Home » সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ‍প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। তবে খেললো শুধু বাংলাদেশই! একের পর এক আক্রমণে গোটা ম্যাচে ভারতের রক্ষণের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দিয়েছে মারিয়া মান্দারা। তবে গোলের দেখা মিলছিল না। সেই আক্ষেপ ‍জুড়াতেই কিনা এলো দেখার মতো এক গোল। আনাই মোগিনির বাতাসে ভাসানো বল দেখতে দেখতে জড়িয়ে গেলো জালে। ব্যস, হয়ে গেলো! ওই লক্ষ্যভেদেই আজ (বুধবার) ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে সাফের শিরোপা ঘরে তুলেছে বাংলাদেশ।

পৌষের সন্ধ্যায় কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে দর্শকের ঢল। গ্যালারিভর্তি নিজ সমর্থকদের সামনে মারিয়া-মনিকারা হতাশ করেননি। প্রথমবারের মতো আয়োজিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঢাকাতেই রেখে দিয়েছে তারা। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথে রবিন রাউন্ড লিগেও ভারতকে একই ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা।

২০১৮ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ সবশেষ শিরোপা জিতেছিল। ভুটানের সেই প্রতিযোগিতায় ফাইনালে নেপালকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার বয়স এক বছর বাড়িয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল শুরু হয়েছে। প্রথম প্রতিযোগিতাতেই গোলাম রব্বানী ছোটনের দলের বাজিমাত। তবে দুইবার বল পোস্টে লেগে ফিরে না এলে গোল ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো।

ফাইনালে বাংলাদেশের একাদশে চারটি পরিবর্তন এসেছে। সবশেষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেরা খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ। ওই ম্যাচে খেলা সোহাগী কিসকু, স্বপ্না রানী, আনুচিং মোগিনি ও আফইদার জায়গায় একাদশে জায়গা করে নেন মনিকা চাকমা, তহুরা খাতুন, ঋতুপর্ণা চাকমা ও নিলুফার ইয়াসমিন। তাদের নিয়েই স্বাগতিকরা শুরুতে একটু দেখেশুনে খেললেও ম্যাচের লাগাম নিয়ন্ত্রণে নিতে সময় নেয়নি।

আধিপত্য দেখিয়ে ম্যাচের ১৫ মিনিটে একটুর জন্য গোল-বঞ্চিত হন বাংলাদেশের মেয়েরা। মারিয়ার দূরপাল্লার শট ভারতের গোলকিপার আনশিকা ঝাঁপিয়ে পড়ে আটকালেও বল গ্লাভসে নিতে পারেননি। দুই ডিফেন্ডারের ফাঁক গলে বেরিয়ে কোনাকোনি শট নেন তহুরা খাতুন। শটে গতি না থাকলেও ছুটছিল জালের দিকে। ছুটে গিয়ে গোললাইনের ওপর বল আটকান নির্মলা দেবী। এরপর তালুবন্দি করেন আনশিকা। এ সময় মারিয়া-মনিকারা রেফারি রয় অঞ্জনাকে ঘিরে ধরলেও গোলের বাঁশি বাজেনি।

২৫ মিনিটে আবারও গোলের সুযোগ নষ্ট হয়। থ্রো ইনে সতীর্থের কাছ থেকে ফিরতি পাস পেয়ে শট নিয়েছিলেন আনাই মোগিনি। বল গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে দূরের পোস্টে লেগে ফিরে আসে।

গোলশূন্য স্কোরলাইনের পর বিরতির পরও বাংলাদেশের দাপট চলতে থাকে। শামসুন্নাহার জুনিয়র একাই তিনটি সুযোগ নষ্ট করেন। ৪৬ মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়রের বক্সের ভেতর থেকে নেওয়া জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। পরে এই উইঙ্গারের জোরালো শট ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। ৬০ মিনিটে শাহেদা আক্তার রিপার ক্রসে শামসুন্নাহার জুনিয়রের হেড আবারও ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়।

অনেক সুযোগ নষ্টের পর ৭৯ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় বাংলাদেশ। সমর্থকরা ভাসেন উল্লাসে। শাহেদার ব্যাকহিল থেকে আনাই মোগিনির দূরপাল্লার শটে লাফিয়ে ওঠা গোলকিপারের গ্লাভস ছুঁয়ে জালে জড়িয়ে যায়।

শেষ সময়ে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করে খেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু গোলের ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি। তাতে কী, ট্রফি জেতার জন্য আনাইয়ের গোলটাই তো যথেষ্ট! তাই শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে গ্যালারিতে ওঠে আনন্দের ঢেউ। আর মাঠে মারিয়াদের উল্লাস দেখে কে! ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জয় বলে কথা!

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *