Main Menu

সিলেটসহ দেশের পাঁচ বিভাগে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা

সিলেটসহ দেশের পাঁচ বিভাগে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। একইসঙ্গে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। আর এই ঝড়বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি শঙ্কায় থাকেন কৃষকরা। ফসল ফলানো থেকে ঘরে তোলার যে স্বপ্ন এর মধ্যে ঝড়বৃষ্টি আর বন্যাই বাগড়া দিতে পারে। এ ছাড়া আরেক খবরে হাওরাঞ্চেলে বন্যার সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৫টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেয়া আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক পূর্বাভাসে ঝড়ের বিষয়ে জানানো হয়েছে। ফলে এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালি এবং সিলেট অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কি.মি. বেগে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহবৃষ্টি হতে পারে।

বন্যার শঙ্কা

এদিকে, সিলেটের হাওরাঞ্চলে অতিবৃষ্টি ও আগাম বন্যা শঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। ভারতের মেঘালয়ে অতিবৃষ্টি হলে তলিয়ে যেতে পারে হাওরের বোরো ফসলের খেত। টেকসই বাঁধ না থাকায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। তবে ফসলরক্ষায় বাঁধে জরুরি মেরামতের জন্য প্রস্তুত পানি উন্নয়ন বোর্ড। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে এই ব্যানার শঙ্কার কথা বলা হয়েছে।

২০১৭ সালের মার্চের ২৮ তারিখ ভারতের মেঘালয়ে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটের সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের ফসলরক্ষা বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে তলিয়ে যায় ফসল। এ ছাড়া ২০২২ সালে আগাম বন্যায় ফসলের আংশিক ক্ষতি হয়।চলতি মাসের শেষের দিকে অধিক বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে বন্যায় বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যাওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন কৃষকেরা। তারা বলছেন, অতিবৃষ্টি হলে বন্যার শঙ্কা তো রয়েছে। বন্যা হলে তলিয়ে যায় ফসলের মাঠ।

দুশ্চিন্তায় কৃষক

সারাবছর অপেক্ষার পর ফলে সোনালী ফসল। কৃষকের শ্রমে-ঘামে হাওরে ফলানো ধান গোলায় ওঠা। কিন্তু এতে বাগড়া বসায় ঝড়-বৃষ্টি। শিলাবৃষ্টি হলে যেন আর রক্ষাই নেই। ফসল নিয়ে তাই দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই কৃষকের।প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাস শুরু। এ সময় হাওরে বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও আগাম বন্যার আশঙ্কা থাকে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে কৃষকের সর্বনাশ। তবে পরিমাণমত বৃষ্টি ফসলের জন্য উপকারী। কিন্তু মাঝেম ধ্যে শিলাবৃষ্টি আর বন্যার হানা যেন কৃষকের সকল স্বপ্নকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

সিলেটের চার জেলার অন্তত ১০ লাখ কৃষি পরিবারের সারা বছরের স্বপ্ন বোরো ফসল। গত সপ্তাহে বৃষ্টির অভাবে ফুল আসা ধানগাছ ও হাওর রক্ষা বাঁধে লাগানো দূর্বাঘাস মরার উপক্রম হয়। এখন দুদিনের বৃষ্টি ও ঝড়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। কৃষিবিদ বিমল চন্দ্র সোম বলেন, এখন ভারী বৃষ্টি ফসলের জন্য ক্ষতিকর।

এদিকে, ধান গাছে ফুল আসার সময় হালকা বৃষ্টি উপকারী। এতে পুষ্ট হয় চাল। এই সময়ে ভারি বৃষ্টি ধানের ক্ষতি করে থাকে। ফসল রক্ষা বাঁধগুলোকেও দুর্বল করে। এতে হাওরের ফসল ঝুঁকিতে পড়বে। এদিকে সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঝড় ও ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়। সুনামগঞ্জের এক জন কৃষক জানালেন, রাতে যেভাবে ঝড়বৃষ্টি ও শিলা পড়েছে, তাতে ফসলের বেশ ক্ষতি হবে।

জানা যায়, সিলেট বিভাগের চার জেলায় এবার ৪ লক্ষ ৯২ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শেষ খবর পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৭৩ হাজার ৪৩ হেক্টর। আশা করা হচ্ছে এতে ২০ লাখ টন চাল উত্পন্ন হবে। প্রতি বছর অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢল থেকে ‘প্রজেক্ট ইমপ্লিমেশন’ কমিটির (পিআইসির) মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের চার জেলার ছোট-বড় হাওর রক্ষার জন্য ‘হাওর রক্ষা’ প্রকল্প গ্রহণ করে থাকে। এবার এ বিভাগে ‘হাওর রক্ষা’ প্রকল্পে মোট ১৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়।

অনেক স্থানে প্রকল্প কাজ শেষ হলেও পিআইসিকে অবশিষ্ট নির্ধারিত টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না। সুনামগঞ্জ জেলায় হাওর রক্ষা প্রকল্পের মোট ৭৩৪টি প্রকল্প এবং ১৫৯টি ‘ক্লোজার’য়ের কাজ শেষ হয়েছে পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) মাধ্যমে। জেলার ৩৮টি ছোট-বড় হাওরের ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে ৫৯১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়। এজন্য ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় সব কাজ শেষ না হওয়ায় ৭ মার্চ পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।

সিলেট বিভাগের হাওড়বেষ্টিত কয়েকটি উপজেলার অন্তত পাঁচজন কৃষক বলেন, ‘পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। ধানের শিষ আসছে মাত্র—এ অবস্থায় ভারি বৃষ্টি হলে সর্বনাশ। বুঝতে পারছি না এবার কী হবে। সোমবার রাতের পরিস্থিতিতে কৃষকদের মনে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে। ভরা বর্ষার মতো বৃষ্টি হয়েছে। এখনো সব স্থানে ধানে পুরোপুরি শিষ আসেনি। তার আগেই যদি হাওরে পানি আসে, তাহলে কপাল পুড়বে কৃষকের।’

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.