জ্বীন কি মানুষের উপর ভর করতে পারে? ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা

আমাদের সমাজে প্রতিনিহতই শোনা যায় জ্বীনের মানুষের উপর ভর করা কিংবা মানুষের যাদুগ্রস্থ হচ্ছে। এটাকে সাধারণভাবে আরবীতে সাহর বলে। এটি এমন একটি অবস্থা যখন মানুষের নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং সাময়িক স্মৃতিভ্রম ঘটে। পবিত্র কুরআন এবং হাদীসের আলোকে সাহর একটি নিশ্চিত বিষয়।“যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়।” (সূরা বাক্বারা, ২৭৫)শয়তানের আসরে মানুষ মোহাবিষ্ট হয়ে পড়ে- এই বিষয়টি নিশ্চিত। ইমাম কুরতুবী, তাবারী, ইবনে-কাসীর সহ অধিকাংশ তাফসীরবিদ এই আয়াতকে জ্বীনের মানুষের উপর ভর করার সুনির্দিষ্ট প্রমান হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
(তাফসীরে কুরতুবী ৩/৩৫৫, তাফসীরে তাবারী ৩/১০১, তাফসীরে ইবনে কাসীর ১/৩২৬)সহীহ হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে- রাসুল (সা.) বলেছেন, “শয়তান আদম সন্তানের শরীরে প্রবাহিত হয়, যেমন রক্ত শরীরে প্রবাহিত।” (বুখারী, ৩৩/২৫১। মুসলিম, ২১৭৫)ইমাম আহমদ (র.) এর ছেলে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, “আমি আমার বাবা (ইমাম আহমাদ) কে বললাম- কিছু মানুষ মানুষের শরীরে জ্বীনের ভর করাকে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন- ও আমার সন্তান, তারা মিথ্যা বলছে। আসর করা অবস্থায় অসুস্থ লোকের মুখ দিয়ে জ্বীন কথাও বলতে পারে।” (মাজমুউল ফাতাওয়া- ইবনে তাইমিয়াহ ১৯/১২)ইমাম আহমদ এবং ইমাম বায়হাকী কর্তৃক লিপিবদ্ধ সহীহ হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, রাসুল (সা.) একবার একটি অসুস্থ বালকের সাক্ষাত পেয়েছিলেন যার উপর জ্বীনের ভর ছিল। রাসুল (সা.) ছেলেটির দিকে ফিরে জোরে বলেন- “ও আল্লাহর শত্রু, বের হয়ে আসো। ও আল্লাহর শত্রু, বের হয়ে আসো। ছেলেটি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, ৩৫৪৮; মুসনাদে আহমদ ৪/১৭১, ১৭২)এছাড়াও বিভিন্ন সাহাবীদের থেকে অসংখ্য সহীহ হাদিস বর্ণনা করা হয়েছে এই প্রসঙ্গে যেখানে রাসুল (সা.) সাহরগ্রস্থ রোগীর ওপরে দুআ করে সাহর মুক্ত করেছেন।

প্রতিনিধি
Leave a comment
এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজ পবিত্র হজ
আজ আরাফাতের ময়দানে শুরু হবে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিদের লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতেবিস্তারিত

পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু
মক্কা থেকে হাজিদের মিনার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সৌদিবিস্তারিত