মিম(ঢাকা থেকে): দীর্ঘ দুই মাস ধরে হত্যা পরিকল্পনা করে রথীশ চন্দ্র বাবু সোনার স্ত্রী দীপা ভৌমিক স্নিগ্ধা ও তার সহকর্মী প্রেমিক কামরুল ইসলাম জাফরী মাস্টার।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আগেই তাজহাট মোল্লা পাড়ার দুই কিশোরের সহযোগীতায় ২৮ মার্চ বুধবার সেই নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরের মেঝের বালু সরিয়ে গর্ত করে রাখে তারা। পরেরদিন কৌশলে খাবারের সাথে চেতনানাশক ঔষধ খাওয়ায়। এরপর গলায় ওড়না পেচিয়ে শাসরোধ করে স্নিগ্ধা ও কামরুল হত্যা করে বাবু সোনা কে। হত্যার পর লাশ বাড়ির আলমারিতে ঢুকিয়ে কৌশলে আলমারি পরিবর্তনের কথা বলে তা নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির অদুরে তাজহাট মোল্লাপাড়ার সেই নির্মাণাধীন ভবনে, যেখানে আগে থেকেই গর্ত করে রাখা হয়েছিলো।
তে ফেলে তারা। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকান্ডের পুরো ঘটনাটিই নিজ মুখে শিকার করে দীপা ভৌমিক স্নিগ্ধা। এঘটনার সাথে সম্পৃক্ত স্নিগ্ধা ও দুই কিশোর র্যাব-১৩ হেফাজতে আর কামরুল মাস্টার পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
এ ঘটনার আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করতে রংপুরে এসেছেন র্যাবের পরিচালক বেনজির আহমেদ। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা এড: রথীশ চন্দ্র ওরফে বাবু সোনার মরদেহ দেখে র্যাব-১৩ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন।
উল্লেখ্য নিজের স্ত্রী ও তার প্রেমিকের জবানবন্দি অনুযায়ী রংপুরের বিশেষ পিপি রথিশ চন্দ্র ভৌমিক ওরফে বাবু সোনার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত ২টার দিকে রংপুর নগরীর তাজহাট মোল্লাপাড়ার একটি নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে র্যাব। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাবু সোনার স্ত্রী দীপা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম জাফরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রংপুর র্যাব-১৩-এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আরমিন রাব্বি জানান, নিহত আইনজীবী বাবু সোনার স্ত্রী ও তার প্রেমিকের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে, তাদের দেখানো জায়গা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
দীপা ভৌমিক ও কামরুল ইসলাম জাফরী একে অপরের সহকর্মী। তারা দুজনই তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
নিহতের ছোট ভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিকসহ স্বজনেরা পায়ের জুতা দেখে বাবু সোনার লাশ শনাক্ত করেন।
র্যাব জানায়, এর আগে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে দীপা ভৌমিককে তাদের নগরীর বাবুপাড়ার বাসা থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, তার স্বামীর লাশ তাজহাট মোল্লাপাড়া মহল্লার তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম জাফরীর বড় ভাই খাদেমুল ইসলাম জাফরীর নির্মাণাধীন বাসায় আছে। পরে দীপা ভৌমিক ও কামরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে বস্তার মধ্যে বালুর ভেতরে লুকিয়ে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়।
লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে রংপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু, নিহত বাবু সোনার ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক, ভগ্নিপতি অধ্যাপক ডা. অনিমেষ মজুমদারসহ অনেকে ঘটনাস্থলে যান। তারা বাবু সোনার লাশ শনাক্ত করেন।
রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, গত শুক্রবার (৩০ মার্চ) আইনজীবী বাবু সোনা নিখোঁজ হন। ঘটনাটি জানানোর পর থেকেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
এর পরদিন শনিবার (৩১ মার্চ) নগরীর রাধাবল্লভ এলাকার বাসা থেকে বাবু সোনার স্ত্রী দীপা ভৌমিকের প্রেমিক কামরুল ইসলাম জাফরীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এরপর দীপা ভৌমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়ার পর বাবু সোনার লাশ উদ্ধার করা হয়।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভোর ৬টার দিকে লাশটি রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর কথা। লাশ পচন ধরায় গণমাধ্যমকর্মীদের ছবি তুলতে দেওয়া হয়নি।
নির্বাহী সম্পাদক