1. abusufian7389@gmail.com : .com : sk .com
  2. ashfakur85@gmail.com : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. b.c.s.bipro@gmail.com : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. zihad0292@gmail.com : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. ahmedmdmahfuz@gmail.com : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. nazimahmed2042@gmail.com : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. shahadotchadni@gmail.com : Md Sh : Md Sh
  8. ashfakur86@gmail.com : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. shuddhobarta24@gmail.com : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. surveyor.rasid@gmail.com : Abdur Rasid : Abdur Rasid
রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ালো!        
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন

রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ালো!

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

মোঃ রিদুয়ানুর রহমান
২৩ জানুয়ারি, ২০১৯। খুব ভোরেই সাইফুদ্দিন স্যারের ফোনে ঘুম ভেঙ্গে গেল। মোবাইলের ওপাশ থেকে ঘুমঘুম কণ্ঠে স্যার বললেন রেদওয়ান তোমার ঘুম ভাঙ্গছে? আমি জি স্যার উঠছি! ওকে সবাইকে কল দিয়ে ডেকে দাও । আজকে আমাদের রাঙ্গামাটি শিক্ষা সফরে যাওয়ার প্ল্যান। রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম বিভাগের অন্তর্গত যা আয়তনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা। রাঙ্গামাটি- আনারস, কাঠাল, কলার জন্য বিখ্যাত এটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম শহর থেকে ৭৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্যারের কথা মতো মোবাইল হাতে নিয়ে প্রথমে মুন্নিকে কল দেই এভাবে এক এক করে বায়েজিদ, মুস্তাফিজ, আলমগীর, খোকন, রুনা, রুম্পা, ইব্রাহীমসহ আরো সবাইকে কল দিয়ে ডেকে দেই তখন ঘড়িতে সময় ৫ঃ২৩ মিনিট। উঠে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নামাজ আদায় করে, ক্রিম এসব লাগিয়ে পেস্ট কালার একটা শার্ট, কালো পেন্ট, কালো জুতা পরে বেরিয়ে পড়ি ৬ঃ৩০এ কলেজের উদ্দেশ্যে টার্মিনাল গিয়ে এককাপ চা প্রাণ করে কলেজে গিয়ে পৌঁছাতে ৬ঃ৫৫ মিনিট হয়। পৌঁছেই দেখি সুন্দর হাসি মাখা মুখে দাঁড়িয়ে আছেন প্রিয় জনাব আকতার চৌধুরী স্যার । সালাম বিনিময় করতেই চোখের সামনে দেখি জনাব মুর্শেদ স্যার, জাহিদ স্যার, ফিরোজ স্যার, জসিম উদ্দিন চৌধুরী স্যারসহ অন্যান্য ব্যাক্তিগন ১০৮ জন ভ্রমণ পিপাসু রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে কেউ দাঁড়িয়ে কেউ বসে আছেন তখনই যেন মনের মাঝে রাঙ্গামাটির রং লেগে গেল। সবাই উপস্থিত থাকলেও মুক্তাকে না দেখে কল দেই, কিরে প্রতিবারের মতো এবারো কি তোর আলসেমি না করলে হয় না? শীঘ্রই চলে আয় রাঙ্গামাটির উদ্দেশ্যে বাস ছাড়তে ৮ঃ০০ হয়। একটা ঝলমলে সকালে আমরা গাড়িতে বসি। কুরআন শরীফ থেকে বায়েজিদ সূরাহ’র কিছু অংশ পাঠ করে তার পরে মাইক্রোফোন হাতে তোলে নেয় ইসলামের ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব আকতার চৌধুরী স্যার তিনি আমাদের ভ্রমণের উদ্দেশ্যে কিছু বক্তব্য দেন তার পর বলেন আমি কার নিয়ে চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছি ওখান থেকে তোমাদের সাথে যোগ হবো এই বলে কক্সবাজার সিটি কলেজের সামনে থেকে বাস ছড়ার অনুমতি দেন। পথে গানের তালে তালে বাস চলতে থাকে আমার কণ্ঠে ও কিছু গান ছিল এবং অন্যান্যরা বেশ হৈ-হুল্লোড়ের মধ্যে যেতে থাকি পথে হোটেল মিডওয়েতে নাস্তা করে আবার যাত্রা শুরু করি। এমন সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই কথাটি মনে পড়ে- ‘যে সমাজে শৃঙ্খলা আছে, ঐক্যের বিধান আছে, সকলের স্বতন্ত্র স্থান ও অধিকার আছে সেই সমাজেই পরকে আপন করিয়া লওয়া সহজ।’ আমাদের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বন্ধন হলো সেই রকম এক বন্ধন।

কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত কক্সবাজার সিটি কলেজ, অত্র কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের পক্ষ হতে এই ভ্রমণ। একাদশ শ্রেণী থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত প্রায় ১২,০০০ ছাত্র-ছাত্রীর এক মিলনমেলা আমাদের কলেজ। আমাদের কলেজেরও রয়েছে কয়েকটি বিশেষ দিক। সময় অনুযায়ী কলেজ চলা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন করা, শিক্ষা সফরসহ কলেজের নীতিগত বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী আমরা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের একই বন্ধন। অনেক নিয়ম-শৃঙ্খলার মাঝে আমাদের সবাইকে চলতে হয়। আমরা জানি, আপাত দৃষ্টিতে যেকোনো বন্ধন বিরক্তিকর মনে হলেও পরিণাম চিন্তা করলে বুঝতে পারা যায়, তা কল্যাণকরই বটে।

‘সফর’ শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ থেকে। ‘সফর’ অর্থ ভ্রমণ বা পরিভ্রমণ। শিক্ষার লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে বাস্তব জ্ঞানের জন্যে যে ভ্রমণ করা তাই শিক্ষা সফর। তাইতো কবি বলেছেন, ‘কত অজানারে জানাইলে তুমি কর ঘরে দিলে ঠাঁই দূরকে করিলে নিকট বন্ধু, পরকে করিলে ভাই।’ আমাদের গাড়ি চলছে। সকাল পেরিয়ে দুপুর হচ্ছে, তখন আমরা চট্টগ্রাম অতিক্রম করলাম সাথে উঠলেন প্রিয় আক্তার চৌধুরী স্যার ও তাঁর পরিবার। আমাদের গাড়ি চলছেই চলছে, জানালা দিয়ে বাহিরটা দেখছি আমরা। রাস্তার দুই পাশে বড় বড় পাহাড় সবার একটাই কথা আর কতদূর। পথের মধ্যে আমাদের গাড়ির নিছে একটা কুকুর পড়তে গিয়ে আমাদের ড্রাইবার কৌশলে কুকুরকে একসিডেন্ট থেকে রক্ষা করে। আমাদের অনেকের এই প্রথম রাঙ্গামাটি আসা। জাহিদ স্যার বললেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা রাঙ্গামাটি পর্যটন কেন্দ্রে পৌঁছে যাবো। বিকাল ৪টায় আমরা খাবার হোটেল চন্দিমায় পৌঁছলাম। চারপাশে সবুজ আর সবুজ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে এক অপূর্ব লীলা নিকেতন আমাদের এদেশ। প্রকৃতি যেন আপন হাতে দেশকে সাজিয়েছে মনের মতো করে। ছবির মতো সারি সারি গাছ আঁকাবাঁকা পথ। পানির লেক, পাহাড়, মনে পড়ে যায় কবির সেই কবিতা- ‘অবারিত মাঠ গগন ললাট চুমেতব পদধূলি ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়। বাস থেকে নেমে সবাই মুখ-হাত ধুয়ে ভাত খেতে বসি। সময়ের সাথে ক্ষিধে বেশি লাগায় সবাই দুপুরের খাবার খেতে বসে পড়ি। খাবার শেষ করে অনেকে সেল্ফি তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায় তার সাথে দেখতে পাই রাস্তার পাশে আমড়ার মতো ছোলে আনারস বিক্রি করা বিষয়টি আমাদের কাছে আনকমন হওয়ায় এটা নিয়ে আমরা মজা করে খাই। স্যার মাইকে বলেন সবাই গাড়িতে উঠো ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে হবে। ঝুলন্ত ব্রিজ দেখার আকর্ষণ সবার মাঝে। মনে পড়ে সেক্সপিয়ারের একটা কথা। উনি বলেছিলেন, ‘ঘরের অভ্যন্তরে আরামে যে বসে থাকে তার বুদ্ধি সঙ্কীর্ণ ও সীমাবদ্ধ হয়। মনকে মুক্ত ও কুসংস্কার থেকে নিজের আচরণকে মুক্ত করতে সফরের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে।’ দল বেধে আমরা যাচ্ছি। স্যাররা আমাদের সামনে ও পেছনে। কয়েকজন গলা ছেড়ে গান ধরলো ‘আজ আমাদের হারিয়ে যাবার নেই মানা মনে মনে…। স্যারদের কড়া নজর আমাদের দিকে। ব্রিজে উঠে অনেকে নাচানাচি আবার কেউবা সেল্ফি আড্ডায় হারিয়ে যায়। সন্ধ্যা নেমে আসায় মন ভরে দেখা হলো না স্যার জানালেন হোটেলে যেতে হবে। আমরা হোটেল প্রিন্সে উঠি, স্যার জানালেন সবাই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে সংস্কৃতি অনুষ্ঠান উপভোগ করার জন্য প্রস্তুতি নাও। শুরু হলো সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কক্সবাজারের ৮ টি উপজেলা নিয়ে আলোচনা ছিল ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ। গান, নাচ আর উক্তি মূলক কথার মধ্যে শেষ হয় সংস্কৃতি অনুষ্ঠান অতঃপর যে যার রুমে ঘুম। পরদিন সকালে ফিরোজ স্যারের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে। স্যার বললেন, তোমাদের নিয়ে আমরা এবার শুভলং দেখতে যাবো । তার আগে রাজবন বিহার দেখে সামনে অগ্রসর হবো। সকালে উঠে আমরা নাস্তা শেষ করে রাজবন বিহার দেখতে গেলাম নৌকা পথে লেকের মাঝে নৌকা ভ্রমণ আমাদের জন্য ছিল অসাধারণ একটি আনন্দময় অধ্যায় যেখানেই চোখ যায় প্রাকৃতির সৌন্দর্য্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। রাজবন বিহারে অনেক বানেরর বসবাস দেখতে পাই আমাদের মধ্যে অনেকেই বানরের পাশে বসে ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং সাধারন জ্ঞান প্রশ্নের মাধ্যমে বিজয়ীদের পুরস্কারে পুরস্কৃত করা হয়। আবার শুভলং’র উদ্দেশ্যে রওনা নৌকায় উঠেই দেখি কেউ কেউ নাগিন নাচ এবং নাচের পর্ব শুরু করে দিলাম সেখানে তুলনা মুলুক অনার্স চতুর্থ (১৪-২০১৫) বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা বেশি আনন্দ উপভোগ করে। এভাবে শুভলং গিয়ে পৌঁছাতে দেখি অপরুপ এক ঝর্ণা যা বর্তমানে শুকনো থাকলেও তার আকৃতি বৃদ্ধমান। আবার খাবার হোটেল চন্দ্রিমায় ফেরা দুপুরের খাবার শেষ করে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু যাত্রা বিরতিতে খাওয়া দাওয়া এবং গানের তালে তালে পথ চলা মাঝ পথে আমার উপস্থাপনায় প্রিয় মুর্শেদ স্যার, সাইফুদ্দিন স্যার, জসিম স্যার, জাহিদ স্যার, নাছির(২) স্যার আমাদেরকে গান শুনিয়ে আমাদের শিক্ষা সফরের আনন্দকে দ্বিগুন করে দেন। তবে মাঝ পথে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ডেজির সাময়িক অসুস্থতা আমাদের হতবাক করে দিয়েছিল। আমরা সবাই ঠিকভাবে সফর শেষ করে আসছি বলে জসিম স্যার সৃষ্টি কর্তার কাছে সন্তুষ্টি কামনা করলেন। কলেজ/ ভার্সিটি জীবনে একটা শিক্ষা সফরের কত প্রয়োজন তা আমরা বুঝতে পারি। জানি আবারও আমরা শৃঙ্খলার মাঝে থাকব, তবে এই শৃঙ্খল জীবন যে আমাদের সুন্দরের পথ দেখাবে সেটাও আমরা বুঝতে পারলাম। মনে মনে বললাম।
“দিন ফুরিয়ে যায়রে আমার
দিন ফুরিয়ে যায়।”
সব শেষে বললাম সবাই-
“এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি।

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.