সিলেটে সারাদিন ব্যাপি বিভিন্ন মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে ব্যস্ত ছিল নগরী। শুক্রবার (১৮ জুলাই) জুমআর নামাজের পর পরই বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে শুরু হয় দিনব্যাপী মিছিল। সারাদিন নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল ও মিছিল পরবর্তী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে যানজটসহ সাধারণ জনগনের ভোগান্তির সৃষ্টি হয়।
সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির মৌন মিছিল :-
দেশে ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি, ষড়যন্ত্র আরও শুরু হয়েছে, জোরেশোরে শুর হয়েছে’ উল্লেখ করে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি। ষড়যন্ত্র কিন্তু আরোও শুরু হচ্ছে, আরো জোরেশোরে শুরু হচ্ছে। বিবেকবান মানুষ বলছেন, নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। কাজেই এদেশের মানুষ যেমন একাত্তর সালে স্বাধীন করেছে এই দেশ, এই দেশের মানুষ যেমন বিভিন্ন সময়ে তাদের নিজের অধিকারের রক্ষায় সোচ্চার হয়েছে, নব্বইতে সোচ্চার হয়েছে, চব্বিশে সোচ্চার হয়েছে আপনাদের সকলের কাছে আহ্বান থাকবে আবারও আপনাদের সোচ্চার এবং সচেতন হতে হবে। কারা কীভাবে ষড়যন্ত্র করছে, কারা কীভাবে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কথা বলছে এবং ক্ষনে ক্ষনে অবস্থান পরিবর্তন করছেৃ এই সকল বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’ তিনি বলেন, আসুন আমাদের সকলকে চোখ-কান খোলা রাখি। আমাদের যে যুদ্ধ ছিল গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সেই যুদ্ধ কিন্তু এখনো শেষ হয়ে যায়নি।
তিনি শুক্রবার (১৮ জুলাই) জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির কালো ব্যাজ ধারণ ও মৌন মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। বিকালে সিলেট কোর্ট পয়েন্ট থেকে শহীদ মিনার অভিমুখে এই মৌন মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকীর যৌথ পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্যে রাখেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী ও আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক ও নির্বাহী সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম।
মৌন মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি সৈয়দ মঈন উদ্দিন সুহেল, মাহবুব কাদির শাহী, ডা. আশরাফ আলী, নুরুল মোমিন খোকন, আব্দুল হাকিম, আফজল হোসেন, রহিম মল্লিক, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হাজী শাহাব উদ্দিন আহমদ, শহীদ আহমদ (চেয়ারম্যান), মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, নাজিম উদ্দিন লস্কর, গোলাম রব্বানী, সামিয়া বেগম চৌধুরী, উপদেষ্টা কামরুল হাসান শাহীন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব, যুগ্ম সম্পাদক মুর্শেদ আহমদ মুকুল, শামীম মজুমদার, মির্জা বেলায়েত হোসেন লিটন, নেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেক, শুয়াইব আহমদ শুয়েব, মাহবুবুল হক চৌধুরী, আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, রেজাউল করিম আলো, আক্তার রশিদ চৌধুরী, আহমদ মঞ্জুরুল হাসান মঞ্জু, মতিউল বারী খোরশেদ, ফাতেমা জামান রুজি, আবুল কালাম নাদির খান, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, তাজরুল ইসলাম তাজুল, মামুনুর রশিদ মামুন, আনোয়ার হোসেন মানিক, এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন, এডভোকেট সাঈদ আহমদ, আবুল কাশেম, আব্দুল আহাদ খান জামাল, শাকিল মোর্শেদ, এডভোকেট মুজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব, রফিকুল ইসলাম রফিক, দেওয়ান জাকির, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রহিম আলী রাশু, রেজাউর রহমার রুজন, সাব্বির আহমদ, শফিক নূর, অর্থ সম্পাদক এনামুল কুদ্দুস চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মোহন, দপ্তর সম্পাদক তারেক আহমদ খান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ মিলন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ডা. এম এ হক বাবুল, প্রকাশনা সম্পাদক দেওয়ান আরাফাত জাকি, যোগাযোগ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ মুরাদ, জলবায়ু সম্পাদক সবুর আহমদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক তাজ উদ্দিন মাছুম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুর রহমান মোহন, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হাদি মাছুম, তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ লোকমানুজ্জামান খান, ক্ষুদ্র কুঠি শিল্প সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আহাদ, কৃষি সম্পাদক মফিজুর রহমান জুবেদ, ধর্ম সম্পাদক মুফতি রায়হান উদ্দিন মুন্না, পরিবার কল্যাণ সম্পাদক হাবিব আহমদ, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আজিজ লাকি, স্বনির্ভর সম্পাদক খায়রুল ইসলাম খায়ের, মহানগর কৃষক দলের সভাপতি হুমায়ুন কবির শাহীন, জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন, সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ, মহানগর যুবদল সাধারণ সম্পাদক মির্জা সম্রাট হোসেন প্রমুখ।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা কালো ব্যাজ ধারণ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং দেশে চলমান সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মৌন প্রতীকী প্রতিবাদ জানান। বিভিন্ন মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। একইসঙ্গে জাতির মুক্তি এবং ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এই কর্মসূচিতে জেলা ও মহানগর বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে কর্মসূচিকে সফল করে তোলেন।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন ও দোয়া মাহফিল :-
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী গেজেটভুক্ত আন্দোলনকারীদের স্বীকৃতি, জুলাই ঘোষণাপত্রের বাস্তবায়ন এবং “জুলাই সনদ” প্রদান ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দাবিতে জুলাই যোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে মানববন্ধন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টায় নগরীর বন্দরবাজার সিটি কর্পোরেশন গেইটের সামনে মানববন্ধন ও বাদ আসর হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদে শহীদদের মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব মোঃ সাহেল আহমদ।
মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার আন্দোলনের শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের পুনর্বাসন এবং জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবি জানান। তাঁরা বলেন, এই আন্দোলন শুধু ছাত্রদের নয়, এটি দেশের ভবিষ্যৎ ও ন্যায়ের পক্ষে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
এসময় বক্তব্য রাখেন শহীদ সুমনের পিতা আব্দুর নুর বেলাল, গেজেট বঞ্চিত অঙ্গ হারানো আন্দোলনকারী বাহার ও মামুন, জুলাই যোদ্ধা কামাল তাপাদার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আব্দুল আহাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক সেজান মাহমুদ, ইমন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ওসমান সুলতান, যুগ্ম সদস্য সচিব মামুন আহমেদ, রুমন আহমেদ, মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান গাজী, মুখপাত্র তানভীর হোসেন, কার্যকরী সদস্য নজরুল ইসলাম, ইসলাম উদ্দিন, আব্দুল মানিক, মাহমুদুল হাসান, জসিম, জুলাই রেভ্যুলুশনারি অ্যালায়েন্স এর আহ্বায়ক তানভির লাদেন প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, নামধারী একটি গোষ্ঠী কর্তৃক বিভ্রান্তিকর ও স্বার্থান্বেষী কমিটি গঠন করে প্রকৃত আন্দোলনকারীদের থেকে ফায়দা লুটার অপচেষ্টা চলছে, যেখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন ব্যক্তিরা যারা নিজেরাও গেজেটভুক্ত নয়। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানানো হয়।
সমাপনী বক্তব্যে আব্দুর রহিম বলেন, আমরা এই সভ্য প্রতিবাদ ও মানববন্ধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের কাছে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি জনগণের রক্তের বিনিময়ে যে আন্দোলন, তার ইতিহাস বিকৃতি সহ্য করা হবে না। জুলাই সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবি।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা :-
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে ‘জুলাই জাগরণ ও স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে জুলাই যোদ্ধাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা, চলমান খুন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজদের বিচার, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা প্রদান, দ্রুত ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণা এবং PR পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বাদ জুমুআ এই মিছিলটি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান এল এল বি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক( সিলেট বিভাগীয়) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। বিষেশ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য আরিফুর ইসলাম শামিম।
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী র্যালি :-
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগরের ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই চেতনা বাস্তবায়ন, গণহত্যার বিচার শহীদ পরিবারের পূর্ণবাসন, এবং বৈষম্যহীন ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার দাবীতে,আজ ১৮ জুলাই শুক্রবার,ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ সিলেট জেলা ও মহানগর শাখার র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুহাম্মাদ আবু বকর সিদ্দীক কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, বিষেশ অতিথি হিসেবে উপস্থিত মাওলানা মুহাম্মাদ বদরুল হক কেন্দ্রীয় সদস্য ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ।
নির্ভীক জুলাই সিলেট :-
মুফতি রেজাউল করিম আবরার, গবেষক আসিফ আদনান, লেখক জাকারিয়া মাসুদসহ আলেম উলামার উপর জঙ্গিবাদের মিথ্যা বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার এবং কারাগারে আটক মজলুমদের মুক্তির দাবিতে নির্ভীক জুলাই সিলেটের উদ্যোগে এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার (১৮ জুলাই) বাদ জুমুআ সিলেট নগরীর কোর্টপয়েন্টে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।