অনলাইন ডেস্ক: নিয়ত করে শুরু করার পর সুন্নতসহ যে কোনো নফল নামাজ পূর্ণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। কেউ যদি শুরু করার পর সুন্নত বা অন্যান্য নফল নামাজ ভেঙে ফেলে, তাহলে ওই নামাজটি পরবর্তীতে পড়ে নেওয়া ওয়াজিব। যে সময়ে নামাজ পড়া মাকরুহ, ওই সময়ও যদি কেউ নফল নামাজ শুরু করে ভেঙে ফেলে, তাহলে পরবর্তীতে ওই নামাজ কাজা করে নিতে হবে।
ইসলামে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্তে ১৭ রাকাত নামাজ আদায় করা ফরজ, তিন রাকাত বেতর নামাজ আদায় করা ওয়াজিব। এ ছাড়া অন্যান্য নামাজকে শরিয়তের পরিভাষায় নফল বলা হয় যেগুলো আদায় করলে সওয়াব হয়, আদায় না করলে গুনাহ হয় না। এর মধ্যে চার ওয়াক্তের বারো রাকাত সুন্নাতে মুআক্কাদা নামাজের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে।রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক দিন ও রাতে বারো রাকাত নামাজ আদায় করবে, তার জন্যে জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করা হবে। (সহিহ মুসলিম: ৭২৮)
সুনানে তিরমিজির বর্ণনায় বিস্তারিত উল্লিখিত রয়েছে ওই ১২ রাকাত নামাজ কখন কীভাবে আদায় করতে হবে। নবিজি (সা.) বলেছেন, চার রাকাত জোহরের ফরজের আগে, দুই রাকাত জোহরের ফরজের পরে, দুই রাকাত মাগরিবের ফরজের পরে, দুই রাকাত ইশার ফরজের পরে আর দুই রাকাত ফজরের ফরজের আগে আদায় করতে হবে। (সুনানে তিরমিজি: ৪১৫)প্রতিদিন ফরজ নামাজের সাথে এই সুন্নাত নামাজগুলো আদায় করলে হাদিসে উল্লিখিত সওয়াব আমরা লাভ করবো।
এই ১২ রাকাত নামাজ নিয়মিত আদায় করা উচিত। কখনও ছুটে গেলে পরে পড়ে নেওয়া উচিত। যেমন কেউ যদি ফজরের ফরজ নামাজের আগে দুই রাকাত সুন্নাত না পড়তে পারে, তাহলে ফরজ নামাজের পরে পড়ে নেবে অথবা সূর্য ওঠার পর পড়ে নেবে, জোহরের ফরজ নামাজের আগের চার রাকাত সুন্নাত ফরজের আগে পড়তে না পারলে পরে পড়বে।
সাহাবি ও তাবেয়িরা এই ১২ রাকাত নামাজকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। কখনও এই নামাজ ছাড়তেন না। হাদিসটির বর্ণনাকারী সাহাবি উম্মুল মুমিনিন উম্মে হাবিবা (রা.) বলেন, আমি রাসুলের (রা.) কাছ থেকে এই কথা শোনার পর কখনও এই ১২ রাকাত নামাজ ছাড়িনি। তার ভাই আনবাসা ইবনে আবু সুফিয়ান যিনি উম্মে হাবিবা থেকে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, তিনিও বলেন, আমি উম্মে হাবিবার কাছে এই হাদিসটি শোনার পর কখনও এই ১২ রাকাত নামাজ ছাড়িনি। হাদিসটির বর্ণনাকারী আমর ইবনে আওস ও নোমান ইবনে সালেমও একই কথা বলেছেন। সুতরাং আমাদেরও এই ১২ রাকাত নামাজকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত ও নিয়মিত আদায় করা উচিত।
এই ১২ রাকাত নামাজ ওয়াজিব নয়, নফল অর্থাৎ পড়লে সওয়াব হবে, না পড়লে গুনাহ হবে না। কিন্তু কেউ এই নামাজগুলো শুরু করলে পূর্ণ করা ওয়াজিব হয়ে যায় এবং কোনো কারণে ভেঙে ফেললে পরবর্তীতে কাজা করা ওয়াজিব হয় যেমন আমরা ওপরে উল্লেখ করেছি। সুন্নত নামাজ শুরু করার পর গ্রহণযোগ্য ওজর ছাড়া ভেঙে ফেললে বা কোনো ওজরের কারণে ভেঙে ফেলার পর সুযোগ পেয়েও কাজা না করলে গুনাহ হবে।
প্রতিনিধি