Main Menu

আবার সেই দিন

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টফোরডটকম : আবার সেই ৭-১! হ্যাঁ, মাত্র তো বছর চারেক হলো। ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দেশের মাটিতে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে যাওয়ার দুঃস্মৃতি কতকাল যে ব্রাজিলকে বয়ে বেড়াতে হবে, কে জানে! বিশ্বের যে প্রান্তেই ব্রাজিলের মুখোমুখি হোক না কেন, জার্মানির খেলোয়াড়েরা প্রেরণা খুঁজতে ওই ম্যাচের স্মৃতি হাতড়াবেন। আর ব্রাজিল? দুঃস্বপ্নের ওই ম্যাচকে ভুলে যেতে পারলেই সবচেয়ে খুশি হতো।

কিন্তু চাইলেই কি ভুলে থাকা যায়! অথবা জার্মানি এটা ভুলে থাকতে দিলে তো! বেলো হরিজন্তের মিনেইরো স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচের আগে ২১ বার মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিল-জার্মানি। এর ১২টিতেই জিতেছে ব্রাজিল, জার্মানির জয় ছিল ৪টি। ২০০২ বিশ্বকাপে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়েই জিতেছিল নিজেদের ইতিহাসে পঞ্চম বিশ্বকাপ শিরোপা। সেই ব্রাজিলকে তাদেরই মাঠে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার ম্যাচটি নানা উপলক্ষে টেনে না এনে পারে জার্মানি!

বার্লিনের আজকের প্রীতি ম্যাচের আগে ব্রাজিলকে ওই ম্যাচ মনে করিয়ে দিতে কোনো চেষ্টাই বাদ রাখেনি জার্মানরা। জার্মানির ফুটবল ফেডারেশন (ডিএফবি) এই উদ্যোগ নিয়েছে অনেক আগে। নিজেদের ফেসবুক পাতায় একটি পোস্ট দিয়েছিল-ব্রাজিল ১ : ৭ জার্মানি, বার্লিন প্রীতি ম্যাচের বাকি আর মাত্র ১৭ দিন! ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের ওই দুঃস্মৃতি মনে করিয়ে দিতেই কিনা কয়েক দিন আগে জার্মানির ফরোয়ার্ড টমাস মুলার বলেছিলেন, ‘ব্রাজিল এই ম্যাচকে প্রতিশোধের উপলক্ষ হিসেবেই নেবে।’

ঘরের মাঠে সবচেয়ে বড় হার, যে হারে দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ। সেই ম্যাচের পর জার্মানির সঙ্গে এই প্রথম দেখা। তা মুলাররা মনে করিয়ে না দিলেও ব্রাজিল শিবিরে প্রতিশোধস্পৃহা না জেগে পারে না! কয়েক দিন ধরে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যমে একটা শব্দ খুব দেখা যাচ্ছে—রেভাশে। পর্তুগিজ এই শব্দের বাংলা মানে প্রতিশোধ! ব্রাজিলের কোচ তিতেও এর বাইরে নন। জার্মানির মুখোমুখি হওয়ার আগে তাঁরও যে মনে পড়ে যাচ্ছে সেই ‘মিনেইরোজো’, ‘বিশ্বকাপের সেই ৭-১ ভূতের মতো। মানুষ এখনো এটা নিয়ে কথা বলে। আবেগের দিক থেকে তাই বার্লিনের প্রীতি ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতটা এখনো টাটকা। বার্লিন ম্যাচ এই ক্ষত শুকানোর একটি উপলক্ষ। নিজেদের সেরাটা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। আমি ভালো ফল চাই।’

মিনেইরো স্টেডিয়ামের সেই ম্যাচে ব্রাজিলের কোচ ছিলেন লুইস ফেলিপে স্কলারি। এরপর দুঙ্গার হাত ঘুরে ২০১৬ সালের জুনে ব্রাজিলের দায়িত্ব আসে তিতের কাঁধে। দায়িত্ব নেওয়ার পর ধীরে ধীরে দলটিকে নিজের মতো করে গড়ে তুলেছেন। তাঁর অধীনে খেলা ১৮ ম্যাচের মাত্র একটিতেই হেরেছে ব্রাজিল। কিন্তু বিশ্বকাপের সেই ম্যাচের দিনটি আজও ভোলেননি তিতে, ‘আমি স্ত্রীকে নিয়ে ম্যাচটি আমাদের সাও পাওলোর বাড়িতে বসে দেখছিলাম। তৃতীয় গোলটির পর আমার স্ত্রী কাঁদতে শুরু করেছিল। তবে কখনো কখনো ফুটবলে এটা হয়, কোনো একটি দল প্রায় নিখুঁত খেলে ফেলে। ওই দিন জার্মানি সেটাই করেছে।’

৭-১ নিয়ে যত কথাই হোক, জার্মানির মিডফিল্ডার টনি ক্রুস সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন স্কলারি আর তিতের ব্রাজিল এক নয়, ‘২০১৪ সালের সঙ্গে (ব্রাজিলের) বর্তমান দলটির তুলনা করলে ওরা এখন দ্বিগুণ ভালো। সবাই মিলে ভালো একটি দলে পরিণত হয়েছে। ব্রাজিল এই বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিটও।’

তিতের হাতে পড়ে আগের চেয়ে ভালো হয়ে যাওয়া এই ব্রাজিল বার্লিনে হয়তো বেলো হরিজন্তের প্রতিশোধ নেবে। ফুটবল-পাগল ব্রাজিলিয়ানদের হতাশার ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়বে তাতে। কিন্তু দুধের স্বাদ কি আর ঘোলে মেটে! বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ার বদলাটা ব্রাজিল হয়তো তুলে রাখতে চাইবে বিশ্বকাপের জন্যই!

Leave a comment



(এর আগের খবর) »



এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.