সিলেট নগরীতে যত্রতত্র অবৈধ পশুর হাট, প্রশাসন নীরব

কুরবানির আর একদিন বাকি। এখন পুরো সিলেট নগরীই গরুর বাজারে পরিণত হয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে গরুর বাজারের অবস্থা অনেকটা লন্ডভন্ড। কর্দমাক্ত মাঠের কারণে নগরীর অলিগলি, বাসার নিচে, রাস্তার পাশে, ফুটপাতে কুরবানির গরু বিক্রি করা হচ্ছে।
অনেকে বৈধ বাজার থেকে কুরবানির গরু না কিনে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জায়গা থেকে কিংবা ফার্ম থেকে গরু কিনে নিচ্ছেন। এদিকে বৈধ হাটের ইজারাদাররা বলছেন, নগরীজুড়ে অবৈধ পশুর হাট বসায় তাদের লোকসানের শঙ্কা রয়েছে।
সিলেট সিটি, পুলিশ, ও জেলা প্রশাসন নগরবাসীকে আশ্বস্ত করেছিলেন এবার গরুর বৈধ হাটের বাইরে কেউ কুরবানির পশু বিক্রি করতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে চিত্র অন্যরখম। নগরীর যত্রতত্র কুরবানির পশু বিক্রি হচ্ছে।
সিলেট নগরীতে যত্রতত্র কোরবানির পশুর অবৈধ হাট নিয়ে প্রতিবছরই বিশৃঙ্খলা ও সহিংসতা ঘটে। কিছু রাজনৈতিক নেতাসহ প্রভাবশালীরা এর নেপথ্যে থাকায় প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারে না। তাই শেষ মুহূর্তে নগরীর প্রতিটি পাড়া-মহল্লার রাস্তায় যেন পশুর হাটে পরিণত হয়। এবারও এর আলামত দেখা গেছে।
সিলেটে প্রসাশনের ইজারাকৃত বৈধ মাঠ ছাড়াও নগরীর বিভিন্ন স্হানে এবং অলি-গলির রাস্তার উপর ভাসমান অবৈধ পশুর হাট বসেছে।
স্হানীয় প্রভাবশালী নেতারা এসব অবৈধ হাট বসিয়েছেন। এতে বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় চলাফেরা করতে দুর্ভোগে পড়ছেন জনসাধারন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপশহর, মেন্দিবাগ, শাহীঈদগাহ, কাজিটুলা, আম্বরখানা, শেখঘাট, মিরেরচক, মুরাদপুর, কুশিঘাট, মুক্তিরচক, মেজরটিলার জাহানপুর, বালুচরের ভিতর, এমসি কলেজ মাঠ সংলগ্ন, ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোড, কাজিটুলা, আখালিয়া, মদিনা মার্কেট, সুবিধ বাজার, পাঠানটুলা, লাভলীরোড, রিকাবীবাজার, পূর্ব শিবগঞ্জ, যতরপুর, তেররতন, উপশহর, শেখঘাট-বেতেরবাজার রোডে ভাসমান পশুর হাট বসানো হয়েছে। এসব হাটে ৮/১০ টি করে গরু ও কিছু ছাগল নিয়ে বসেছে পাইকাররা।
জানা যায়, ইজারা ছাড়া এসব হাটের কর্তারা হচ্ছেন স্হানীয় প্রভাবশালী নেতারা। এদের না আছে ইজারা না আছে কোন অনুমতি। এদের পেশী শক্তির বলে এসব অবৈধ হাট বসিয়ে এলাকায় দুর্ভোগ সৃষ্টি করছেন।
এসব হাটের পাইকারদের প্রশ্ন করা হলে তারা জবাব দেন, গরু হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে গেছে তাই রেষ্ট নিচ্ছে। একটু পর হাটে চলে যাবে। এসব জায়গায় গরু বিক্রি হবে না। অথচ দেখা গেছে এসব অবৈধ হাটেই গরু বিক্রি হচ্ছে। গরুর মল মুত্র রাস্তাঘাটে পড়ে চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সিলেট মহানগর এলাকায় ৬টি হাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
হাটে ইজারার শর্তে উল্লেখ আছে: হাট সংলগ্ন এলাকায় কোনোভাবে মহাসড়ক, প্রধান সড়ক, অলি-গলিসহ কোনো সড়ক বন্ধ বা মানুষ ও যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়া যাবে না।
অথচ ইজারার শর্ত ভঙ্গ করে মহাসড়ক, সড়ক এমনকি নগরীর অলি-গলি দখল করে বসানো হয়েছে কোরবানীর পশুর হাট। কোনো কোনো এলাকায় প্রধান সড়ক যান চলাচলের জন্য ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে।
বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এলাকার গলিপথও। এতে করে মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছ। এতেকরে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো এলাকায় ইজারা ছাড়াই বসেছে কোরবানির হাট।
আবাসিক ভবনের গেটেও গরু বাঁধা হয়েছে। এসব অনিয়ম দেখার যেন কেউ নেই। ভোগান্তি নিয়ে কার কাছে অভিযোগ করবে সে বিষয়টাও বেশিরভাগ মানুষের জানা নেই।
ওই সড়কদিয়ে চলাচলকারীরা জানান, গরুর হাটগুলো নির্ধারিত হাট ছেড়ে নগরীর অলিতে-গলিতে রাস্তার উপর দাড়িয়ে গরুর ভাসমান বাজার গড়ে উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা সড়কের ওপর তাদের কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন।
এতে প্রায় নগরীতে ভোগান্তির পাশাপাশি নগরীর সড়কে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দিনভর যানজট লেগে থাকলেও পুলিশ কিংবা স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
প্রসাশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সিলেটের বৈধ পশুর হাট ছাড়া কোথাও পশুর হাট রাখা যাবে না। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে নগরীর অলিতে-গলিতে গড়ে উঠতে শুরু করেছে অবৈধ ভাসমান পশুর হাট।
Leave a comment
এই বিভাগের আরো সংবাদ

সিলেট সীমান্তে বিএসএফের সাউন্ড গ্রেনেড, ফাঁকা গুলি
সিলেটের গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি পর্যটন স্পটে জিরো পয়েন্টে পাথর চুরি করতে যাওয়া শ্রমিকদের লক্ষ্য করে সাউন্ডবিস্তারিত

সিলেট নগরীতে যত্রতত্র অবৈধ পশুর হাট, প্রশাসন নীরব
কুরবানির আর একদিন বাকি। এখন পুরো সিলেট নগরীই গরুর বাজারে পরিণত হয়েছে। গত কয়েকদিনের টানাবিস্তারিত