Main Menu

ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে বিকিরণের ঝুঁকি বেশি?

তথ্য প্রযুক্তি ডেস্ক: 

স্মার্টফোন যত শক্তিশালী হয়ে উঠছে, বিকিরণের ক্ষতিকর প্রভাবের আশঙ্কাও তত বাড়ছে৷ ভবিষ্যতে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সেই ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিতে পারে৷ তবে বিজ্ঞানীরা এখনো বিকিরণের প্রভাব নিয়ে অকাট্য প্রমাণ পাননি৷

মোবাইল প্রযুক্তির পঞ্চম প্রজন্মের আরও শক্তিশালী ফাইভ-জি অ্যান্টেনা৷ বর্তমান টাওয়ারেই তা বসানো সম্ভব৷ কিন্তু সেই অ্যান্টেনার কাছে থাকলে মানুষ আরো বিকিরণের শিকার হতে পারে৷ মোবাইল টাওয়ারের বিকিরণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আরো বাড়ছে৷ কেউ এমন বড় অ্যান্টেনার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছেন, কেউ ক্যান্সারের আশঙ্কা করছেন৷ অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, যে এখনো এ নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা হয়নি৷ ফলে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে৷

উন্নত এই মোবাইল নেটওয়ার্ক গ্রাহকদের আরো শক্তিশালী ইন্টারনেট সংযোগ দেবে, যা বর্তমানের তুলনায় ১০০ গুণ দ্রুত৷ দ্রুত সংযোগের কল্যাণে চালকহীন গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে৷ শিল্প ক্ষেত্রে অনেক কাজ সহজ করতে বিশাল পরিমাণ তথ্যের আদানপ্রদান সম্ভব হবে৷ সেই লক্ষ্যে মোবাইল কোম্পানিগুলি টাওয়ারে বিকিরণের ঊর্দ্ধসীমা শিথিল করতে চায়৷

কিন্তু এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ বাড়ছে৷ সুইজারল্যান্ডের চিকিৎসক সংগঠনও রুখে দাঁড়িয়েছে৷ পরিচালকমণ্ডলীর সদস্য কার্লস কিন্টো এত দ্রুত নিয়ম শিথিল করার বিপক্ষে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানি, বিকিরণের প্রভাব রয়েছে৷ কিছু মানুষের উপর তার জৈব ও মানসিক প্রভাব পড়ে৷ কিন্তু এই মুহূর্তে নিশ্চিতভাবে তা নির্ধারণ করা যাচ্ছে না৷ শুধু কিছু ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ বিশাল মাত্রায় পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে৷”

বর্তমানে টু-জি, থ্রি-জি ও ফোর-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে ৭৯০ থেকে ২ দশমিক ৬ মেগাহার্তস পর্যন্ত ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগনাল প্রেরণ করা হয়৷ ভবিষ্যতে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক যাতে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশাল পরিমাণ তথ্য প্রেরণ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে আরও উচ্চমাত্রার ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করতে হবে৷ চলতি বছরের শেষে ৩ দশমিক ৬ মেগাহার্তস এবং পরে ৬ থেকে ১০০ মেগাহার্তস ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করা হবে৷

কিন্তু ৬ গিগাহার্তস ফ্রিকোয়েন্সির মাত্রা পেরিয়ে গেলে তরঙ্গ এত সঙ্কুচিত হয়ে যায়, যে তার প্রসারের মানের অবনতি ঘটে৷ বাড়িঘর, গাছপালা আরো বড় বাধা হয়ে ওঠে৷ তাই অ্যান্টেনার বিকিরণ বাড়াতে হবে৷

মার্টিন ব়্যোসলি মোবাইল সিগন্যালের বিকিরণ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ ও উপদেষ্টা৷ তার দফতরের একটি সেমিনারের ঘর মোবাইল টাওয়ারের খুব কাছেই অবস্থিত৷ ভবিষ্যতে সেই টাওয়ারও আরো বেশি মাত্রায় বিকিরণ করতে চলেছে৷ মার্টিন বলেন, ‘‘বর্তমানে যেটুকু জানা আছে, সেই অনুযায়ী স্বাস্থ্যের কোনো ঝুঁকি নেই৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও নিরাপত্তা নিয়ে সংশয়ের কারণে একটা বলয়

মোবাইল অ্যান্টেনা কতটা বিপজ্জনক এবং সেগুলি কি আমাদের রোগের জন্য দায়ী? এখনো পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা শুধু কিছু ইঙ্গিত পেয়েছেন৷ তবে মোবাইল নেটওয়ার্ক মস্তিষ্কে টিউমারের কারণ হতে পারে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি৷ ফাইভ-জি নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে৷ কারণ আরও উচ্চ মাত্রার ফ্রিকোয়েন্সির ক্ষেত্রে তরঙ্গ আরও ছোট হয়ে যায়৷ ফলে ত্বকই তা শুষে নেয়৷ অন্যদিকে বর্তমান তরঙ্গ শরীরে মধ্যে প্রবেশ করে৷ কার্লস কিন্টো বলেন, ‘‘ত্বক সেটি অন্যভাবে শুষে নেয়৷ ফলে অন্য ধরনের ক্ষতি হতে পারে৷ ত্বকের ক্যানসারের আশঙ্কা থাকলেও এখনো নিশ্চিতভাবে তা বলা যায় না৷”

মোবাইল বিকিরণ বিশেষজ্ঞ মার্টিন ব়্যোসলি মনে করিয়ে দিয়েছেন, যে এখনো কোনো ভালো গবেষণা হয়নি৷ তাই দুশ্চিন্তার পক্ষে বা বিপক্ষে নানা কারণ রয়েছে৷ আরও ভালোভাবে পরীক্ষা করতে হবে৷

মার্টিন মনে করেন, অ্যান্টেনা নয় – বরং আমাদের স্মার্টফোনই সবচেয়ে বড় ঝুঁকি৷ নিজের দপ্তরে তিনি ভালো সিগনাল থাকলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টেলিফোন করেন৷ তাঁর পরিমাপ অনুযায়ী বিকিরণের মাত্রা কম৷ অন্যদিকে যে ফোনে সিগন্যাল খারাপ, তা অনেক বেশি বিকিরণ করে৷ তিনি বলেন, ‘‘খারাপ সিগনাল থাকলে বিকিরণের মাত্রা সর্বোচ্চ হয়ে ওঠে৷ সাধারণত আমাদের আশপাশের ডিভাইসই ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ বিকিরণের জন্য দায়ী৷”

অর্থাৎ কেউ যদি বিকিরণ প্রতিরোধ করতে চায়, তার হাতেই সেই উপায় রয়েছে৷

 

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.