Main Menu

মুসলিম প্রমাণে সাংবাদিককে আটকে কালেমা পাঠ করায় হেফাজত , হিন্দু হলে তো রেহাই নেই

হেফাজতে ইসলামের ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহে গিয়ে দৈনিক সংবাদের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সৌরভ হোসেন সিয়াম লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সিয়ামের অভিযোগ, সৌরভ নাম বলায় হেফাজত কর্মীরা তাকে মারধরের পর চার কালেমা পাঠ করিয়ে মুসলিম ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করে।

রোববার রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে এসব অভিযোগ করেছেন সিয়াম। তিনি একইসঙ্গে প্রথম আলো বন্ধুসভা নারায়ণগঞ্জের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক।

প্রথম আলো’র নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা গোলাম রাব্বানী শিমুল বলেন, ‘সৌরভের সঙ্গে আজ এ ঘটনা ঘটেছে। এখন সে অসুস্থ অবস্থায় বাসায় আছে।’

সিয়াম ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘রোববার দিনভর সংবাদকর্মীদের প্রতি হিংস্রতা দেখিয়েছে হেফাজতের হরতালে থাকা পিকেটাররা। হেফাজতের হামলার শিকার আমি সৌরভ হোসেন সিয়াম নিজে। তাদের কাছে আমার পরিচয় নিশ্চিত করতে হয়েছে। চার কালেমার দুই কালেমা মুখস্থ বলতে হয়েছে। কয়টা সুরা মুখস্থ তা জানাতে হয়েছে। নামের একটা অংশে সিয়াম (তাদের মতে সৌরভ হিন্দুয়ানী নাম) থাকাতে তাদের স্বস্তি হয়েছে… বিশ থেকে বাইশ মিনিট একটা গাছ কাটার করাত কলে অবরুদ্ধ ছিলাম। চারদিকে ঘিরে ছিল দাড়ি-টুপিওয়ালা তৌহিদি জনতা (হ্যাঁ, আমি তাদেরকে এভাবেই চিহ্নিত করতে চাই) প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরতে পেরেছি এটাই অনেক।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘শরীরে ভয়ানক ব্যথা নিয়ে বিছানায় পড়ে আছি। পাশেই কোনো এক মাহফিল থেকে বলছে, ইসলাম শান্তির ধর্ম। হ্যাঁ, বোধ হওয়ার পর থেকে এমনটাই শুনে আসছি। তাহলে দুপুরে নারায়ে তাকবীর বলে যারা আমাকে পেটাল তারা কি শান্তির বার্তাবাহক!’

সিয়াম বলেন, ‘দুপুরে মাদানীনগর মাদ্রাসার সামনে হেফাজত কর্মীরা যখন বিক্ষোভ করছিলেন, তখন আমি ভিডিওধারণ করতে থাকলে তারা আমাকে ধরে মারধর শুরু করেন। সেসময় তারা আমার নাম জিজ্ঞেস করলে আমি সংক্ষেপে শুধু ডাক নাম “সৌরভ” বলি। এতেই তারা আমাকে হিন্দু মনে করে ব্যাপক মারধর করেন। কালেমা পাঠ করার পরও ২০ মিনিট আমাকে আটকে রাখেন। অন্য সাংবাদিকরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ কিনেছি। গায়ে এখন জ্বর আছে।’

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি সিয়াম।

উল্লেখ্য, রোববার ভোর ৬টা থেকে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা মহাসড়কের শিমরাইল, সানারপাড় এলাকায় গাছের গুড়ি ফেলে, বালুর বস্তা রেখে, টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ও লাঠিসোটা নিয়ে অবরোধ করে রাখেন। এসময় কয়েকটি ট্রাক চলাচল করতে চাইলে হরতাল সমর্থনকারীরা ঢিল ছুঁড়ে ট্রাকের গ্লাস ভাঙচুর করেন।

র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও সাধারণ পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েকবার মহাসড়ক থেকে হেফাজত কর্মীদের সরিয়ে দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। সকাল ১১টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় শাকিল (৩২) নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন।

এরপর থেকে দফায় দফায় হেফাজত ইসলামের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলে। এসময় পুলিশকে টিয়ারসেলসহ গুলি ছুড়তে দেখা যায়। রাতেও থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল।

সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার

Leave a comment



« (এর পরের খবর)



এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.