Main Menu

সিলেটজুড়ে বজ্রপাত আতঙ্ক

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোর:

বাংলাদেশে আবহাওয়াকেন্দ্রীক দ্বিতীয় বৃহত্তম ঘাতক হচ্ছে বজ্রপাত। প্রতি বছর বজ্রপাতে প্রাণ যায় অসংখ্য মানুষের। দেশে সবচেয়ে বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা হচ্ছে সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলা। এছাড়া বজ্রপাত বেশি হয়, এমন স্থানের মধ্যে রয়েছে হবিগঞ্জ জেলাও। প্রতি বছর ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম এলেই শুরু হয় বজ্রপাতের তাণ্ডব। এবারও মৌসুমের শুরু থেকেই বজ্রপাতে ঘটছে একের পর এক প্রাণহানি। আর এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সিলেটজুড়ে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে দুটি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে ‘প্রাইমারি সামার’। এপ্রিল ও মে মাসজুড়ে এই মৌসুমের বিস্তৃতি। এ সময়ে আকাশে ভার্টিক্যাল ক্লাউড বা সম্ভু মেঘ থাকে বলে ঘন ঘন কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাত হয়। গত কয়েকদিনে সিলেট জুড়ে বজ্রপাতে অন্তত ত্রিশের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। বুধবার (৯ মে) একদিনেই হবিগঞ্জ জেলায় ৬ জন, সুনামগঞ্জে ২ জন এবং সিলেটে একজনের মৃত্যু হয়েছে। গেল সোমবার (৭ মে) হবিগঞ্জ জেলায় ২ জন, মৌলভীবাজারে ২ জন এবং সুনামগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে। পরদিন মঙ্গলবার (৮ মে) বজ্রপাত কেড়ে নেয় ৬ জনের প্রাণ। অর্থাৎ, মাত্র তিনদিনেই সিলেটজুড়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেছে ২০ জনের। কেন এতো বজ্রপাত, এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলছিলেন, ‘পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা, জলবায়ুর পরিবর্তন এসব কারণে মেঘের মধ্যে তড়িত প্রবাহিতা বৃদ্ধি পায়। যে কারণে বজ্রপাতের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ হাওরাঞ্চলে অত্যধিক বজ্রপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিবাহী অনেক উপাদান যেমন-গাছ, বাড়িঘর এসব থাকে। বজ্রপাতের সময় এসবের মধ্যে তড়িৎ প্রবাহ ছড়িয়ে যাওয়ায় জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা কম হয়ে থাকে। তবে হাওরাঞ্চলে খোলা আকাশের নিচে বিদ্যুৎ পরিবাহী কোনো উপাদান না বজ্রপাত সরাসরি মানুষকে আঘাত করে।’ সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই সপ্তাহে সিলেটে বজ্রপাত বেশি হবে। সিলেট অঞ্চলে বজ্রপাত বাড়ছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এমনটা হতে পারে।’
এদিকে, গেল বছর সিলেটসহ সারাদেশে বজ্রপাত প্রতিরোধে তালগাছ বপন করা হয়। তবে এখন শোনা যাচ্ছে, সেগুলো তালগাছ ছিল না, ছিল তালের আঁটি। এসব আঁটি থেকে গাছ হতে অনেক সময় লাগবে। তবে, বজ্রপাতের আগাম সংকেত পেতে সিলেটসহ দেশের আটটি স্থানে বসানো হয়েছে ‘লাইটেনিং ডিটেকটিভ সেন্সর’। প্রতিটি সেন্সরের রেঞ্জ আড়াই শ’ কিলোমিটার। এসব সেন্সরের মাধ্যমে বজ্রপাত সম্পর্কে আগাত তথ্য জানা যাবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। অবশ্য, বর্তমানে এ প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে চলছে। অ্যান্ড্রয়েড ফোনে ‘বিএমডি ওয়েদার’ নামক অ্যাপ ইনস্টল করে এ সম্পর্কে আগাম তথ্য জানা যাবে। এছাড়াও, বজ্রপাতের পূর্বাভাস পেতে সিলেট বিমানবন্দর এলাকায় একটি শক্তিশালী রাডার স্টেশন বসানোর প্রক্রিয়া চলছে। একইসাথে সিলেট বিভাগের ১৮টি উপজেলায় স্থাপন করা হচ্ছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার। বর্তমানে বজ্রপাতপ্রবণ উপজেলা চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.