Home » সিলেট বিশ্বনাথে হামলা-পাল্টা হামলা দোকান ও গাড়ী ভাংচুর : আহত ৫

সিলেট বিশ্বনাথে হামলা-পাল্টা হামলা দোকান ও গাড়ী ভাংচুর : আহত ৫

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা সদরের নতুন বাজার এলাকার ঈসমাইল মার্কেটস্থ (মাদ্রাসা মার্কেট) রাখি ট্রেডার্সের সামনে পাকিং করা প্রাইভেট কার সরানোর কথা বলায় ব্যবসায়ীর উপর ‘মেজর-ডাক্তার-উকিল’ পরিচয় প্রদানকারীরা হামলা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনায় উত্তেজিত হয় স্থানীয় জনতাও পাল্টা হামলা করেন। বুধবার সন্ধ্যা রাতে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় উভয় পক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।


‘মেজর-ডাক্তার-উকিল’র হামলায় গুরুত্বর আহত হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রাখি ট্রেডার্সের মালিক বিভাষ পাল। আহত অন্যান্যরা হলেন- রাখি ট্রেডার্সের কর্মচারী দিপুল দেব, পার্শ্ববর্তী আনিকা এন্ড জুয়েল কনফেকশনারীর মালিক মাসুক মিয়া এবং পাল্টা হামলায় আহত হয়েছেন মেজর পরিচয় দানকারী সৈয়দ এনামুল হাসান কামাল ও তার ভাগ্না শাহ আমিনুল ইসলাম।


হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় রাখি ট্রেডার্স ও আনিকা এন্ড জুয়েল কনফেকশনারীতে ভাংচুর ও লুটপাট এবং ‘মেজর-ডাক্তার-উকিল’ ব্যবহৃত প্রাইভেট কার (ঢাকামেট্টো-গ ২৯-৮৯১৫) ভাংচুর করা হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এসময় ভাংচুরকৃত ‘মেজর-ডাক্তার-উকিল’ ব্যবহৃত প্রাইভেট কার ও মেজর সৈয়দ এনামুল হাসান কামাল, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন হাসান, ডাঃ জহিরুল ইসলাম, শিক্ষার্থী সৈয়দ ইব্রাহিম হাসান নাঈমসহ তাদের সাথে থাকা লোকজনকে থানা নিয়ে আসে পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীর পরিবার থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলেও বিষয়টি আপোষ-মিমাংশা নিষ্পত্তি করার জন্য এলাকার মুরব্বীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা রাতে সিলেট থেকে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বিশ্বনাথে আসেন সৈয়দ এনামুল হাসান কামাল। একজন পীরের কাছ থেকে দোয়া নেওয়ার জন্য তারা তাদের ব্যক্তিগত প্রাইভেটকারটি রাখি ট্রেডার্সের সামনে রাখেন। এসময় দোকান কর্মচারী দিপুল দেব তাকে (এনামুল) বলে ট্রাকে করে আমাদের দোকানের মালামাল আসতেছে আপনি গাড়িটি এখান থেকে সরিয়ে অন্যত্র রাখুন। এনিয়ে দিপুল-এনামুলের বাকবিতন্ডা শুরু হয়।

তাদের বাকবিতন্ডা দেখে এনামুলের প্রাইভেটকারে থাকা তার ভাইয়েরা (অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন হাসান ও শিক্ষার্থী সৈয়দ ইব্রাহিম হাসান নাঈম), বোন (সৈয়দা আমিনা আক্তার রুনা), বোনের স্বামী (ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ জহিরুল ইসলাম) গাড়ি থেকে নেমে এসে দোকান কর্মচারী দিপুল দেবকে মারধর শুরু করেন। মারধর আটকানোর জন্য দিপুলের পার্শ্ববর্তী দোকানের মালিক মাসুক মিয়া এগিয়ে গেলে উত্তেজিত মেজর-ডাক্তার-উকিল তাকেও মারধর করেন।

এরপর রাখি ট্রেডার্সের মালিক বিভাষ পাল সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সম্পের্কে জানতে চাইতে তাকেও মারধর করেন তারা। অবশেষে বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য স্থানীয় মুরব্বীরা এগিয়ে গেলে মেজর-ডাক্তার-উকিল গংরা মুরব্বীদেরকেও অপদস্থ করেন। আর মুরব্বীদের অসম্মান করা দেখে এসময় স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হয়ে ‘মেজর-ডাক্তার-উকিল’ গংদের উপর পাল্টা হামলা করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।


গুরুত্বর আহত রাখি ট্রেডার্সের মালিক বিভাষ পালের বড় ভাই সত্যেন্দ্র পাল কাজল বলেন, দোকানের সামনে পাকিং করা প্রাইভেট কারটি সরানোর কথা বলায় তারা (মেজর-ডাক্তার-উকিল’ গংরা) দোকানের মধ্যে প্রবেশ করে আমার ভাই, দোকানের কর্মচারী ও পার্শ্ববর্তী দোকানের মালিককে মারধর করেছে। এলাকার মুরব্বীরা বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য এগিয়ে আসলে তারা মুরব্বীদেরকেও অপদস্থ করেছে। আমার ভাই গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।


এব্যাপারে জানতে চাইলে মেজর সৈয়দ এনামুল হাসান কামাল স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অনিহা প্রকাশ করেন। এসময় তার সাথের অন্যান্যরাও সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি হননি।
গাড়িসহ তাদেরকে (মেজর-ডাক্তার-উকিল গং) ঘটনাস্থল থেকে থানায় নিয়ে আসার সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, এলাকার মুরব্বীরা বিষয়টি আপোষ-মিমাংশায় নিষ্পত্তি করার জন্য চেষ্টা করছেন। তা না হলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *