Home » একাদশে ভর্তির প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ, মোবাইলে এসএমএস

একাদশে ভর্তির প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশ, মোবাইলে এসএমএস

একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির অপেক্ষায় থাকা শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। রবিবার রাত থেকেই একাদশে ভর্তির প্রথম মেধাতালিকার মেধাবী ও সৌভাগ্যবান শিক্ষার্থীদের ভর্তির ফল প্রকাশ শুরু করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। রাত থেকেই শিক্ষার্থীদের স্ব স্ব মোবাইলে তথ্য জানাচ্ছে বোর্ড। আজ সোমবারের মধ্যেই পুরো তালিকার তথ্য প্রকাশ করা হবে। ওয়েবসাইট থেকেও ফল দেখার সুযোগ পাচ্ছে ভর্তিচ্ছুরা। যেখানে আবেদনকারীর রোল নম্বর, বোর্ড, পাসের সাল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়েই জানা যাবে কোন্ কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে সে। মনোনীত শিক্ষার্থীদের ১১ থেকে ১৮ জুনের মধ্যে ভর্তি নিশ্চায়ন করতে হবে। আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জনকণ্ঠকে বলেছেন, সোমবারের মধ্যেই প্রথম মেধাতালিকার ভর্তিচ্ছুদের ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। ১৩ লাখ শিক্ষার্থীকে তথ্য জানাতে হচ্ছে। কোন ধরনের জটিলতা যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করছি আমরা। অনেক শিক্ষার্থী; প্রক্রিয়া শেষ করতে একটু সময় লাগা স্বাভাবিক।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ড. হারুন অর রশিদ বলেছেন, সোমবার সবার জন্য ফল উন্মুক্ত করা হবে। এ বছর এখন পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে ড. হারুন অর রশিদ। বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়া পর্যালোচনা করে তারা খুশি।

ভর্তির তালিকার বিষয়ে কলেজ পরিদর্শক জানান, ভর্তি সংক্রান্ত ওয়েবসাইট www. xiclassadmission.gov.bd থেকে ফল দেখার সুযোগ পাচ্ছে ভর্তিচ্ছুরা। সেখানে আবেদনকারীর রোল নম্বর, বোর্ড, পাসের সাল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়েই জানা যাবে কোন্ কলেজে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে সে। কেবল ওয়েবসাইট নয়, মোবাইলের মাধ্যমেও একাদশে ভর্তিচ্ছুদের ফল জানানো হচ্ছে।

শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, প্রথম মেধাতালিকায় মনোনীত শিক্ষার্থীদের ১১ জুন থেকে ১৮ জুনের মধ্যে তাদের ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে টেলিটক বা মোবাইল ব্যাংকিং রকেট ও শিওর ক্যাশের মাধ্যমে বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন ফি ১৯৫ টাকা পরিশোধ করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় ভর্তি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে তার মনোনয়ন বাতিল বলে গণ্য হবে। পাশাপাশি তার আবেদনটিও বাতিল হয়ে যাবে।

গত ১২ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত ভর্তির জন্য অনলাইন ও মোবাইলে এসএমএস করে আবেদনের সুযোগ পায় এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। একেকজন শিক্ষার্থী অনলাইনে পাঁচ থেকে ১০টি কলেজের জন্য আবেদন করতে পারে।

এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ ছাত্রী এবং ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ ছাত্র। এ পরীক্ষায় সারাদেশে গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ২০ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ শিক্ষার্থী।

এদিকে জানা গেছে, এবার আবেদন করেছেন ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ কলেজ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। মাধ্যমিকে উত্তীর্ণদের মধ্যে এবার দুই লাখ ৪২ হাজার ৪২ শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তির জন্য প্রথম ধাপে আবেদন করেননি। গত বছরও প্রথম ধাপে আবেদনের বাইরে ছিল প্রায় আড়াই লাখ।

তবু সার্বিক পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ড কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতিবছরই এভাবে কিছু শিক্ষার্থী কলেজ পর্যায়ে এসে শিক্ষার সাধারণ ধারায় থাকেন না। তারা হয় কারিগরি ডিপ্লোমা বা অন্যান্য ধারায় চলে যান। কিছু শিক্ষার্থী ঝরে পড়ে। মেয়েদের অনেকের এই সময়ে বিয়ে হয়ে যায়। ফলে তারা সাধারণ কলেজ ভর্তির বাইরে থেকে যান। কোন রকমের বিড়ম্বনা ছাড়াই গত ১২ মে দুপুর ১২টা থেকে দেশব্যাপী একযোগে শুরু হয় নতুন নীতিমালা অনুসারে ভর্তি আবেদন কার্যক্রম।

ভর্তি নীতিমালা অনুসারে প্রথম ধাপের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন করা যাবে ১৯ ও ২০ জুন। ২১ জুনই তাদের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে। তৃতীয় ধাপে আবেদন নেয়া হবে ২৪ জুন। ফল প্রকাশ করা হবে ২৫ জুন। ২৭ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত কলেজে ভর্তি হতে হবে।

অনলাইনে সর্বনিম্ন ৫টি ও সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ বা মাদ্রাসায় আবেদন করা যাচ্ছে। এর জন্য নেয়া হচ্ছে ১৫০ টাকা। মোবাইল ফোনে প্রতি এসএমএসে একটি করে কলেজে আবেদন করা যাচ্ছে। এর জন্য মোট ১২০ টাকা লাগবে। এসএমএস ও অনলাইন মিলিয়ে কোন শিক্ষার্থী ১০টির বেশি প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারবে না।

এবার কলেজে ভর্তি হতে ১০ লাখ ৫২ হাজার ১৮৪ জন অনলাইনে এবং ৩ লাখ ৭৪ হাজার ২২২ জন এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেছেন। ১৪ লাখ ১৫ হাজার ৮২৫ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৬টি আবেদন জমা পড়েছে। এরমধ্যে অনলাইনে ৫৮ লাখ ৬২ হাজার ৯৫টি এবং এসএমএসের মাধ্যমে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫১টি আবেদন।

এবার ঢাকা বোর্ডে তিন লাখ ৯৯ হাজার ১৯৫, রাজশাহীতে এক লাখ ৮৮ হাজার ৫৮২, চট্টগ্রামে এক লাখ ২২ হাজার ৩৬, কুমিল্লায় এক লাখ ৫৬ হাজার ৯৪৫, যশোরে এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৯৪, বরিশালে ৭৭ হাজার ৪২০, সিলেটে ৮০ হাজার ১৬২, দিনাজপুরে এক লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৮, ময়মনসিংহে ৯৬ হাজার ৫৪৩ এবং মাদ্রাসা বোর্ডে এক লাখ ২৮ হাজার ৮১৮ শিক্ষার্থী কলেজে ভর্তি হতে আবেদন করেছেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *