1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
আজ শেষ ‘বান্নি’
       
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০১:১২ অপরাহ্ন

আজ শেষ ‘বান্নি’

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : রবিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৮

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোরডটকম ডেস্ক : চৈত্রের (১৪২৪) শেষ রোববার আজ। আজ শেষ বারুনীও (স্থানীয়রা বলেন ‘বান্নি’ বা ‘রইবান্নি’)। গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিনে আবার আগামী চৈত্র মাসের প্রতি রোববার অনুষ্ঠিত হবে এ উৎসব।

বৈষ্ণব মতবাদের প্রবর্তক শ্রী চৈতন্য দেবের পিতৃভূমিতে আগমন উপলক্ষে প্রতি বছর এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। তবে কত বছর থেকে তা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এর কোন সঠিক পরিসংখ্যান নেই। অবশ্য স্থানীয় জনসাধারণ পরিসংখ্যানের হিসেব-নিকাষের ধার-ধারেন না। তারা সারাবছর অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকেন, চৈত্র মাস আর ‘রই-বান্নি’র। 

বলাই বাহুল্য, সনাতন ধর্মাবলম্বীতো বটে, এই উৎসবে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাও অংশগ্রহন করেন অত্যন্ত স্বত:স্ফুর্তভাবে। আর তাই এটি বহুকাল থেকে একটি সার্বজনীন উৎসবে হিসাবে স্বীকৃত। 

তা হবেই বা না কেন? ‘রইবান্নি’ কি কেবল ধর্মীয় উৎসব? মোটেই না। এ উপলক্ষে ঢাকাদক্ষিণ মিশ্রপাড়ার মন্দিরের সামনের বিশাল এলাকাজুড়ে বসে নানা পণ্যের মেলা। স্টল বসে প্রায় আড়াইশ’ থেকে তিনশ’টি। এসব স্টলে নিত্য প্রয়োজনীয় এমন কোন দ্রব্য বা জিনিস নেই, যা পাওয়া যায়না। 

প্রথমে শুরু করা যাক খাদ্যদ্রব্য প্রসঙ্গ দিয়ে। ‘রইবান্নি’তে যেসব খাদ্যদ্রব্য পাওয়া যায়, তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য, নানা ধরণের মুড়ি। চালের মুড়িতো বটে, আরও যত ধরণের মুড়ি আছে, তাও পাওয়া যায় এ উৎসবে। যেমন, ‘ভেটর খই’, ‘চিড়ার খই’ ইত্যাদি। আছে বাতাসা, তিলু, তিলের খাজা ইত্যাদি মিষ্টি জাতীয় খাবার। আর চটপটি, বুট, ডিম, দই, নানা ধরণের গুড়ের সাথে পাওয়া যায় শরবতও। 

‘রইবান্নি’তে প্রাপ্ত ফলমুলের মধ্যে আঙুর-আপেল-খিরা বা শসাতো পাওয়া যায়ই, মিলে কাঁচা পাকা বেলও। বসে নিত্য ব্যবহার্য নানা দ্রব্যের স্টল। যেমন, আয়না-চিরুনী, চশমা, মহিলাদের বিভিন্ন ধরণের থলে, মানিব্যাগ, ছুরি-চাকু, দা, ¯েœা, পাউডার, আলতা-লিপস্টিকসহ প্রায় সবধরণের শৌখীন দ্রব্য। আছে খেলনা। বাচ্চাদের সবধরণের খেলনাও পাওয়া যায় এই উৎসবে। যেমন ঘুড়ি, ফরফরি, বন্দুক, পিস্তল, পুতুল ইত্যাদি। পাওয়া যায় বাঁশ-বেতের হাত-পাখাসহ আরও নানা কুঠির শিল্পজাত পণ্যও। 

বসে দুই ধরণের হস্তচালিত দোলনা। এসব দোলনায় চড়ে অনেক উপরে যেমন উঠার আনন্দ উপভোগ করে শিশু-কিশোররা, তেমিন ঘোড়ায় চড়ার স্বাধও পূর্ণ হয় তাদের। 

তবে উপরোক্ত বিবরণেও ‘রইবান্নি’তে যা পাওয়া যায়, তা সম্পূর্ণ বলা হলোনা। সেটি আরও সহজে বুঝার জন্য দেওয়া যাক একটি উদারণ। এক সময়, এই ২০/২৫ বছর আগেও, কারও হাত বা পা ভেঙ্গে বা মচকে গেলে ঠাট্টা সম্পর্কিতরা বলতেন, ‘যা যা, ছিন্তা করিস না, সামনর বান্নিত এখান লইয়া দিলাইমু’। 

এক সময় ‘রইবান্নি’ উপলক্ষে বসত বড় বড় জুয়ার দান। টানা দুই তিন দিন পর্যন্ত চলত এসব আসর। এ নিয়ে হতো অনেক ঝক্কি-ঝামেলা। 

রইবান্নি বা রবি বারুনী উৎসব একটি প্রাচীন উৎসব। শ্রী চৈতন্য দেবের পিতৃভূমি হচ্ছে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের মিশ্র পাড়ায়। জানা যায়, তিনি যখন মা শচি দেবীর গর্ভে আগমন করেন তখন তার দিদিমা স্বপ্নে দেখেন, ইনিই হচ্ছেন স্বয়ং ভগবান। স্বপ্নে তিনি শ্রী চৈতন্যের জন্ম অন্য কোথাও যেনো হয়, তেমন একটি আদেশও পেয়েছিলেন। এই আদেশ অনুযায়ী শ্রী চৈতন্যের বাবা জগন্নাথ মিশ্র ও মা শচী দেবীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় নবদ্বীপে। সেখানেই তাঁর জন্ম। 

পরে তিনি তাঁর দিদিমার সাথে দেখা করতে একবার চৈত্র মাসের রোববার ঢাকাদক্ষিণের মিশ্র পাড়ার পৈতৃক বাড়িতে এসেছিলেন। সন-তারিখ জানা যায়নি। তাঁর আগমনকে স্মরনীয় করে রাখতেই পরের বছর থেকে চৈত্র-মাসের প্রত্যেক রোববার এখানে পূজা-কীর্তনের আয়োজন করা হতো। কালে কালে সেই উৎসব আজকের ‘রইবান্নি’তে রুপান্তরিত হয়।

১৯৯২ সালে ভারতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর ঢাকাদক্ষিণ মিশ্রপাড়ার শ্রী চৈতন্য দেবের মন্দিরেও কিছুটা ভাংচুর হয়। পরের ৩/৪ বছর এখানে ‘রইবান্নি’ উৎসব হয়নি। কেবল পুজা-কীর্তনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকতা সীমাবদ্ধ ছিল। তারপর ৯৬ সাল থেকে আবার ‘রইবান্নি’ উৎসব উপলক্ষে মেলা বসতে শুরু করে। কিন্তু অনেক বছর যাবৎ তা আর আগের মতো উৎসবমুখর হচ্ছিলনা। তবে গত কয়েক বছরে তা ৯২ পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। 

রোববার ( ১ এপ্রিল) এ প্রতিবেদক সরজমিনে রবি-বারুনী উৎসব প্রত্যক্ষ করেন। তখন এ উৎসবের চিরাচরিত রুপ দেখা যায়। তবে সেকালের ঐতিহ্যবাহী কিছু কিছু আয়োজন এখন আর চোখে পড়েনা বলে জানালেন স্থানীয় কয়েকজন। যেমন, তখন বাঘের ঘর বা পুতুল নাচের খেলা দেখে ছেলে-বুড়ো সবাই মুগ্ধ হতেন। কিন্তু এখন সে খেলা যারা দেখাতেন, তারা আর আসেন না। 

এ নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করলেন, ষাটোর্ধ্ব আব্দুল হাসিব। তিনি বললেন, আইজকাল তারা আর আইননা। ইতা খেলা দেখাওরাও নাই। ও বেটা, আমরা বাঘর খেলা বা পুতুল নাচ দেখতাম করি কত ঠেলা-ধাক্কা মাইর ধইর করছি-বলতে বলতে তার মুখে ফুটে উঠল লাজুক হাসি। 

সেদিন দুপুর পর্যন্ত জুয়ার দান দেখা না গেলেও কয়েকজন জানিয়েছেন, কিছু কিছু জুয়া হচ্ছে খুব গোপনে।

বৃহত্তর সিলেটতো বটে ‘রইবান্নি’ বা রবি-বারুনীর আবেদন একসময় সিলেটের প্রতিবেশি আসাম-মেঘালয়-ত্রিপুরায়ও ছিল। ভারতের এইসব রাজ্য থেকে দলে দলে সনাতন ধর্মাবলম্বী বা বৈষ্ণব মতবাদের অনুসারীরা এ উৎসবে যোগদান করতে আসতেন। এখনও তারা আসেন, তবে সংখ্যায় খুব কম-জানালেন স্থানীয় যুবক প্রদীপ (৩২)।

 

 

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.