গোপন বন্দিশালায় আমেরিকানসহ বিদেশিরা জিজ্ঞাসাবাদ করতেন গুমের শিকার ব্যক্তিদের। তাঁদের বলা হতো ‘ফরেন গেস্ট’। এমন তথ্যই উঠে এসেছে গুম কমিশনের প্রতিবেদনে। তবে, এই বিদেশি ব্যক্তিরা সরাসরি নির্যাতনে অংশ নিতেন না বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
গুম কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গত ৪ জুন দেওয়া প্রতিবেদনে এক ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য তুলে ধরে বলা হয়, ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় দুজন আমেরিকান তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ছয় মাস পর আবারও ডিবিতে নেওয়া হলে সেখানে আগের সেই দুই আমেরিকান ছাড়াও আরও কয়েকজন মার্কিন নাগরিক ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আরেকজন বন্দি ডিজিএফআইয়ের হেফাজতে আটক থাকার সময় তাকে একজন ইংরেজিভাষী বিদেশি জিজ্ঞাসাবাদ করতে এসেছিলেন বলে কমিশনকে জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারতের সঙ্গে গড়ে ওঠা সম্পর্কের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের নামে পশ্চিমা সহযোগিতা থেকেও লাভবান হয়।
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এই যে গুমের সংস্কৃতি, এটা কিন্তু বাংলাদেশে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতি হিসেবে ছিল। তৎকালীন সরকার ও সরকারের বাহিনীগুলো ছিল, তারা কিন্তু এই গুমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে।’
কমিশন এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ থেকে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই বাছাই শেষে এ প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে বলা হয়, বিদেশিরা সরাসরি নির্যাতনে অংশ না নিলেও তাদের উপস্থিতি এই গোপন আটক ব্যবস্থাকে বৈধতা দিয়েছিল।
সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘তাদের যে আইনি সহযোগিত পাওয়ার কথা তা তারা পাননি। তারা ভুক্তভোগী, বিচারব্যবস্থাটা কাজ করেনি।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গুম ও আয়নাঘরের বিষয়টি আবার সামনে আসে। গত ২৭ অগাস্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিশন গঠন হয়।