Main Menu

করোনা উদ্বেগে ঘুমের সমস্যা: পাঁচ করণীয়

বৈশ্বিক করোনার প্রভাবে আমাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে। যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে আমাদের প্রাত্যহিক কাজে, বিশ্রামে এবং সর্বোপরি আমাদের ঘুমে। কারও ঘুমের চক্র পুরোপুরি বদলে গেছে, আবার কেউবা মানসম্মত ও প্রয়োজনীয় ঘুম ঘুমাতে পারছেন না। এসময়ে এটা অস্বাভাবিকও না। তবে কয়েকটি করণীয় আপনাকে চাহিদামাফিক ঘুমে সহায়তা করবে।

যতটা সম্ভব কম সংবাদ শুনুন
সংবাদের বিভিন্ন মাধ্যমে আপনি কোনও কিছুর সর্বশেষ তথ্য পাবেন, আপনার সে বিষয় সম্পর্কে এক ধরনের সচেতনতা তৈরি হবে, এটাই কাম্য। আবার কোনও কোনও সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একই সংবাদ আপনি বারবার ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে শুনতে বা দেখতে চাইবেন, তাও কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হিসেবে ধরে নেওয়া যেতে পারে। তবে সারাদিনের বেশ খানিকটা সময় আপনি একই সংবাদ বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শুনছেন বা দেখছেন, তা এক ধরনের আসক্তি। কোনও এক ধরনের সংবাদের প্রতি, আবার তা যদি হয় জীবন সংহারি, তবে সে আসক্তি আপনার মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করবে। বর্তমান সময়ে করোনা মহামারি তেমনই একটি সংবাদ। আমরা অনেকেই প্রতিদিন বারবার শুনছি, কোথায় কত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে। আমরা একই সংবাদ যেমন ভিন্ন ভিন্ন চ্যানেলে দেখছি, সেই একই সংবাদ পড়ছি ছাপার মাধ্যমে এবং দেখছি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের ভিন্ন ভিন্ন নিউজ ফিডে। যতদূর স্ক্রল করা যায় একইসংবাদ ভিন্ন ভিন্ন উপস্থাপনায়। আমরা সবই দেখছি, পড়ছি এবং নিজেকে নিজের অলক্ষে সম্পৃক্ত করছি। এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর। আমাদের উদ্বেগ বাড়ছে, বাড়ছে নিদ্রাহীনতা। কাজেই ভালো হয়, আপনি সকাল কিংবা বিকেলের কোনও একটি সময়ে ৩০ মিনিট বা তারচেয়ে কম সময়ের জন্য সংবাদ দেখুন কিংবা শুনুন নিজেকে আপডেট রাখার জন্য। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে সকালের সময়টা অধিক ভালো। আরও ভালো হয়, খারাপ সংবাদ থেকে যতটা পারুন দুরে থাকুন। উদ্বেগ কমানোর জন্য আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ‘নিউজ এলার্ট’ আপাতত নিষ্ক্রিয় বা ডিসআ্যবল এবং ‘নিউজ ফিড’ সাইলেন্স মুডে রাখুন। এতে প্যানিক হওয়া থেকে দূরে থাকবেন, দুশ্চিন্তা কম হবে এবং ভালো ঘুম হবে।

ঘুমাতে যাওয়ার এবং ওঠার নির্দিষ্ট সময় মেনে চলুন
লকডাউনের কারণে আপনি হয়তো বাসায় বসেই অফিস করছেন। বাচ্চারা হয়তো বাসায় ক্লাস করছে, খেলছে। হয়তো আপনার পুরো রুটিন বদলে গেছে এই মহা সংকটে। তারপরও নিজের মতো একটা রুটিন তৈরি করে নিতে হবে। সে অনুযায়ী সপ্তাহের প্রতিদিনই একই সময়ে ঘুমাতে যাবেন এবং চেষ্টা করবেন একই সময়ে ঘুম থেকে জেগে উঠতে। এটি কিছুটা হলেও চাপ কমাবে।

প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করুন
দিনের পর দিন ঘরে আবদ্ধ থাকা সত্যিই কঠিন। চেষ্টা করুন রুমে যতটা বেশি সম্ভব প্রাকৃতিক আলো বা সূর্যের আলো প্রবেশ করাতে। দরকার হলে সব জানালা খুলে রাখুন কিংবা সব শেড খুলে ফেলুন। কারণ উচ্চমানের দিবালোক বা ডে-লাইট মানুষকে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে এবং মানসম্পন্ন ঘুমে সহায়তা করে।

নিয়মিত শারীরিক শ্রম বা ব্যায়াম জরুরি
যেহেতু আপনি বাসায়, জিম বন্ধ। সেহেতু আপনি নিয়মিত কায়িক শ্রম বা এক্সারসাইজ  করতে পারছেন না। একারণেই আপনার উদ্বেগ বাড়তে পারে এবং ঘুমের ব্যাঘাতঘটতে পারে। কারণ শারীরিক শ্রম বা এক্সারসাইজ মস্তিস্ক থেকে এন্ডোর্ফিন নিঃসরণ ঘটায়, যাউদ্বেগ কমাতে ও ভালো ঘুমে সহায়তা করে।কাজেই যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন, প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়মিত শারীরিক শ্রম বা এক্সারসাইজ করুন। সেটা হতে পারে ছাদে, গ্যারেজে বা বাসায় হাঁটা, চিৎ হয়ে শুয়ে সাইকেলের মতো করে চালানো কিংবা বাসার মধ্যে ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ।

বিছানা শুধু ঘুমের জন্যই ব্যবহার করুন
অনেকেই আছেন বিছানায় শুয়ে অফিস করেন, টিভি দেখেন কিংবা মানসিক চাপ সম্বলিত নানা বিষয় নিয়ে ভাবেন এবং মনে করেন যখন ঘুম আসবে তখন এমনিতেই ঘুমিয়ে পড়বেন। এটা মোটেও বিজ্ঞানসম্মত নয়। বিছানা শুধু ঘুমের জন্য ব্যবহার করুন। ঘুমের সময় না হলে কিংবা একান্তই ঘুম না আসলে বিছানা ছাড়ুন এবং অন্যত্র গিয়ে ঐ কাজগুলো করুন। ঘুম আসলেই কেবল বিছানায় যাবেন।
সামগ্রিক শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য প্রতিদিন অন্তত ৬-৭ ঘন্টা ঘুমান। এতে অটুট থাকবে আপনার নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। করোনা নামক ঘাতকের বিরুদ্ধে ঠিক এই মুহূর্তে লড়াইয়ের একমাত্র হাতিয়ার আপনারই তৈরি করা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। করোনা যদি হয়েই যায়, তবে যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত ভালো, সে তত ভালো লড়াই করবে এই ঘাতকের বিরুদ্ধে।

Leave a comment



« (এর পরের খবর)



এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.