1. abusufian7389@gmail.com : .com : sk .com
  2. ashfakur85@gmail.com : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. b.c.s.bipro@gmail.com : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. zihad0292@gmail.com : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. ahmedmdmahfuz@gmail.com : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. nazimahmed2042@gmail.com : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. shahadotchadni@gmail.com : Md Sh : Md Sh
  8. ashfakur86@gmail.com : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. shuddhobarta24@gmail.com : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. surveyor.rasid@gmail.com : Abdur Rasid : Abdur Rasid
নিউইয়র্কে এক বাংলাদেশী কিশোরীর হৃদয়বিদারক আকুতি..        
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০১:০৬ পূর্বাহ্ন

নিউইয়র্কে এক বাংলাদেশী কিশোরীর হৃদয়বিদারক আকুতি..

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০২০

আমি যুঁথি। আমার বয়স ১৪। আমার একটা ছোট ভাই আছে ওর নাম তমাল বয়স ১২। আমাদের জন্ম নিউইয়র্কে। আমার আব্বু আম্মু দুজনেই চাকরি করেন। এখানে আমাদের চারজনের সংসার।অনেক পরিচিত জনও আছেন এখানে। আব্বু আম্মু দুজনেই বাংলাদেশী।আত্মীয় স্বজন দাদা দাদী নানা নানি সবাই দেশেই থাকেন। আমরা এখানে একটা স্কুলে পড়াশোনা করি।আমাদের খুব সুখের একটা সংসার। তবে কিছুদিন হলো আমরা স্কুলে যাচ্ছি না।কারণ চারিদিকে করোনার আতঙ্ক আর শহরটা লকডাউন। লক ডাউন কী আমি আসলে এত কিছু বুঝি না। তবে আমরা সবাই এখন বাসায় থাকি এখন এটা আমাদের জন্য খুব আনন্দদায়ক।এভাবে হেসে খেলে ১৫ দিন চলে গেল। পড়াশোনার চাপ নেই। সারদিন খেলা আর আম্মুর কাছে যা খেতে চাই তাই ই আম্মু বানিয়ে দিচ্ছে। খুব আনন্দে কাটছে দিনগুলো। মাঝে মাঝে আম্মু সতর্কতার সাথে থাকার জন্য সবাইকে বার বার হাত ধুতে বলছে আর আমরা ধুয়ে নিচ্ছি। আব্বু বাইরে গেলে মাস্ক গ্লাভস পড়ে যাচ্ছে আবার আসার পর গোসল করে নিচ্ছে। এভাবে নানা সাবধানতার মধ্যে একটু ভয়ে তবে সুখেই কাটছে দিনগুলো।

গত দুদিন ধরে আম্মুর একটু ঠান্ডা লেগেছে। হাঁচি-কাশি সাথে একটু জ্বর ও আছে। এই নিয়েই আম্মু সব কাজকর্ম করে যাচ্ছে। আব্বু বলছে ভয়ের কিছু নেই এত সাবধানে থাকছি আমরা তোমার মনেহয় সাধারণ ফ্লু।প্যারসিটামল খাও ঠিক হয়ে যাবে। আম্মু প্যারাসিটামল খেল।একটু ভালো বোধ করছিল সে।কিন্তু পরের দিন তার জ্বর আরও বেড়ে গেল। আব্বু ফোনে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বললো। ডাক্তার শুনে হসপিটালে নিয়ে যেতে বললো। সেখানে নাকি টেস্ট করবে।

আব্বু আম্মুকে নিয়ে এলমহাস্ট হসপিটালে গেল।আমরা দুই ভাই বোন বাসায়। যাওয়ার সময় আব্বু বললো, সাবধানে থেক, কোনরকম দুষ্টুমি করবে না।আর কিচেনের কাছে যাবে না। খাবার টেবিলে রাখা আছে। আমাদের আসতে দেরি হলে তোমরা খেয়ে নিও।এই বলে আব্বু বের আম্মুকে নিয়ে বের হলো দুপুর বারোটার দিকে। এরপর বিকেল হয়ে যায় তারা আসে না। দুটার দিকে আব্বু ফোন দিয়ছিল।বললো, তোমরা খেয়েছো?
আমি বললাম হ্যা।
আচ্ছা তোমরা দুষ্টুমি কোর না, টিভি দেখ।তোমার আম্মুকে হসপিটালে ভর্তি করেছি তার টেস্টের রিপোর্ট এখনো আসেনি।আগামীকাল দিবে। আজ আমাকে এখানে তোমাদের আম্মুর কাছে থাকতে হবে। তোমরা খাবার প্লেট ধুয়ে গুছিয়ে রাখ।আর রাতে নিজেরা খেয়ে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আমাকে কল দিও।
আমি বললাম, আব্বু আমরা একা একা থাকব?
আমাদের খুব ভয় লাগবে তো।
আব্বু বললো,ভয়ের কিছু নেই মামুনি।এখন বড় হয়েছ না।তমালকে নিয়ে একটু খেলা কোরো।ওকেও বুঝিয়ে রেখো।বুঝতে পারছো না তোমাদের আম্মু অসুস্থ। এখন একটু শক্ত হতে হবে মা।ভয় পেলে চলবে?
ঠিক আছে আব্বু, আমরা থাকতে পারব। তুমি আম্মুকে ট্রিটমেন্ট দিয়ে সুস্থ করে নিয়ে আসো।

এই প্রথম মনে হলো আমি আসলেই অনেক বড়ো হয়ে গেছি।আমারও অনেক দায়িত্ব কর্তব্য আছে। আমার দায়িত্ব হলো আমার ছোট ভাইকে সামলে রাখা। সে যেন কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা। এছাড়া বাসাটা গুছিয়ে রাখতে বলেছে আব্বু। আমরা ভাই বোন মিলে গুছিয়ে ফেললাম। ভাই কে বললাম আজ আমরা দুজন এক বিছানায় ঘুমাবো মজা হবে না?
ভাই বললো,আম্মু আব্বুকে ছাড়া কিভাবে থাকব আপু?যদি ভুত আসে।
আমি আছি না।ভুত আসবে না। বুঝতে পারছো না আম্মু অসুস্থ। সুস্থ হলেই চলে আসবে।

রাতে বাবাকে ভিডিও কল দিলাম।
আব্বু বললো, এইতো গুড, ঘুমিয়ে গেলেই দেখবে সকাল হয়ে গেছে। আগামীকাল রিপোর্ট পেলেই আমরা পেলেই আমরা চলে আসবো। তবে তোমার আম্মুর জ্বর একটু বেড়েছে।
আচ্ছা আব্বু গুড নাইট।

পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে কৌটাতে বিস্কুট ছিল দুই ভাই বোন তাই খেলাম।কিছুক্ষণ পরে ম্যাকডোনাল্ড থেকে আমাদের নাস্তা আার লাঞ্চ দিয়ে গেল। আব্বু নাকি অর্ডার করেছে।আমরা খুব মজা করে খেলাম।

দুপুরে আব্বু বললো, মা যুথি তুমি তো এখন বড় হয়েছ। বুঝতে পার।তোমাকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে মা।তোমার ভাইকে আরও কিছু দিন দেখে রাখতে হবে।তোমার আম্মু আমি দুজনেই করোনায় আক্রান্ত। তোমার আম্মুর জ্বর বেড়েছে একটু শ্বাস কষ্ট ও হচ্ছে। তোমাদের কয়েক দিন একা একা থাকতে হবে পারবে না মা।
আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। চোখ থেকে পানি পড়তে লাগলো। বললাম, পারবো আব্বু তুমি কোন চিন্তা করো না।

নিউইয়র্কে আমাদের কোন আত্মীয় নেই। পরিচিত যারা আছে তারাও কেউ আসছে না। আমরা একারাই এভাবে থাকতে লাগলাম। পরের দিন আব্বু ফোনে বললো যুথি বেশি করে নামাজ পড়ো আল্লাহর কাছে দোয়া কর তোমাদের আম্মুকে ICUতে রাখা হয়েছে। এই বলে আব্বু কেঁদে ফেললেন। আমি ও চোখের পানি আর রাখতে পারিনি সাথে তমালও কান্না করতে লাগলো।
আমি বললাম তুমি কেমন আছ আব্বু।
আমি ভালো আছি মা।তোমার আম্মুর জন্য বেশি বেশি দোয়া কর।
এরপর আমরা প্রতিদিন নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকি।

দুদিন পরে একজন নার্স এসে আমাদের কাছে একঘন্টা থেকে গেল। আমাদের অনেক ভালো ভালো কথা বলে অনেক কিছু বুঝিয়ে গেছে। আমরা ছোট বলে হসপিটাল থেকে দেখতে এসেছে। নার্স বলেছে আম্মু সাত তলায় আর আব্বু আটতলায় আছে। কারো সাথে দেখা হচ্ছে না।

এভাবে আটদিন চলে গেল। আমরা একাএকা থাকছি।উবার ইটস অথবা ম্যাকডোনাল্ডের খাবার খাচ্ছি। এখন আর এসব খাবার খেতে ভালো লাগছে না। তবুও খাচ্ছি। দুই তিন দিন পর পর নার্স এসে দেখে যাচ্ছে। আটতম দিনে সোস্যাল মিডিয়া থেকে আমাদের নিতে এসেছিল আমরা যাইনি।আব্বু ফোনে তাদের বুঝিয়ে বললে তারা চলে যায়।

আজ নবম দিন। আব্বু বলেছে সে এখন ভালো আছে আজ বাসায় আসবে। রাতে আব্বু বাসায় আসে।তমাল দৌড়ে আব্বুকে ধরতে গেলে আব্বু দূরে সরে গেল। বললো সে এখন কয়েক দিন আলাদা থাকবে আমরা তাকে ধরতে পারব না।

আব্বুকে ধরতে না পারলেও আমরা খুব খুশি। কারণ আব্বু আমাদের কাছে আছে। আব্বুকে আম্মুর কথা জিজ্ঞেস করলাম।আব্বু আশার কথা শুনালো।

বললো,মা,তোমার আম্মু ও হয়তো ফিরে আসবেন। তার অবস্থা ও আগের থেকে ভালো। সাতদিন পর গতকাল তার অক্সিজেন খুলেছে। আমার সাথে একবার একমিনিট কথা হয়েছে। হয়তো দুই তিন দিন পর সেও ফিরে আসবে। আল্লাহ তোমাদের দোয়া কবুল করেছে মামনী। আমরা সবাই আবার আগের মতই ভালো থাকবো।

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.