এটা যে সঠিক নয় এবং জনগণ যে সহজে কিছু ভুলে যায় না, তা একটা ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। আর এ বিষয়টা এহসান মাহমুদের লেখায় ফুটে উঠেছে। সবসময় গণমানুষের একটা ভিন্ন আওয়াজ থাকে, যা এহসান মাহমুদ অ্যাড্রেস করতে পেরেছেন।’

নেত্র নিউজের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল বলেন, এহসানের বইটা একটা গল্প বা উপন্যাস নয়, একটা দলিল। এই বইয়ে আওয়ামী সরকারের আমলে বিএনপির ওপর নির্যাতন হওয়ার বিষয়টা তিনি তার কলামে তুলে ধরেছেন। তিনি গণমানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, বিভিন্ন সমাবেশে ঘুরেছেন, আর সেগুলো তার লেখনীতে ফুটিয়ে তুলেছেন। এটা একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে গিয়ে লেখার বিষয় নয়, এটি কেবল সত্যের উপস্থাপনা, যেটি তিনি করেছেন।’

Leave a comment



(এর আগের খবর) »



এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.