1. abusufian7389@gmail.com : .com : sk .com
  2. ashfakur85@gmail.com : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. b.c.s.bipro@gmail.com : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. zihad0292@gmail.com : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. ahmedmdmahfuz@gmail.com : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. nazimahmed2042@gmail.com : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. shahadotchadni@gmail.com : Md Sh : Md Sh
  8. ashfakur86@gmail.com : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. shuddhobarta24@gmail.com : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. surveyor.rasid@gmail.com : Abdur Rasid : Abdur Rasid
আমি অন্তরে প্রশান্তি খুঁজে পেলাম,কলেমায়ে শাহাদাত পড়লাম        
রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন

আমি অন্তরে প্রশান্তি খুঁজে পেলাম,কলেমায়ে শাহাদাত পড়লাম

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০১৯

আমার শৈশব ছিল খুবই আনন্দময়। মা সব সময় আমাদের পরিপাটি রাখতে পছন্দ করতেন। প্রতি রবিবার গির্জায় যাওয়ার আগে তিনি আমাদের সুন্দর পোশাক পরাতেন। আমি জামার সঙ্গে উজ্জ্বল বর্ণের সিল্কি রিবন দিয়ে চুলে ঝুঁটি করতাম। গির্জায় পাদ্রিদের উৎসাহব্যঞ্জক কথাবার্তা হতো। একজন ধার্মিক খ্রিস্টান হিসেবেই আমি বেড়ে উঠেছি। আমি আমার মা-বাবার প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ তাঁরা আমাকে গভীর ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে বড় করেছেন। এ জন্য শৈশব থেকে আমি স্রষ্টায় বিশ্বাসী ছিলাম। তবে একসময় আমার ভেতর প্রশ্ন জাগে, আমরা কেন স্রষ্টার কাছে ছিলাম এবং কেন তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন?

যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল শহরের একটি খ্রিস্টান পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ২০০৪ সালে ইসলাম গ্রহণ করার পর কোরআন বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে ইসলাম প্রচারে নানামুখী কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।]

ছোট থেকেই বইয়ের প্রতি আমার আকর্ষণ ছিল। আমি পড়তে এবং জানতে ভালোবাসি। বেশির ভাগ দিন আমি গভীর রাত পর্যন্ত পড়তাম। আমি বইয়ে সাজানো অক্ষর-সারি পছন্দ করতাম, যা আমার চিন্তাশক্তিকে খুলে দিয়েছিল এবং আমাকে বিশেষত্ব প্রদান করেছিল। আমি বইয়ের শক্তি অনুভব করতাম। বই আমার জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে। আমার রুমটি বইয়ে ঠাসা ছিল। হাত খরচ পেলেই আমি পুরনো বইয়ের দোকানে যেতাম এবং যেকোনো বিষয়ের বই কিনতাম। এভাবেই একদিন আমি কোরআনের একটি ইংরেজি অনুবাদের কপি সংগ্রহ করি। বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে নয়, বইয়ের প্রতি আমার সাধারণ ভালোবাসা থেকেই তা সংগ্রহ করি। ভেবেছিলাম, হয়তো কোনো দিন তা পড়ার সুযোগ হবে।

পাঠাভ্যাসের কারণেই ধর্মের প্রতি আমার একটি মোহ ছিল। স্কুলে আমি ধর্ম শিক্ষা নিয়েছিলাম। তখন আমি অন্যান্য ধর্ম ও তাদের ধর্মবিশ্বাস সম্পর্কে জানতে পারি। যৌবনের শুরুতেই আমি স্রষ্টা ও ধর্মের বিভেদ সম্পর্কে প্রচণ্ড রকম আগ্রহী হয়ে উঠি। আমি কলা অনুষদের ‘ধর্ম শিক্ষা’ বিভাগে স্নাতক করার সিদ্ধান্ত নিই, যেন ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আরো গবেষণা করতে পারি। বিশেষত বিশ্বের ধর্ম ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য সম্পর্কে গবেষণার আগ্রহ ছিল আমার।

জীবনের ৩০তম বছরটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বেদনাদায়ক। এই বছর যেন আমি জীবনের সব অর্জন হারিয়ে ফেলি। মানসিক যন্ত্রণায় আমি ছিলাম দিশাহারা। সীমাহীন দ্বিধা ও হতাশা থেকে বাঁচতে আমি অ্যালকোহলে আসক্ত হই। এতে সাময়িক প্রশান্তি লাভ করলেও মানসিক অস্থিরতা বাড়ছিল দিন দিন। নিজেকে ধ্বংস করার সব আয়োজনই আমি করেছিলাম। একদিন আমি এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে আত্মরক্ষার প্রত্যয় নিয়ে জেগে উঠলাম। আমি খাতা-কলম নিয়ে বসলাম। আমার যত মন্দ অভ্যাস আছে, তা লিখলাম এবং তা থেকে আত্মরক্ষার জন্য করণীয়গুলোও লিখলাম। আমি সেদিন কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিই, সব মন্দ স্বভাব পরিহার করব। সঙ্গে সঙ্গে পেশা, পরিবেশ ও বন্ধু মহল পরিবর্তন করব। তবে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমি আতঙ্কিত ছিলাম। এটি কি আমার কোনো কাজে আসবে? এ ছাড়া এটি অনেক বড় আত্মত্যাগের বিষয় ছিল। আমি স্রষ্টার কাছে প্রার্থনার সিদ্ধান্ত নিলাম। হয়তো তিনি আমার ডাকে সাড়া দেবেন। স্রষ্টার প্রতি আস্থা রেখে আমি পরিবর্তনের সিদ্ধান্তে অটল থাকলাম। এরপর দেখলাম সব কিছু খুব সহজেই হয়ে যাচ্ছে।

নতুন কর্মসংস্থান হিসেবে আমি ব্রিস্টলের একটি সেবা সংস্থায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিই, যারা গৃহহীন মানুষদের স্থায়ী বাসস্থানের জন্য কাজ করে। আমার কাজ ছিল নারী বিভাগে। কাজের সুবাদে আমি কয়েকজন মুসলিম নারীর সংস্পর্শে আসি, যারা হয়তো আমার সহকর্মী ছিল, নতুবা সাহায্যপ্রার্থী। এই সময় আমি আবারও পড়া শুরু করলাম। নিজের যোগ্যতা বাড়াতে বিভিন্ন ট্রেনিং নিলাম। কয়েক বছরের কঠোর পরিশ্রমে আমি সংস্থার ডেপুটি ম্যানেজার পদে নিযুক্ত হলাম। আমার যা ছিল অনেক সম্মান ও মর্যাদার বিষয়। আমি সত্যি সুখী ছিলাম, তবে সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না। আমি বুঝতে পারছিলাম, স্রষ্টা আমার প্রার্থনা কবুল করেছেন। আমি যা কিছু চেয়েছিলাম তিনি আমাকে সব কিছুই দিয়েছেন। ক্যারিয়ার, বন্ধু, ঘর—সব কিছু। আমি স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ ছিলাম। তার পরও কিছু শূন্যতা অনুভব করতাম। আত্মিকভাবে কিছু অপূর্ণতা যেন দূর হলোই না।

আমার বয়স তখন ৪০। একদিন অফিস চলাকালে আমি আমার এক সহকর্মীকে একটি বই পড়তে দেখলাম। ইহুদিবাদের ওপর লেখা। সেই সূত্রে ধর্ম নিয়ে আলোচনা শুরু হলো। বইটি আমি অনলাইনে খুঁজলাম। সেটি ও আরো কয়েকটি বই, ধর্মীয় বই খুঁজে পেলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, পড়া হয়নি এমন কয়েকটি ধর্মীয় বই আমি পড়ব। আমি দীর্ঘ চার সপ্তাহের ছুটি পেয়েছিলাম। এটি পড়ার সুন্দর সুযোগ। এ সময় ইসলাম সম্পর্কেও একটি বই পেলাম। বইটি পড়ে আমি বিস্মিত হলাম। আমি কী পড়ছি? এটি সত্যি চোখ খুলে দেওয়ার মতো বই ছিল। বইটিতে চিন্তা-উদ্দীপক নানা বিষয়ে ভরপুর ছিল, যা আমাকে আরো বেশি জানতে উৎসাহিত করেছিল। যেমন—মুসলিমরা কেন নারীদের পর্দাবৃত করে রাখে? আমার ভেতর এমন অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল, যা আমাকে আরো জানতে সাহায্য করেছিল। আমি টিভিতে ইসলামী অনুষ্ঠান খুঁজতে লাগলাম। একটি নতুন টিভি চ্যানেল পেয়ে গেলাম, যারা মাত্র সম্প্রচার শুরু করেছে। এটি ২০০৪ সালের মার্চ মাসের কথা। প্রতি সন্ধ্যায় আমি টিভি চ্যানেলটি দেখতাম। বিকেলে ইয়াসির কাজি নামে একজন স্কলার আলোচনা করতেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের তাত্ত্বিক আলোচনা করতেন। আমি তাঁর আলোচনা থেকে অনেক কিছু শিখেছিলাম। চার সপ্তাহের ছুটি শেষ হলো। কাজে ফিরতে হবে। আমি কাজে ফেরার জন্য প্রস্তুত হলাম। সঙ্গে সঙ্গে ইসলাম গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হলাম।

আমার মনে তখনো ভয় ও সংকোচ তৈরি হলো, আমি কি সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছি? আমার পরিবার কী বলবে? কিন্তু আমি অন্তরে যে প্রশান্তি খুঁজে পেয়েছিলাম, তা হারানো সম্ভব ছিল না। আমি নিজেকে বোঝালাম, সারা পৃথিবীর মুসলিমরা কাবার দিকে ফিরে সিজদা করে। সুতরাং ইসলাম গ্রহণ করলে তুমি একা হয়ে যাবে না। অবশেষে কাজে ফিরলাম। অফিসে দুজন মুসলিম নারী কর্মরত ছিল। ইসলামী পোশাকধারী একজনকে আমি বললাম, আমি তার সম্পর্কে পড়েছি এবং তাদের প্রার্থনা দেখতে চাই। আমি নিশ্চিত সে বিস্মিত হয়েছিল এবং সে তার বসকে আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ বিষয়ে অবহিত করে। কিন্তু সে আমার প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কিছু করল। আমাকে তার ঘরে আমন্ত্রণ জানাল। পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিল। তারা সবাই আমাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাল। তারা আমাকে ইসলামী জীবন সম্পর্কে জানাল। এপ্রিল ২০০৪ আমি কলেমায়ে শাহাদাত পড়ে মুসলিম হই।

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.