Home » সৌদি আরব নারী আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার

সৌদি আরব নারী আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার

ডেস্ক নিউজ : সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালানো শুরু হতে যাচ্ছে যখন আগামী মাসে তখন ব্যাপক ধরপাকর শুরু হয়েছে নারী আন্দোলনকারীদের।

“ অন্তত ৫ জন নারী আন্দোলনকারী সহ ৭জনকে গ্রেফতারের পর সৌদি কর্তৃপক্ষ বলছে এদের সঙ্গে বিদেশি শক্তির সাথে সম্পর্ক ছিল। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটিতে ব্যাপক সংস্কারের কথা বলা হলেও দেশটিতে বাকস্বাধীনতা বলে কিছু নেই।

হঠাৎ করেই নারী আন্দোলনকারীদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে সে সম্পর্কে পরিস্কার কিছু বলছে না সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে মানবাধিকার কর্মীরা অভিযোগ করছে যে সৌদি নারীদের কণ্ঠ রোধ করতেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সংস্কারের অংশ হিসেবে নারীরা গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি সহ খেলার মাঠে ও সিনেমা হলে যখন প্রবেশ করতে শুরু করেছে তখন ফের এধরনের গ্রেফতার দেশটির নারীদের মধ্যে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।”

“আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন প্রভাবশালী সৌদি নারী আন্দোলনকারী লাউজাইন আল-হাতলুল এবং এমান আল-নাফজান। এরা দুজনেই সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর অধিকার নিয়ে আন্দোলন করছিলেন। আগামী ২৪শে জুন সৌদি নারীদের ওপর থেকে গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৬ সালে কানাডায় এক অনুষ্টানে আটক লাউজাইন আল-হাতলুলকে সাসেক্সের নতুন ডাচেস মেগান মার্কেলের সঙ্গে দেখা যায়। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, মিজ নাফজান এবং মিজ নুর ২০১৬ সালে সরকারের কাছে এক আবেদনে সৌদি নারীদের ওপর পুরুষদের অভিভাবকের কর্তৃত্ব বিলোপ করার দাবি জানান। ওই আবেদনে তাদের স্বাক্ষরও ছিল। এধরনের কর্তৃত্বের কারণে সৌদি নারীরা নিজের ইচ্ছেমত বিয়ে করতে পারেন না, একা একা বিদেশে যেতে পারেন না, এবং পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারেন না। পরবর্তীতে সৌদি মেয়েদের বিদেশি ছেলেদের বিয়ে করা সহ বিভিন্ন সংস্কার দেশটিতে নারীদের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করে। হাতলুলকে এ পর্যন্ত দুইবার গ্রেফতার করা হল। এর আগে ২০১৪ সালে তিনি গাড়ি চালিয়ে সৌদি সীমান্ত অতিক্রম করে আমিরাতে যেতে চেয়েছিলেন।”

“গত ১৫ মে তাদের আটক করা হয়। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সৌদি আরবে ব্যাপক সংস্কার শুরু হলেও এর বিরোধিতা করেন রক্ষণশীল আলেমরা। রয়টারকে এক সৌদি নারী আন্দোলনকারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, নারী আন্দোলনকারীদের আটক করা হচ্ছে কারণ সৌদি কর্তৃপক্ষ চান না তারা যে আন্দোলন করে গাড়ি চালানো সহ অন্যান্য সুযোগ এনে দিয়েছেন তার জন্যে প্রকাশ্যে কৃতিত্ব দাবি করুক।” এর ফলে এধরনের আরো দাবি উঠতে পারে এবং সৌদি কর্তৃপক্ষ তা মানতে বাধ্য হতে পারে বলে ভয় পাচ্ছে। এবং এধরনের ভয় থেকেই সৌদিতে বিভিন্ন ধরনের নারী পুরুষকে আটক ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে।!

“একই সঙ্গে সৌদি নামাজের সময় দোকানপাট বাধ্যতামূলক বন্ধ রাখা, ধর্মীয় পুলিশের কড়াকড়ি অনেক শিথিল করা হয়েছে। তবে এর আগে যেসব নারী গাড়ি চালানোর অধিকার আদায়ের আন্দোলনে জড়িত ছিলেন তাদের মধ্যে অন্তত দুই ডজন নারীকে প্রকাশে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য না দেওয়ার জন্যে সৌদি কর্তৃপক্ষ টেলিফোনে নির্দেশ দেয়।”

“ ইতিমধ্যে বিভিন্ন সংস্কারের ফলে রক্ষণশীলদের মধ্যে যে ক্ষোভ জমা হয়েছে তা প্রশমনের জন্যে এধরনের গ্রেফতার অভিযান তাদের মধ্যে এক ধরনের সন্তষ্টি এনে দেবে মনে করছেন সৌদি বিশ্লেষকরা। কিন্তু আটকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও আনেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ।” মিডিল ইস্ট মনিটর

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *