Home » ‘মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই’, দাবিতে অনড় শিবকুমার, খড়্গের সঙ্গে বৈঠকের পরও মিলল না সমাধান সূত্র

‘মুখ্যমন্ত্রী হতে চাই’, দাবিতে অনড় শিবকুমার, খড়্গের সঙ্গে বৈঠকের পরও মিলল না সমাধান সূত্র

কর্নাটকের অধিকাংশ কংগ্রেস বিধায়ক সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চাইলেও, দাবিতে অনড় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমার। আজ বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লিতে এসে তিনি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেকে জানিয়ে দিলেন, তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। শিবকুমারের এই মনোভাবের জেরেই মঙ্গলবার কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়নি। বুধবার সিদ্ধান্ত হলে খড়্গে নিজে বেঙ্গালুরু গিয়ে কংগ্রেস পরিষদীয় দলের সঙ্গে বৈঠক করে নাম ঘোষণা করতে পারেন।

জট কাটাতে আজ খড়্গে আলাদা আলাদা ভাবে সিদ্দারামাইয়া এবং ডি কে শিবকুমারের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রথমে শিবকুমারের সঙ্গে বৈঠক হয়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, শিবকুমারকে জানানো হয়, দলের অধিকাংশ বিধায়ক সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন। শিবকুমারের জন্য খড়্গের প্রস্তাব ছিল, তিনি উপমুখ্যমন্ত্রী হোন। পছন্দমাফিক দফতর তাঁকে দেওয়া হবে। তাঁর অনুগামীদেরও পছন্দমাফিক দফতর দেওয়া হবে। শিবকুমারই ঠিক করবেন, বিভিন্ন সরকারি সংস্থার পদে কে কোথায় বসবেন। লোকসভা নির্বাচন পর্যন্ত তিনি প্রদেশ সভাপতির পদেও থাকবেন।

কিন্তু সূত্রের খবর, শিবকুমার জানিয়ে দেন তিনি মুখ্যমন্ত্রীই হতে চান। কারণ তিনি সনিয়া গান্ধীকে কথা দিয়েছিলেন, কর্নাটক জিতে আনবেন। তা তিনি করে দেখিয়েছেন। সিদ্দারামাইয়া আগে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি ফের কেন মুখ্যমন্ত্রী হবেন? জেডিএস থেকে কংগ্রেসে এসে সিদ্দারামাইয়া বরাবর মুখ্যমন্ত্রী বা বিরোধী দলনেতার পদ পেয়ে এসেছেন বলেও অনুযোগ করেন শিবকুমার। তিনি যুক্তি দেন, রাজ্যে তাঁর সভাপতিত্বে কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছে। প্রথামাফিক তাঁরই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথা। প্রায় পঞ্চাশ মিনিট বৈঠকের পরে খড়্গে সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গেও বৈঠক করেন। কর্নাটকে কংগ্রেসের সবথেকে জনপ্রিয় নেতা সিদ্দারামাইয়া জানিয়ে দেন, যেহেতু সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থন তাঁর দিকে, তাই তাঁরই মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত। তবে শিবকুমারের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগ করে নিতে আপত্তি নেই। তিনি প্রথম আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরে শিবকুমার শেষ আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন।

শিবকুমার-সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে বৈঠকের আগে রাহুল গান্ধী সকালে রাজাজি মার্গে খড়্গের বাড়িতে গিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। দুপুরে ফের কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল দশ জনপথে গিয়ে রাহুলের সঙ্গে দেখা করেন। সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী শিমলায় ছিলেন। মঙ্গলবার তাঁরাও দিল্লি ফিরে আসেন। খড়্গে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সনিয়া, রাহুলের সঙ্গে ফের আলোচনা করবেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাহুল আর বেণুগোপাল সিদ্দারামাইয়ার পক্ষে। সনিয়া শিবকুমারের দিকে ঝুঁকে। কংগ্রেসের দ্বন্দ্ব হল, ওবিসি নেতা সিদ্দারামাইয়া মুখ্যমন্ত্রী না হলে বিজেপি সরব হতে পারে। আবার শিবকুমার মুখ্যমন্ত্রী না হলে সংগঠনে ভুল বার্তা যেতে পারে। এর আগে পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়ে কংগ্রেস জেতার পরে প্রদেশ সভাপতিরা মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি হিমাচলে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরে প্রদেশ সভাপতি মুখ্যমন্ত্রী হননি। রাজস্থানেও তদানীন্তন প্রদেশ সভাপতি সচিন পাইলটকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়নি।

তবে স্বস্তি একটাই, শিবকুমার জানিয়েছেন, দল তাঁর কাছে মায়ের মতো। তিনি পদত্যাগ করবেন না। পিছন থেকে ছুরিও মারবেন না। তাঁর এখন লক্ষ্য, লোকসভা ভোটে কর্নাটকের ২৮টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ২০টি আসনে জিতে আসা।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *