Home » সেপ্টেম্বরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সেপ্টেম্বরে খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে প্রায় দুই বছর দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। তবে অনলাইন, টেলিভিশনসহ ডিজিটাল প্লাটফর্মে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। অবশ্য এতে সন্তুষ্ট নয় শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। তারা বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানিয়ে আসছে। সংসদেও দাবি ওঠে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে দাবি জানানো হয়েছে।

তবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলতে অনাগ্রহ সরকারের। সর্বশেষ সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, টিকা প্রদান শেষে উচ্চস্তর থেকে ধাপে ধাপে নিম্নস্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে। এরই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন করে বন্ধ থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। টিকা প্রদানের পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের দিকে গেলেই সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পর্যায়ক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চায় সরকার।

ওই সূত্র আরও জানায়, প্রথমে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলে দিতে চায় সরকার। তারপরই কলেজগুলো খুলে দেওয়া হবে। তবে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের প্রতিষ্ঠান খুলতে আরও কিছু সময় নেওয়া হতে পারে। এই দুটি স্তরে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি এবং স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে তুলনামূলক কম সচেতন হওয়ায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক এই দুটি স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কিছুটা সংশয়ে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ওই সূত্র আরও জানায়, সেপ্টেম্বরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর একটি নির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের ওপর নির্ভর করবে এই নির্দেশনা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘এরমধ্যে অনেকেই ভ্যাকসিন নিয়ে নিতে পারবে হয়তো। তাতে ইউনিভার্সিটি আগে খোলা যেতে পারে। তারপরে কলেজগুলো।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী সংখ্যা কম। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানানো সম্ভব হবে হয়তো।

তিনি বলেন, ‘মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি। ফলে স্কুল খোলা নিয়ে আমাদের ভীষণ ভাবতে হচ্ছে।’

দীপু মনি বলেন, ‘আমরা যেভাবে প্ল্যান করেছিলাম সপ্তাহে একেকটা ক্লাস। সবাই একসঙ্গে আসবে না। ফলে এ রকম করা যেতে পারে। এখন তো বাচ্চারা ইফেক্টেড হচ্ছে। আমাদের তো নিচের দিকের ক্লাস সাইজ অনেক বড়। ঠাসাঠাসি অনেক বেশি। সামাজিক দূরত্ব মানানো যাবে না। স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে এখন দুশ্চিন্তাটা বেশি। আগে বাচ্চারা ইনফেক্টেড হচ্ছিল না, কিন্তু এখন হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নভেম্বর ডিসেম্বর জানুয়ারিতে করোনাভাইরাস একেবারেই কমে গিয়েছিল। যদি এরকম কমে যায় তাহলে আমরা পরীক্ষা নেওয়ার কথা ভাবছি। আমরা ডেটও ঘোষণা করে দিয়েছি। সুতরাং তখন তো আমরা স্কুলও খুলবো। যদি ওই পর্যায়ে নেমে যায়।’

মন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাকসিন মজুত আছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনেককে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে, তাই ভাবছি নিয়ন্ত্রণ পর্যায়ে নামিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’

ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতা বলেন, ‘আশা করা হচ্ছে বছরের শেষ দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। সব ঠিক থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা আছে। এরইমধ্যে অনেককে টিকাও দেওয়া সম্ভব হবে। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তারপর ধাপে ধাপে কলেজ, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে।’ শীর্ষ ওই নেতা বলেন, এ বছর পর্যায়ক্রমে সব স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হবে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *