আগামী ১৪ মে সিলেট থেকে এই বছরের সরাসরি হজ ফ্লাইট শুরু হচ্ছে। প্রথমদিন ৪শ’ ১৯ জন যাত্রী নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট মদিনার উদ্দেশে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাবে। গতবছরের ন্যায় এবারও সিলেট থেকে সর্বমোট ৫টি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হবে বলেও জানা যায়।
শুক্রবার (২ মে) গণমাধ্যমের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার শাহনেওয়াজ মজুমদার।
জানা যায়, এবারও ‘রোড টু মক্কা’ কর্মসূচির আওতায় ঢাকাতেই দুই দেশের ইমিগ্রেশন হবে যাত্রীদের। তবে, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গমনকারী যাত্রীদের সৌদি আরবের আগমনী ইমিগ্রেশন সৌদি আরবেই অনুষ্ঠিত হবে।
বিমানের সিলেট অফিস সূত্র জানায়, সিলেট অঞ্চলের হজযাত্রীদের দুর্ভোগের বিষয়টি মাথায় রেখে এবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৫টি হজ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ৫টি ফ্লাইটে ৪শ’ ১৯ জন করে মোট ২ হাজার ৯৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করা হবে। প্রথম দিনের ফ্লাইট ছাড়া বাকি ফ্লাইটগুলো সিলেট-জেদ্দা রুটে পরিচালিত হবে। এই চারটি ফ্লাইটের শিডিউল হচ্ছে ২৩, ২৫, ২৬ ও ২৯ মে।
হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের নেতৃবৃন্দ জানান, সিলেট থেকে এবার ২ হাজার ৭শ’ জন হজযাত্রী রয়েছেন। বিশেষ করে এবারের হজ কোটা ব্যবস্থাপনায় এজেন্সি প্রতি এক হাজার হজযাত্রী বেঁধে দেওয়ায় তারা চরম অস্বস্তিতে পড়েন। সিলেট অঞ্চলে শতাধিক এজেন্সি কাজ করলেও ১৫-২০টি এজেন্সি সক্রিয়ভাবে ছিল মাঠে। পরে তারা সম্মিলিতভাবে তিনটি লিড এজেন্সির মাধ্যমে সিলেটের হজযাত্রীদের নিবন্ধনসহ যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করেন। বড় এই তিনটি এজেন্সি হচ্ছে লতিফ ট্রাভেলস প্রাইভেট লিমিটেড, এলাইট ট্রাভেলস ও আল ইহসান ট্রাভেলস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, তিনটি লিড এজেন্সি ছাড়াও যে সকল এজেন্সি হজযাত্রী সংগ্রহে সমন্বয়ক এজেন্সি হিসেবে কাজ করেছে তাদের মধ্যে রয়েছে ইকরা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, সিপার এয়ার সার্ভিস, আল মনসুর এয়ার সার্ভিস, রাব্বানী এভিয়েশন সার্ভিসেস, আবাবিল এয়ার সার্ভিস, ট্রাভেলন এয়ার সার্ভিসেস, আল শরিফাইন ট্রাভেলস, নিবরাস ট্রাভেলস, তাশফিক ট্রাভেলস, সিটি ওভারসীজ, সোমা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস, যাত্রীক ট্রাভেলস, আকাবা ট্রেডিং কর্পোরেশন, আলফা ট্রাভেলস, খাজা ট্রাভেলস, সানসাইন ট্রাভেলস, আকাবা ট্রাভেলস, ইশরা ট্রাভেলস ইত্যাদি।
এদিকে, সিলেট থেকে সরকারিভাবে হজযাত্রী নিবন্ধনকারী ব্যক্তিরা হচ্ছেন মোট ৩৩ জন। এই বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন সিলেটের হিসাবরক্ষক সৈয়দ ফখরুল ইসলাম।
অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট জোনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান জানান- ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ছাড়াও পবিত্র হজযাত্রী প্রেরণে প্রতিটি ট্রাভেল এজেন্সির প্রত্যাশা থাকে। তবে, এজেন্সি প্রতি এক হাজার হজযাত্রী বেঁধে দেওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছেন। এ কারণে মক্কা-মদিনায় আবাসন সুবিধাসহ অন্যান্য কার্যক্রম সফল করতে তাদেরকে চরম বেগ পোহাতে হয়।
হজ এজেন্সিস অব বাংলাদেশ (হাব) সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি জহিরুল কবির চৌধুরী শীরু জানান, সিলেট থেকে ৫টি হজ ফ্লাইট পরিচালিত হওয়ায় হজযাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে। মদীনা থেকে সরাসরি সিলেট ফ্লাইট পরিচালনা করতে বিমান কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এফবিসিসিআই-এর সাবেক পরিচালক ও সিপার এয়ার সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী খন্দকার সিপার আহমদ এবারের হজ কোটা ব্যবস্থাপনায় এজেন্সি প্রতি এক হাজার হজযাত্রী বেঁধে দেওয়ার বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, এ ধরনের কোটা আর কোনো দেশের সাথে নেই। সৌদি আরবের ধর্মমন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে সংবেদনশীল হওয়ার অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে এ বছরের হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ মে পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি মাধ্যমে ৫ হাজার ২শ’ জন এবং বেসরকারি মাধ্যমে ৮১ হাজার ৯শ’ জন্য এবার হজে যাবেন। হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস্ হজের আগে ১শ’ ১৮টি এবং হজের পরে ১শ’ ৯টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। হাজিদের নিয়ে প্রথম ফিরতি ফ্লাইট আসবে ১০ জুন এবং শেষ ফিরতি ফ্লাইট আসবে ১০ জুলাই।