1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
সাহেদের যত প্রতারণা
       
বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ১১:২৭ অপরাহ্ন

সাহেদের যত প্রতারণা

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

প্রতারণা শব্দটির প্রতিটি চরিত্রই বিদ্যমান রয়েছে গ্রেফতার রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের মধ্যে। প্রতারণা করতে এমন কোনো শাখা বা সেক্টর বাকি রাখেনি সাহেদ। তার বিচরণ ছিল প্রতারণার প্রতিটি স্তরেই। সর্বশেষ বোরকা ব্যবহার করে সাতক্ষীরা সীমান্ত এলাকা দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে নিজের গ্রেফতার এড়াতে পারেনি ‘মহাপ্রতারক’ সাহেদ করিম।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গণমাধ্যমকে বলছেন, রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ‘মহাপ্রতারক’। সব সেক্টরেই তার প্রতারণা রয়েছে। এছাড়াও সাহেদ ঠগবাজি ও মিথ্যাচারেও অন্যতম। দেশে মহামারি করোনাকালে যে চিকিৎসাসেবা নিয়ে প্রতারণা করতে পারেন সে নিজের স্বার্থের জন্য সব করতে পারেন। তার এমন প্রতারণার কারণে আর্ন্তজাতিক অঙ্গণেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, সাহেদ করিম একজন উঁচুমানের প্রতারক। সে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে ছদ্মবেশ ধারণ করে আত্মগোপণের চেষ্টা করছিলেন। তার বাড়ি সাতক্ষীরা হলেও তিনি বাড়ি না গিয়ে বিভিন্ন গাড়ি পরিবর্তন করে আশপাশে ঘুরছিলেন। অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী দেশে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টায় ছিল। সাহেদকে গ্রেফতারের জন্য আগে থেকেই সীমান্ত এলাকাগুলোতে র‌্যাবের নজরদারি ছিল। ভোরে তার অবস্থান নিশ্চিত হলেই আমরা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

রিজেন্ট গ্রুপ ও ঢাকা রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদ করিম ওরফে সাহেদের গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা শহরের পলাশপোলে। ১৯৯৮ সালে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণিতে পড়তেন। এরপর সাহেদ ঢাকায় চলে আসেন। মোহাম্মদপুরে তার দাদার বাসায় থাকতেন তিনি। পিলখানায় রাইফেলস স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর আর লেখাপড়া করেননি।

সাহেদের বাবার নাম সিরাজুল করিম। মা সাফিয়া করিম ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সাহেদ করিমের ঠগবাজি, প্রতারণা, মিথ্যাচার এবং নানা অপকর্মে অতিষ্ঠ ছিলেন তার মা। ২০১০ সালে হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে সাহেদ করিমের মা মারা যান। এরপরই অন্যায় থেকে সরে আসেনি সাহেদ, নানা প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক বছরেই কোটি টাকার মালিক বনে যান।

সাহেদে যত প্রতারণা :
বিএনপির নেতা পরিচয়ে ২০০৭ সালে রিজেন্ট হাসপাতালের অনুমোদন নেন সাহেদ করিম। তবে ওই সময় হাসপাতাল করেননি। ক্লিনিক চালাতেন। সরকার পরিবর্তনের পর তিনি আবার ভোল পাল্টে আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। গত পাঁচ বছর ধরে সেন্টার ফর পলিটিক্যাল রিসার্চ (রাজনীতি গবেষণা কেন্দ্র) নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালাতেন সাহেদ। নিজেকে কথিত বুদ্ধিজীবী বা রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচয় দিতেন।

এমএলএম ব্যবসা প্রতারণা :
২০০৯ সালের জুলাই মাসে প্রতারণার মামলায় সাহেদ গ্রেফতার হয়েছিল। তখন কয়েক মাস জেল খেটেছেন তিনি। তবে প্রতারণা থামেনি, বরং মাত্রা বেড়ে যায়। ২০১০ সালের দিকে সাহেদ ধানমন্ডি এলাকায় বিডিএস কিক ওয়ান এবং কর্মমুখী কর্মসংস্থান সোসাইটি (কেকেএস) নামে দুটি এমএলএম কোম্পানি খুলেন। ২০১১ সালে শত শত গ্রাহকদের কাছ থেকে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সাহেদ করিম। প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে গা ঢাকা দেন প্রতারক সাহেদ। ওই সময় এমএলএম কোম্পানির সব গ্রাহক তাকে মেজর ইফতেখার করিম নামে জানতেন। এরপর ‘বিডিএস কুরিয়ার সার্ভিসে’ চাকরির নামে অনেক আবেদনকারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক। ২০১১ সালে তাকে প্রতারণা মামলায় আবারও গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে টাকার বিনিময় দ্রুত জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। এরপর এমএলএম প্রতারণায় আত্মসাৎ করা টাকা দিয়ে রিজেন্ট গ্রুপের নামে ব্যবসা শুরু করেন। চালু করেন ঢাকা রিজেন্ট হাসপাতাল।

বাটপারিতে সাহেদ পটুতা :
নিজের বিএনপির নেতা পরিচয়ে হাওয়া ভবনে নিয়মিত যাতায়াত ছিল সাহেদের। এরপর সরকার পরিবর্তন হলে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় ব্যবহার করেন তিনি। এছাড়াও তিনি নিজেকে কখনও অবসরপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, কখনও গোয়েন্দা সংস্থার ঘনিষ্ঠ, আবার কখনও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সংশ্লিষ্ট বলে পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন। ‘নতুন কাগজ’ নামে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকা খুলে এবং নিজেকে মিডিয়া ব্যক্তিত্ব জাহির করে অর্থের বিনিময়ে টক শো’তে অংশ নিতেন সাহেদ। এরপর থেকে নিজেকে বড় সাংবাদিক বলে পরিচয়ও দিতেন অনেকের কাছে। কৌশলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তুলতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্পন্সর করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতেন। এরপর তার হাসপাতাল, অফিস, ও বাসার দেয়ালে সরকারের ক্ষমতাধর ব্যক্তি বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তোলা ছবি বাঁধাই করে টাঙিয়ে রাখতেন। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তোলা ছবিকে পুঁজি করেই রিজেন্ট গ্রুপের মালিক সাহেদ অপকর্ম করে বেড়াতেন।

প্রতারণার মামলা :
রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি, উল্টরাসহ বিভিন্ন থানায় ৩২টি মামলা রয়েছে। মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেড থেকে ছয় কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার নথিতে নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত লেফট্যানেন্ট কর্নেল মুহাম্মদ শহীদ বলে পরিচয় লেখা রয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে দুটি মামলা রয়েছে, যা এখনও চলমান। ব্যাংকিং সেক্টরেও তার প্রতারণার চাল ছিল। কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এখন পর্যন্ত একটি টাকাও পরিশোধ করেননি এই প্রতারক। সারাদেশ প্রতারক সাহেদের নামে অন্তত অর্ধশত মামলা রয়েছে।

জনমানুষের সঙ্গে প্রতারণা :
বিনামূল্যে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষার অনুমোদন নিয়ে প্রতিবার নমুনা সংগ্রহের জন্য নেওয়া হতো সাড়ে ৩ হাজার টাকা। রিজেন্ট হাসপাতাল থেকে ১০ হাজারের বেশি করোনাভাইরাস (কোভিট-১৯) পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া হয়। হাসপাতালটি স্বাস্থ্য অধিদফতরে সঙ্গে চুক্তি করেছিল যে করোনা আক্রান্ত রোগীদের ফ্রি-তে চিকিৎসা দেবে। এভাবেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে উত্তরা ও মিরপুরের রিজেন্ট হাসপাতাল। এছাড়াও উত্তরায় রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে অসংখ্য অনুমোদনহীন কোভিড-১৯ টেস্টিং কিট পায় র‌্যাব। এভাবে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে মোট ৩ কোটি টাকা হাতিয়েছে রিজেন্ট গ্রুপের মালিক সাহেদ। এছাড়াও ২০১৪ সালের পর থেকে রিজেন্ট হাসপাতলের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।

গত ৬ জুলাই (সোমবার) নানা অনিয়ম, প্রতারণা, সরকারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ ও করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট ও সার্টিফিকেট দেওয়া ও রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের দুটি হাসপাতালে অভিযান চালায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম। অভিযানে গিয়ে প্রতারণার সত্যতা মেলে, সেসঙ্গে পাওয়া যায় গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য। পরদিন ৭ জুলাই (মঙ্গলবার) রিজেন্ট গ্রুপের মূল কার্যালয় এবং রাজধানীর উত্তরা ও মিরপুরের দুটি হাসপাতাল সিলগালা করে দেওয়া হয়। হাসপাতালটি প্রতারণা করে ১০ হাজারেরও বেশি করোনা পরীক্ষার সার্টিফিকেট দিয়েছে। অভিযানের সময় রিজেন্ট হাসপাতালের পরিচালক ও ব্যবস্থাপকসহ আট জন কর্মীকে আটক করে র‌্যাব। আটক কর্মীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ৯ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম শিবলীকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর সর্বশেষ বুধবার (১৫ জুলাই) ভোরে র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর সীমান্ত এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

সূত্র: বিডি-প্রতিদিন

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.