ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকার হামলার পর বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। হামলার পরদিন রোববার রাতেই আমেরিকার শেয়ারবাজারে তেলের ফিউচার দাম বেড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
আমেরিকার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে প্রতি ব্যারেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৭৬ দশমিক ৪৭ ডলার। ব্রেন্ট তেলের দাম ৩ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৪ দশমিক ৫৯ ডলার।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে নতুন মাত্রা ও মার্কিন পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় বাজারে উদ্বেগ বাড়ছে। যার প্রভাব সরাসরি পড়ছে জ্বালানি ও বিনিয়োগ খাতে।
ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আমেরিকার হামলার পর রোববার গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধের একটি প্রস্তাব দেশটির পার্লামেন্টে পাস হয়েছে।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পার্লামেন্টে পাস হওয়ার পর এখন ইরানের সুপ্রিম কাউন্সিলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এরপরই এটি কার্যকর হবে।
এই প্রণালি হয়ে বিশ্বের ২০ শতাংশ জ্বালানি তেল রপ্তানি হয়ে থাকে। ইরান যদি এই পথ বন্ধ করে দেয় তাহলে প্রতিদিন অন্তত ১ বিলিয়ন ডলারের তেল পরিবহন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ প্রণালি বন্ধের স্বল্প মেয়াদি প্রভাব পড়তে পারে বলে এক বিশ্লেষণে জানিয়েছে রয়টার্স। এতে বলা হয়েছে, গত ১৩ জুন ইরানে ইসরায়েলের আকস্মিক হামলার পর থেকেই জ্বালানি খাতের উদ্যোক্তারা চরম সতর্কতামূলক অবস্থায় ছিল। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের সরবরাহে বাধা আসার শঙ্কা তৈরি হয়, বিশেষ করে হরমুজ প্রণালি দিয়ে। ১৩ জুনের পর বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের অপরিশোধিত জ্বালানি বা ক্রুডের দাম ১০ শতাংশ বা ব্যারেল প্রতি ৭৭ ডলারে উন্নীত হয়।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, যদিও ইসরায়েল এবং ইরান পরস্পরের জ্বালানি স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে কিন্তু এরপরও সাগরপথে জ্বালানি সরবরাহে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর তেহরানের হিসাব নিকাশে পরিবর্তন আসতে পারে। ইরানের হাতে এখন খুব বেশি দান অবশিষ্ট নেই, ফলে দেশটি এই অঞ্চলে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার পাশাপাশি জ্বালানির সরবরাহে বাধা তৈরি করতে পারে।
রয়টার্স বলছে, এ ধরনের পদক্ষেপের ফলে বিশ্ব জ্বালানির বাজারে তাৎক্ষণিক বড় প্রভাব পড়তে পারে। তবে ইতিহাস এবং বাজারের বর্তমান অবস্থা বলছে, উদ্যোক্তারা যতটা দুশ্চিন্তা করছেন, এতটা প্রভাব হয়ত বাজারে পড়বে না।