Main Menu

মাজার ও ভিন্নমতের প্রতিষ্ঠান ধ্বংস বন্ধ করার আহ্বান মাহফুজ আলমের

‘খারেজি জাহেলিয়াত বন্ধ করেন, আমরা মরবো, তবু মাথা নোয়াবো না’ শীর্ষক শিরোনামে ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। মাহফুজ আবদুল্লাহ নামে ফেসবুক আইডিতে তিনি লেখেন, ‘মাজার ও ইসলামের বিভিন্ন তরিকা এবং মাসলকের (ভিন্নমত-পথ) প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা বন্ধ করতে হবে।’

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) প্রথম প্রহরে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে মাহফুজ আলম লেখেন, ‘আজ মাজার ভাঙবে, কাল সত্যপন্থি পীরদের দরগা-দরবার ভাঙা হবে, পরশু ভিন্ন তরিকার মসজিদ ভাঙা হবে—এ সকল নৈরাজ্য যারা করে বেড়াচ্ছেন, তারা ইসলাম ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন। বাংলাদেশের জনগণকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ইসলামের বৈচিত্র‍্য রক্ষা করতেই হবে।’

তিনি আরও লেখেন, ‘এক জালেম আজকে আমাকে নাস্তিক ইসলামবিদ্বেষী বলেছেন। এ মিথ্যুক ফাসিক খোঁজ নিয়ে কথা বলে নাই। ইন্নাজ জন্না আকযাবুল হাদিস। অনুমাননির্ভর কথা বলে ওরা আমাদের হত্যাযোগ্য করে তুলছে। ওরা তো বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষকেই মুসলমান মনে করে না।’

আমরা ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে, ট্যাগিংয়ের রাজনীতির বিরুদ্ধে, বাঙালি মুসলমান, সর্বোপরি বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যাযোগ্য করার বিরুদ্ধে লড়েছি। নিপীড়িত হয়েছি। কিন্তু আজ আমাদের এ জাহেলরা হত্যাযোগ্য করে তুলেছে।

তারা আগামীকালকে আমাদের হত্যা করে, প্রথমে শিয়াদের হত্যা করবেন, তারপর কাদিয়ানী, তারপর পীর ও পীরের মুরিদদের, তারপর গণতন্ত্রপন্থি আলেমদের, তারপর পাবলিক প্লেসে হাজির মুসলিম নারীদের, তারপর কোনোভাবে তাদের ‘ইসলামে’র বিরুদ্ধে যায় সবাইকে হত্যা করে দেশটা হিন্দুত্ববাদীদের বিচরণক্ষেত্র বানিয়ে ফেলবেন। এ দেশের না ইনারা, ওনারা ভিনদেশের এজেন্ট। খুবই স্পষ্ট ইনাদের (তাদের) মিশন।

মাহফুজ আলম উল্লেখ করেন, ‘এ দেশকে মুজিববাদী এবং খারেজি তাকফিরি ইসলামপন্থিদের খেলার জায়গা বানাতে দেওয়া হবে না। এ মাটি তাদের না! তারা এ মাটির সঙ্গে বেইমানি করেছে। ভুলে যাবেন না, জঙ্গিবাদীরাই সাবেক বিএনপি-জামায়াত সরকারকে ব্যর্থ করে দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের দীর্ঘদিনের জন্য ক্ষমতায় বসিয়েছিল। এ দুই ক্যাম্পকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করতে হবে।’

তার মন্তব্য, ‘আমরা মরবো, তবু এ দুই ক্যাম্পের লোকদের বাংলাদেশে কোনোভাবে বাঙালি মুসলমান, বৃহদার্থে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নাগরিকদের রক্ত হালাল করতে দেবো না।’

তিনি বলেন, ‘মুজিববাদীরা আমাকে অভ্যুত্থানের আগে খুঁজেছে, এখন জঙ্গিবাদী খারেজিরা খুঁজবে। আল্লাহর কাছে আমার জবাবদিহি করতে হবে। আমি কোনও খারেজি তাকফিরি ইসলামপন্থির ফতোয়াবাজির অধীন না। আমি ইসলাম বুঝি, আল্লাহ ও দরদি নবিজির সঙ্গে সম্পর্ক আকারে।’

‘এর বাইরে জামায়াত, হেফাজত, খেলাফত ইত্যাকার গোষ্ঠীর ইসলাম নিয়ে আমার আবেগ বা বিদ্বেষ নেই। জামায়াত ও অন্যদের ইসলামি রাষ্ট্রকল্প ও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা নিয়ে আমরা ক্রিটিক্যাল আছি, থাকবো। যেমন ক্রিটিক্যাল আছি মুজিববাদী বামপন্থিদের রাষ্ট্রকল্প ও ফ্যাসিবাদী প্রবণতা নিয়ে। আমাদের ডিবেট ও ডায়ালগের মাধ্যমে সবার মধ্যকার ফ্যাসিবাদ দূর করার আগ পর্যন্ত ক্রিটিক্যাল থাকতেই হবে।’

মাহফুজ আলম লেখেন, ‘এ দেশের লোকায়ত নদীময় ইসলাম, মাজার- দরগা-দায়রায় ঘেরা এ বেঙ্গল বেসিন, মক্তব-মসজিদ-মাদ্রাসার তেলাওয়াত তাহলিলে মুখর গ্রামবাংলা, জারি-সারি-মুর্শিদি গান আর বাঙালি মুসলমানের লোকাচার অক্ষত থাকবে, কিন্তু জাহেল খারেজিদের জাহেলিয়াত কবর দেওয়া হবে।’

স্ট্যাটাসে তিনি এ-ও বলেন, ‘আগামীকাল (শনিবার) থেকে নীতি নির্ধারণ ও রাজনৈতিক লড়াইয়ের জায়গায় ঐক্যের জন্য আমাদের আপনাদের প্রস্তাবনা নিয়েই কাজ করবো।’

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে দেশে অন্তত ১৬-১৭টি স্থানে বিভিন্ন মতাদর্শ দ্বারা পরিচালিত মাজার, খানকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে হামলা করা হয়েছে একজন ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর ওপর। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নাগরিককে ‘নাস্তিক’ ট্যাগ দিয়ে প্রচারণা হয়েছে।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.