Main Menu

মাগুরছড়া গ্যাসকূপ বিস্ফোরণের ২৪ বছর, এখনো ক্ষতিপূরণ আদায় হয়নি

১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাগুরছড়া গ্যাসকূপ বিস্ফোরণ ঘটে চা বাগান, বনাঞ্চল, বিদ্যুৎলাইন, রেলপথ, গ্যাস পাইপলাইন, গ্যাসকূপ, রিজার্ভ গ্যাস, পরিবেশ প্রতিবেশ, ভূমিস্থ পানি সম্পদ ও গাড়ি চলাচল ও পায়ে হাঁটার রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিস্ফোরিত আগুনের তেজস্ক্রিয়তায় গলে যায় রেলপথ, জ্বলে ছারখার হয়ে যায় কোটি কোটি টাকার বনজ সম্পদ। মারা যায় হাজার হাজার বন্যপ্রাণী ও পাখী। সেই ভয়াল ঘটনার আজ ২৪ বছর অতিক্রম করে ২৫ বছরে পা দিয়েছে। আর মার্কিন কোম্পানির কাছ থেকে এখনো ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে সোচ্চার রয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।

বিস্ফোরণে পুড়ে যায় ভূ-গর্ভস্থ উত্তোলনযোগ্য ২৪৫.৮৬ বিসিএফ গ্যাস। তদন্তে প্রমাণিত হয় মার্কিন কোম্পানী অক্সিডেন্টালের খামখেয়ালিপনার কারণে এ দূর্ঘটনা ঘটে। সেই সময় যার ক্ষতি নির্ধারণ করা হয় প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান বাজার দরে তা লক্ষ কোটি টাকা হবে।

 

 

আন্তর্জাতিক আদালতে শেভরনের বিপক্ষে হুইলিং মামলায় পেট্রোবাংলার বিজয় হয়েছে। এই উদাহরণকে সামনে রেখে ১৯৯৭ সালে অক্সিডেন্টালের উত্তরসূরী শেভরনের ওপর গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ চেয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে আরো একটি মামলা করা এখন সময়ের দাবি। আর এ মামলার মাধ্যমে আদায় করা যেতে পারে তাদের দ্বারা অপূরণীয় ক্ষতির কিছুটা অংশ।

 

 

 

বাংলাদেশের সম্পদ নষ্ট করে বীমা কোম্পানীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছে। আর মাগুরছড়া বিস্ফোরণে ক্ষতির নায্য দাবির জন্য ডকুমেন্টসহ বাংলাদেশ তাদের কাছ থেকে তা আদায় করতে প্রথমে নোটিশ ও পরে মামলা করতে পারে। এতে আমাদের বিজয় হবেই। বাংলাদেশের গ্যাস উত্তোলনে দেশের পাইপ লাইন ব্যবহার করে টাকা না দেয়ার জন্য খোড়া যুক্তি দেখিয়ে শেভরন আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালত তাদের এই অহেতুক যুক্তিকে নাচক করে রায় দেয় পেট্রোবাংলার পক্ষে। আর সে মামলা চালাতে বাংলাদেশ সরকারের খরচ হয় প্রায় ৫ কোটি টাকা আর রায় অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ইউনিকলের কাছ থেকে পাচ্ছে বছরে প্রায় দুই হাজার সাত শত কোটি টাকা।

অগ্নিকাণ্ডে এ বনের যে ক্ষতি হয়েছে তা কখনও পূরণ করার মতো নয়। ঐসময় বনের যে সকল পশু পাখি মারা গেছে তা আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। আগুন লাগার পরে লাউয়াছড়া ও মাগুরছড়ার পাহাড়ি ছড়াগুলো শুকিয়ে গিয়েছিল, আজও যা আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি। তিনি লাউয়াছড়া বনে বিগত ২৪ বছরে কয়েক হাজার বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করেছেন। পাশাপাশি রোপন করেছেন প্রচুর পরিমাণ বৃক্ষ।

বিস্ফোরণের ২৪ বছরে পুড়ে যাওয়া এলাকায় নতুন করে গাছপালা গজালেও মাগুরছড়ায় কয়েকটি গাছের পোড়াচিহ্ন আজও কালের স্বাক্ষী হিসেবে রয়ে গেছে। তিনি জানান, অক্সিডেন্টাল যতসামান্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে ইউনিকল নামে আরেকটি কোম্পানির কাছে ফিল্ড বিক্রি করে বাংলাদেশ থেকে চলে যায়। কিন্তু সুচতুর অক্সিডেন্টাল ক্ষতিপূরণের জন্য পেট্রোবাংলার মাধ্যমে পাঁচশত পৃষ্ঠার তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করায়। যেখানে উল্লেখ ছিল মাগুরছড়া বিস্ফোরণে পরিবেশ জীব-যন্তু ও প্রতিবেশের ক্ষতি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পাশাপাশি গ্যাস পুড়েছে ২৪৫.৮৬ বিলিয়ন ঘন ফুট। আর পানি সম্পদের ক্ষতি হয় আরও বিশাল। এই ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে অক্সিডেন্টাল তাদের বীমা কোম্পানীর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ তুলে নেয়। কিন্তু গ্যাস উত্তোলনের চুক্তি অনুযায়ী সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ তাদেরই দেয়ার কথা। তারা কৌশলে স্থানীয় পর্যায়ে কিছু কিছু ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করে কেটে পড়ে।

 

 

বিস্ফোরিত এ কূপটি ছিল মূলত পকেট কূপ। সাধারণত গ্যাস উত্তোলন করতে হয় সাড়ে তিন থেকে চার হাজার মিটার নিচ থেকে। আর মাগুর ছড়ায় ১২০০ মিটার নিচে যেতেই গ্যাস পাওয়া যায় যা বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে সে কূপ সিলগালা করে প্রায় ৩/৪শত মিটার দূরে মূল কূপ নির্ণয় করে বর্তমানে গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। যেখান থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬০/৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মৌলভীবাজার গ্যাস ফিল্ডে সংযুক্ত হয়।

এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক বলেন, ১৯৯৭ সালে এ অগ্নিকাণ্ডে লাউয়াছড়া বনের বড় একটি ক্ষতি হয়। অনেক বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে যা টাকার অংকে পূরণ করার নয়।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.